চুল পড়া রোধে পিআরপি থেরাপি
চুল ঝরে যাওয়া এবং টাক নিয়ে আধুনিক মানুষের দুশ্চিন্তার শেষ নেই, যা ব্যক্তি বিশেষে আত্মবিশ্বাসের ওপর প্রভাব ফেলে থাকে। আজ পর্যন্ত টাক মাথায় চুল গজানোর কোনো আশাব্যঞ্জক চিকিৎসা আবিষ্কার না হলেও (হেয়ার গ্রাফ্টিং বাদে), ব্যয়বহুল অপচিকিৎসার শিকারে পরিণত হয়ে থাকে অনেকেই।
চুলের বাইরের অংশ ত্বকের নিচে গোঁড়া থেকে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। স্বাভাবিকভাবে জীবনচক্র শেষে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে চুলের বাইরের অংশ ঝরে যায়। তবে গোঁড়া থেকে যায়, যা থেকে আবার নতুন চুল গজায়। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দৈনিক ৫০ থেকে ১০০টি চুল পড়ে যায়। অনেক সময় একসঙ্গে গজানো অনেক চুল একসঙ্গেই ঝরে যেতে পারে। এটি নিয়ে অনেকে উৎকণ্ঠায় ভুগে থাকেন। আবার কিছু রোগ এবং বংশগত কারণেও চুল পড়ে থাকে। পুরুষ মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকের মাথার দুই পাশের চুল হালকা হতে থাকে, যা পুরো মাথায় বিস্তৃত হয়ে টাকে পরিণত হয়। এটি স্বাভাবিক শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, যেক্ষেত্রে গোঁড়াসহ চুলের বিলুপ্তি ঘটে।
কোনো কারণে ত্বকের নিচে থাকা গোঁড়া নষ্ট হয়ে চুল পড়ে গেলে তা আর গজানোর কোনো সম্ভাবনা থাকে না। কোনো কারণে চুলের বাইরের অংশ ঝরে গিয়ে গোঁড়া অটুট থাকলে পরবর্তীতে স্বাভাবিক চুল গজিয়ে থাকে। যদি গোঁড়া অক্ষত থাকে তাহলে কিছু চিকিৎসা চুল গজাতে সাহায্য করে থাকে। তারই একটি পিআরপি চিকিৎসা।
পিআরপি অর্থ প্লাজমা রিচ প্রোটিন থেরাপি। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগীর দেহের রক্ত আহরণ করে তা থেকে কিছু উপাদান যন্ত্রের মাধ্যমে আলাদা করে প্লাজমা সমৃদ্ধ করা হয়। তারপর এই প্লাজমা সমৃদ্ধ রক্তের অংশ সিরিঞ্জের মাধ্যমে পড়ে যাওয়া চুলের গোঁড়ায় প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা। সাধারণত প্রথম তিন মাসে একবার করে এই চিকিৎসা দেওয়া হয়। তারপর প্রতি চার মাস পর পর এই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়। চুল গজানোর ওপর ভিত্তি করে কতদিন চিকিৎসা নিতে হবে তা চিকিৎসক নির্ধারণ করে থাকেন।
মনে রাখবেন চুলের গোঁড়া সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেলে এই চিকিৎসা কোনো উপকারে আসবে না। তবে চুল ঝরতে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। যিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সিদ্ধান্ত দিবেন। চিকিৎসা নেওয়ার আগে চুল গজানোর সম্ভাবনা এবং সম্ভাব্য খরচ সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।
এম আর করিম রেজা একজন ত্বক এবং সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ
Comments