করোনা টিকার আশা বাড়ালো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা
কভিড-১৯ প্রতিরোধে নতুন করে আশা জাগিয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিন। ট্রায়ালে তরুণদের পাশাপাশি প্রবীণদের শরীরে এ ভ্যাকসিন 'রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা' তৈরি করছে বলে জানায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
প্রতিষ্ঠানটির বরাত দিয়ে আজ সোমবার রয়টার্স জানায়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক উদ্ভাবিত এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় প্রবীণদের মধ্যে তুলনামূলক কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার এক মুখপাত্র বলেন, 'করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তরুণ ও প্রবীণ দুই ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা একই রকম পাওয়া গেছে। এ ছাড়া, প্রবীণরা এ রোগের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও, তাদের ক্ষেত্রে এ ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমই দেখা যাচ্ছে।'
ভ্যাকসিনটির প্রযুক্তিগত নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই ফলাফল এজেডডি১২২২ এর ব্যবহারকে "নিরাপদ" ও "রোগ প্রতিরোধে সক্ষম" বলেই প্রমাণ করে।'
ফাইজার ও বায়ো এন টেকের পাশাপাশি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিন অনুমোদন পাওয়ার জন্য প্রথম সারিতে আছে বলেই আশা করা হচ্ছে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বয়স্ক ব্যক্তিদের মারা যাওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকায়, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের এ খবরটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানান, কোনও ভ্যাকসিন এখনও অনুমোদন পায়নি। তবে, ২০২১ সালের প্রথম দিকে ভ্যাকসিনের আনার প্রস্তুতি তাদের আছে।
এ বছর কিছু লোককে ভ্যাকসিন দেওয়া হতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বিবিসিকে বলেছিলেন, 'এ সম্ভাবনাকে বাতিল করা যায় না। তবে, আমি তা আশা করছি না।'
হ্যানকক বলেন, 'সবকিছু ঠিক মতোই এগোচ্ছে। তবে, আমরা এখনও সেখানে পৌঁছাইনি।'
অক্সফোর্ড এ বছর জানুয়ারিতে এজেডডি১২২২ ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ শুরু করে।
এর আগে ফিনান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষা চালানোর ক্ষেত্রে জুলাই মাসে দেখা যায় যে ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রবীণ অংশগ্রহণকারীদের রক্ত পরীক্ষায় 'শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা' তৈরি হয়েছে।
ক্লিনিকাল জার্নালে শিগগির বিবরণ প্রকাশিত হবে বলেও ফিনান্সিয়াল টাইমস আশা প্রকাশ করে।
শেষ পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের প্রাথমিক ফলাফল শিগগির পাওয়া যাবে, এ প্রত্যাশায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইতিমধ্যে তাদের এই ভ্যাকসিন সরবরাহ ও উত্পাদন সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি চুক্তি করে ফেলেছে।
শুক্রবার সংস্থাটি জানায়, মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পর, সেখানে আবার ট্রায়াল শুরু হয়েছে।
সোমবার দ্য সান পত্রিকা জানায়, লন্ডনের একটি হাসপাতালের ট্রাস্টের কর্মীদের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ব্যাচের ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
Comments