নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চাঁদপুরে ইলিশ শিকার, সাজা ১৩৫ জেলের
ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ইলিশ শিকারে সরকারের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে থেমে নেই মাছ শিকার। গত ১৪ দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পদ্মা-মেঘনার ৭০ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ২০০ অভিযান চালিয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে শতাধিক জেলেকে। তবে এখনও ইলিশ রক্ষায় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার টহলে দেখা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর সদরের পুরানবাজার থেকে হরিণা, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের পুরো এলাকা, সদরের আনন্দ বাজার, মতলব উত্তরের মোহনপুর এখলাসপুর ও ষাটনল এলাকা এবং হাইমচরের চরভৈরবী এলাকায় বিকেল থেকে ভোর পর্যন্ত মা ইলিশ শিকারে তৎপর জেলেরা। স্থানীয় প্রশাসন প্রতিদিন অভিযান চালিয়েও তা বন্ধ করতে পারছে না।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী বলেন, গত ১৪ অক্টোবর থেকে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ১৪ দিনে ১৮২টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জাল ও মা ইলিশ জব্দ করা হয়। এ সময় ১৩৫ জেলেকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।
মা ইলিশ রক্ষায় গতকাল মঙ্গলবার চাঁদপুরে প্রথমবারের মতো অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে সহায়তা করে নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও মৎস্য বিভাগ। অভিযানের নেতৃত্ব দেন র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর তালুকদার নাজমুস সাকিব।
তিনি জানান, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত পৌণে ৮টা পর্যন্ত অভিযানে চাঁদপুরের মেঘনায় পুরানবাজার রণগোয়াল থেকে হরিণা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার নদীতে যৌথ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জালসহ বেশ কয়েকটি মাছ ধরার নৌকা জব্দ করা হয়। তবে কোন জেলেকে আটক করা যায়নি। এ সময় মেঘনা নদী সংলগ্ন অন্তত ৫টি খালের মুখে ইলিশ ধরার জন্য অপেক্ষায় থাকা প্রায় ২০০ জেলেকে ধাওয়া করা হয়। এক পর্যায়ে সন্ধায় পর সদর উপজেলার দোকানঘর এলাকায় জেলেদের ধাওয়া করলে এক পর্যায়ে সেখানকার কয়েকশ জেলে একত্রিত হয়ে অভিযানকারীদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে অভিযানকারীরা ওই স্থান ত্যাগ করেন। অভিযানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল হোসাইন, মৎস্য কর্মকর্তা শামছুল আলম পাটোয়ারীসহ কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের সদস্যসহ অনেকে অংশ নেন।
এদিকে, গত ২৫ অক্টোর চাঁদপুরে মেঘনা নদীর লক্ষ্মীরচর এলাকায় জেলেদের হামলায় ২৫ নৌ পুলিশ সদস্য আহতের ঘটনায় গত ২৭ অক্টোবর চাঁদপুর মডেল থানায় সাড়ে ৬০০ জেলে ও জনপ্রতিনিধিকে আসামি করে মামলা করেছেন নৌ-পুলিশের আহত উপপরিদর্শক ইলিয়াছ।
মামলায় রাজরাজেশ্বরের জেলে আমির হোসেন দেওয়ান ও ইউপি সদস্য পারভেজ গাজী রনিকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। এ দুজনসহ ৩৯ জনের নাম প্রকাশ করে অজ্ঞাত ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করা হয়। নৌ পুলিশ এ পর্যন্ত ৭ জনকে আটক করেছে।
চাঁদপুর নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন বলেন, ‘হামলার ঘটনায় ঢাকার পুলিশ সদস্য ছাড়াও আমাদের নৌ-থানার কয়েকজন সদস্যও আহত হয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িত ও উস্কানিদাতাদের আটকের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন-
Comments