নিসের গির্জায় হামলাকারী তিউনিসিয়া থেকে ফ্রান্সে গিয়েছিলেন
গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের নিস শহরের একটি গির্জায় দুই নারীসহ তিনজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন কয়েকদিন আগে তিউনিসিয়া থেকে ফ্রান্সে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
বিবিসি জানায়, পুলিশ এখনও সন্দেহভাজনের নাম নিশ্চিত না করলেও ফরাসি ও ইতালির গণমাধ্যমে ‘ব্রাহিম আসোউই’ নামে হামলাকারীর পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ২১ বছর বয়সী ওই যুবকের কাছ থেকে ইতালির রেডক্রসের কাগজ উদ্ধার করা হয়।
গত মাসে এক অভিবাসীবাহী নৌকায় ইতালির ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে আসার পর ওই কাগজটি তাকে দেওয়া হয়েছিল।
ফ্রান্সের চিফ অ্যান্টি টেরোরিজম প্রসিকিউটর জঁ-ফ্রাঁসোয়া রিকার্ড এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হামলার সময় ওই যুবক বারবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই তাকে গুলি করে পুলিশ।
গুলিবদ্ধ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তার মতে, সন্দেহভাজন হামলাকারী তিউনিশিয়ার নাগরিক। তার জন্ম ১৯৯৯ সালে। তিনি গত ২০ সেপ্টেম্বর নৌকায় ইতালির ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে আসেন বলে মনে করা হচ্ছে। তারপর সেখান থেকে তিনি ফ্রান্সে আসেন।
জঁ-ফ্রাঁসোয়া রিকার্ড আরও জানান, হামলাকারীর কাছ থেকে এক কপি কুরআন, দুটি টেলিফোন ও একটি ১২ ইঞ্চি ছুরি পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা হামলাকারীর একটি ব্যাগও পেয়েছি। এই ব্যাগের পাশে দুটি ছুরি ছিল তবে সেগুলো আক্রমণে ব্যবহৃত হয়নি।’
গতকাল নিস শহরের নটরডেম গির্জায় হামলার শিকার একজনকে প্রায় শিরশ্ছেদ করা হয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো এটিকে ‘ইসলামপন্থি সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
নিস সফর শেষে এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘যদি আমাদের আবারও আক্রমণ করা হয়, তবে সেটা হবে আমাদের স্বাধীনতার মূল্যবোধের ওপর হামলা, আমাদের মাটিতে মুক্তভাবে চলার ওপর হামলা। আমি আবারও স্পষ্টভাবে বলতে চাই, কোনো সন্ত্রাসবাদের সামনে আমরা মাথানত করবো না।’
গির্জা ও স্কুলের মতো জনসমাগমের স্থানগুলো সুরক্ষায় সৈন্য সংখ্যা তিন হাজার থেকে বাড়িয়ে সাত হাজার করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। এছাড়াও দেশটিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
চলতি মাসের শুরুতে ফ্রান্সের প্যারিসে স্কুলশিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে ক্লাসে মহানবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) কার্টুন দেখানোয় চেচেন বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তি তাকে হত্যা করে। এরপরই ফ্রান্সে উত্তেজনা ছড়ায়।
Comments