চীনের সামরিক উত্থান যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্টের জন্য চ্যালেঞ্জ

China military
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে হোয়াইট হাউজে যিনিই আসবেন তাকে নিতে হবে সামরিক শক্তি হিসেবে চীনের উত্থানের চ্যালেঞ্জ।

আজ শুক্রবার সিএনএন’র প্রতিবেদনে এমনটিই বলা হয়।

এতে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালে রাশিয়া ও চীনকে পেন্টাগন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। দুই বছর পর সেই চ্যালেঞ্জের মাত্রা আরও বেড়েছে।

নিজেকে প্রকৃত বিশ্বশক্তি হিসেবে তুলে ধরতে চীন দ্রুত তার সামরিক বাহিনীকে আধুনিক করছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ছাপিয়ে পুরো বিশ্বে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টাও করছে মহাপ্রাচীরের দেশটি।

গত জুনে চীনকে দেখা গেছে ভারতের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সীমান্ত-সংঘাতে লিপ্ত হতে। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির যুদ্ধবিমানগুলো বারবার তাইওয়ান ও জাপানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ছে। এছাড়াও, চীনের জাহাজগুলো বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে বিভিন্ন ঘটনার জন্ম দিচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরেই যুক্তরাষ্ট্রের নিমিটজ ও রোনাল্ড রিগ্যান ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপকে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অভিযান চালাতে হয়েছে।

একই সময় বেইজিং প্রশান্ত মহাসাগরে বিস্তৃত পরিধিতে নৌ মহড়ার আয়োজন করে। কয়েকদিনের মধ্যে দেশটি বিভিন্ন এলাকায় পৃথক পাঁচটি মহড়া করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগরে চীন মার্কিন সামরিক বাহিনীকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরের এই অঞ্চলকে যুক্তরাষ্ট্র সবার জন্যে উন্মুক্ত রাখতে চায়। আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি মেনে এই অঞ্চলে সবার প্রবেশাধিকার ও সম্পদ আহরণের ওপর জোর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

এতে আরও বলা হয়, আগামী ৩ নভেম্বর আমেরিকান ভোটাররা প্রেসিডেন্ট হিসেবে যাকেই নির্বাচিত করুন না কেনো তাকে চীনের সামরিক প্রভাব মোকাবিলা করতে জটিল পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত অঞ্চলীয় কমান্ডের জয়েন্ট ইন্টেলিজেন্স সেন্টারের সাবেক পরিচালক (অপারেশন) কার্ল শুসটার বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণায় দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট ইঙ্গিত নেই।’

‘বাইডেন বলছেন নির্বাচিত হলে তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তুলনায় চীনের ওপর কঠোর চাপ সৃষ্টি করবেন। কিন্তু, তেমন কোনো সংঘাতে যাবেন না। এর দ্বারা তিনি আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন তা পরিষ্কার নয়,’ যোগ করেন এই কর্মকর্তা।

দক্ষিণ চীন সাগর তীরবর্তী ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে ‘গড়িমসি’র রাজনীতি তা অদূর ভবিষ্যতে দেশ দুটিকে চীনের বলয়ে ফেলে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন শুসটার।

প্রতিবেদন মতে, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলোর খরচ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে কিছুটা বহনের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধু দেশ দুটির তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছে। পরে তারা খরচ বহনের বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছালেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এটি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের জন্যে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জি-ইন চাচ্ছেন সামরিক ব্যয় কমাতে এবং একই সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে। একইভাবে জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইয়েশিহিদে সুগাকে বেছে নিতে হবে দেশটির সামরিক বাহিনীর উন্নয়ন অথবা মার্কিন সেনাদের খরচ বহনের যে কেনো একটি পথ।

এই বিষয়গুলো যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে নতুন জটিলতায় ফেলতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Comments

The Daily Star  | English

Ishraque announces suspension of protest for 48 hours

He made the announcement while talking to the party men in front of Kakrail mosque this afternoon

5m ago