পুলিশ সদস্যরা জনতার পুলিশে পরিণত হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন যে, মুজিববর্ষে পুলিশ সদস্যরা জনতার পুলিশে পরিণত হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন যে, মুজিববর্ষে পুলিশ সদস্যরা জনতার পুলিশে পরিণত হবে।

আগামীকাল ‘কমিউনিটি পুলিশিং দিবস উপলক্ষে আজ দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, মুজিববর্ষে নতুন স্পৃহা ও আদর্শে উদ্দীপ্ত হয়ে পুলিশ সদস্যরা জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনতার পুলিশে পরিণত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশ দেশ ও জাতির সেবায় প্রতিনিয়ত তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব একনিষ্ঠভাবে ও সাহসিকতার সঙ্গে পালন করছে।’

জনগণ ও পুলিশের পারস্পরিক আস্থা, সমঝোতা ও শ্রদ্ধা কমিউনিটি পুলিশিং এর মূলকথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আধুনিক কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থাপনায় জনগণের সাথে প্রাণবন্ত সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অপরাধ দমন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সামাজিক সমস্যাদির উৎস উদঘাটনপূর্বক তা সমাধান ও অপরাধ ভীতি হ্রাস করে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ সৃষ্টির লক্ষে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশব্যাপী কমিউনিটি পুলিশিং এর কার্যক্রম শুরু হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে ৬০ হাজার ৯১৮টি কমিটির মাধ্যমে ১১ লাখ ১৭ হাজার ৮০ জন কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য পুলিশের সঙ্গে একযোগে অংশীদারেত্বের ভিত্তিতে কাজ করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যে, বাংলাদেশে রেলওয়ে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং হাইওয়ে পুলিশেও কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে অপরাধ দমনে আরও একধাপ এগিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। আগামীতেও নারী নির্যাতন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কমিউনিটি পুলিশিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বায়নের এ যুগে সহজলভ্য প্রযুক্তি অপরাধকে আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক পরিসরে দ্রুত বিস্তৃত করছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক এবং স্থানীয় প্রযুক্তি নির্ভর অপরাধ প্রতিরোধ ও অপরাধ উদঘাটনে পুলিশকে উন্নত প্রযুক্তিজ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি জনগণ ও রাষ্ট্রের অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করে সকলের সহায়তায় একযোগে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে সাইবার ক্রাইম, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন, মানিলন্ডারিং ইত্যাদি সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম একটি আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে তার সরকার এন্টি টেরোরিজম ইউনিট, সাইবার ইউনিট গঠনসহ সবধরনের সময়োপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ দেশ গড়ার লক্ষ্যে পুলিশের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করতে জনবল ও বাজেট বৃদ্ধিসহ সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আওয়ামী লীগ সরকারের নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন অব্যাহত আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি সম্প্রীতিময়, শোষণমুক্ত, জঙ্গি, মাদক ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত মানবিক দেশ গড়ে তোলার লক্ষে আগামী দিনগুলোতে পুলিশের সকল সদস্য আরও আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো এবারও ৩১ অক্টোবর ‘কমিউনিটি পুলিশিং দিবস-২০২০’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। তিনি এ উপলক্ষে পুলিশের সকল সদস্যকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।

তিনি ‘কমিউনিটি পুলিশিং দিবস-২০২০’ এর সকল আয়োজনের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago