চার মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার
অক্টোবর মাসে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। এই নিয়ে পরপর তিন মাস দুই বিলিয়ন ডলারের ওপরে রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স ৪৩ দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক উদ্ধর্তন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে আজ রবিবার এ তথ্য দিয়ে বলেন, গত বছরের একই মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৮ দশমিক ৬২ শতাংশ।
২০১৯ এর অক্টোবরে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। আর গত সেপ্টেম্বরে এর পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
রেমিট্যান্স বাড়ার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার মজুতও বাড়ছে। আজ দিনশেষে এই মজুতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১ বিলিয়ন ডলারে, যা একবছর আগে এই দিনে ছিল ৩২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ প্রবাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ২০২০ সালে অষ্টম হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। গত শুক্রবার ওয়াশিংটন সদরদপ্তর থেকে কোভিড-১৯ ক্রাইসিস থ্রু মাইগ্রেশন লেন্স শীর্ষক রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। রিপোর্টের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী এ বছর করোনার মধ্যেও দক্ষিণ এশিয়ার দুটি দেশের রেমিট্যান্স বাড়বে, যার মধ্যে বাংলাদেশের বাড়বে ৮ শতাংশ।
মূলত ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক থেকে প্রাতিষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়ায় কোভিডের মধ্যেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে ২০২০ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসবে ২০ বিলিয়ন ডলার।
রেমিট্যান্স প্রবাহ নিয়ে সন্তুষ্টি জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, যারা কষ্ট করে অর্থ পাঠিয়ে অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে চালকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।
মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাস যখন অসাধারণ এবং অবিশ্বাস্য গতিতে রেমিট্যান্স অর্জিত হচ্ছিল তখন অনেকেই বলতে শুরু করলেন এগুলো ঠিক নয়, থাকবে না, টেকসই নয়। কর্মীরা তাদের কাজকর্ম বা ব্যবসা গুটিয়ে দেশে ফিরে আসছেসহ বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। সেই সমস্ত লোকদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাও বলতে শুরু করে এ প্রবাহ ঠিক নয়, টেকসই হবে না। খুবই আশ্চযের বিষয়, যে দেশের মানুষ তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশের মানুষের জন্য, তাদের পরিবারের জন্য পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সেই সমস্ত মানুষের মূল্যায়ন না করে তাদের উৎসাহব্যঞ্জক কথা বলে অনুপ্রাণিত করার পরিবর্তে আমরা নিরুৎসাহিত করতে শুরু করলাম কীভাবে! শেষ পযন্ত আমি বিশ্বব্যাংকে আমাদের এ সমস্ত রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের কষ্টের স্বীকৃতি দিতে তাদের বার্ষিক সভায় অনুরোধ জানাই। বিশ্বব্যাংক এখন নিজেই বলছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে এবং এ বছর রেমিট্যান্স প্রবাহে বাংলাদেশ অষ্টম অবস্থানে থাকবে এবং চলতি বছর বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।’
Comments