আয় কমে যাওয়া ৬১ শতাংশ দরিদ্র মানুষ কোনো সহযোগিতা পাননি: জরিপ
করোনা মহামারির কারণে আয় কমে যাওয়া দেশের ৬১ শতাংশ দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষ কোনো সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে কোনো ধরনের সহায়তা পাননি বলে এক জরিপে উঠে এসেছে।
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট ফর গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) যৌথ সমীক্ষায় বলা হয়, গত এপ্রিল ও জুনে মাত্র ৩৯ শতাংশ বাড়ির মানুষ সামান্য কিছু সহায়তা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
গত শনিবার সংস্থা দুটি আয়োজিত জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশের ওয়েবিনারে বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন বলেন, ‘সবাই সহযোগিতা পাননি। এছাড়াও, যারা যা পেয়েছেন তা খুবই নগণ্য।’
গত ২০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত শহরাঞ্চলের বস্তি, গ্রামীণ এলাকা ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ৭ হাজার ৬৩৮টি বাড়িতে এই জরিপ চালানো হয় উল্লেখ করে জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, জুনে সীমিত আকারে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হলে নতুন করে দারিদ্রে পড়ার সংখ্যা ১ দশমিক ১ শতাংশ কমে গিয়ে ২১ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়ায়।
আয় কমে যাওয়া ও বাইরে থেকে সহায়তা না পাওয়ার পরিস্থিতিতে দরিদ্র মানুষেরা তাদের সঞ্চয় থেকে খরচ করতে শুরু করেন। পাশাপাশি, তারা প্রতিদিনকার খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেন।
মহামারি চলাকালে শহরাঞ্চলে দরিদ্র মানুষদের বাসা ভাড়া ও ইউটিলিটির খরচও বহন করতে হয়েছে।
আয় কমে যাওয়া ও বাসা ভাড়ার বোঝা থেকে বাঁচতে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের অনেকেই শহর থেকে গ্রামে চলে যান।
মতিন বলেন, ‘অনেককে কম পুঁজির ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়েছে।’
পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন প্রণোদনা দেওয়া খুবই প্রয়োজন। এই প্রণোদনা বিকল্প প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিতরণের ওপরও জোর দেন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় দেশের অর্থনীতি একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
তার মতে, অর্থনীতির এই ঘুরে দাঁড়ানো নির্ভর করবে দেশের ছোট-ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে কতোটুকু সহায়তা দেওয়া হচ্ছে এর ওপর।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিডিপি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘সবার জন্যে সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করার সুযোগ এসেছে।
ওয়েবিনারে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক রবিন বার্গেস তরুণদের মেধা বিকাশে প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেন।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, এমন মহামারি বিশ্ব এই প্রথম দেখল। সরকার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
Comments