দেশে কিছু আঁতেল শ্রেণির লোক আছে যারা বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টির জন্য অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাক স্বাধীনতার নামে সোশ্যাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমে অপপ্রচারের কঠোর সমালোচনা করে এর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাক স্বাধীনতার নামে সোশ্যাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমে অপপ্রচারের কঠোর সমালোচনা করে এর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে কিছু আঁতেল শ্রেণির লোক আছে যারা বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টির জন্য অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কিছু হলেই বলে ওঠেন বাক স্বাধীনতা নাকি খর্ব হচ্ছে। সংঘাত সৃষ্টি করাও কি বাক স্বাধীনতা? সেটাই আমার কথা।’

তিনি বলেন, ‘তাই, কেউ যদি অপপ্রচার করে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতিবাদটা আমাদের করতে হবে। আমরা চুপ করে বসে থাকলেও হবে না ডিফেন্সিভে গেলেও হবে না।’

‘যেটা সত্য সেটা বললে হয়তো সাময়িকভাবে কষ্ট হবে সেটা বিশ্বাস করাতে, কিন্তু এটা সফল হবেই, এটা হলো বাস্তবতা’ যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের প্রারম্ভিক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ সচিবালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষ থেকে ভার্চুয়াল এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখনই বাংলাদেশ কোনো ভাল জায়গায় যাবে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যেখানে বাংলাদেশ সম্পর্কে আগাম আশংকা ব্যক্ত করেছে, সেখানে বাংলাদেশ তার থেকে এগিয়ে যাচ্ছে- এটা তাদের (তথাকথিত বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর) হয়তো পছন্দ হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভিক্ষুক হয়ে থাকবো, তাদের কাছে হাত পাতবো, চেয়ে খাব-এটাইতো তারা চাইবে। কিন্তু আমরা তা থাকবো না। দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াবো।’

শেখ হাসিনা আরও যোগ করেন, দেশকে সামনে নিয়ে যেতে গেলেই এই শ্রেণীটার খুব কষ্ট হয়। আর যারা আমাদের স্বাধীনতাই চায়নি তাদেরতো আরও কষ্ট হয়। এটাতো আমরা বুঝি আর এটা হলো বাস্তব কথা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরণের একটা শ্রেণিতো রয়েছেই যারা সমাজকে বা সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, মানুষের জীবন নিয়েও তাদের চিন্তা নেই। কারণ, তাদের একটা অন্য উদ্দেশ্য থাকে। তাদের কন্ট্রোল করতে গেলেই বা তারা তাদের ষড়যন্ত্রটা সফল করতে না পারলেই সমালোচনা মুখর হয়।

সরকার প্রধান বলেন, ‘যারা একটি সুন্দর পরিবেশকে নষ্ট করার জন্য বক্তব্য দেবে তাদেরকে ধরলে (আটক করলে) এটা বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, এটাতো হয় না। সবারই দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকবে।’

তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর মানুষও বলবে অপপ্রচারটা কখনো বাক স্বাধীনতা নয়। তবে, এখন সোশ্যাল মিডিয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ডিজিটাল যুগ তাই, যার যা খুশি বলে যাচ্ছে, যা খুশি অপপ্রচার করে যাচ্ছে আবার তাদের কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই হৈ চৈ এবং নানা কথা ছড়াবে। কিন্তু, কি কারণে হচ্ছে সেটা তারা দেখছে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদেরর একটা দুর্বলতা আছে, এটা নিয়ে (সংঘটিত আসল ঘটনা) কাউকে প্রশ্ন করলে কারণটা আর বলে না, তারা ডিফেন্সিভে চলে যায়। এই মানসিকতাটাও ভালো নয়। যেটা সত্য সেটা বলতেই হবে, বলতে হবে- ওই লোকটা এভাবে সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, কোটার (বিসিএস) বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ব্যাগে যদি বড় বড় পাথর বা রামদা, কিরিচ-এগুলি থাকে! সেখানে তো বই-খাতা পাওয়া যায়নি। সেটা নিয়ে কোনো কথা নেই। তখনতো অনেক নিউজও বের হয়েছে এবং অনেক ছবিও বের হয়েছে (মিডিয়া-পত্রিকায়)।

সে সময় আওয়ামী লীগ অফিসে আক্রমণ এবং পাথর ছুড়ে মেরে অফিস ভাংচুর এবং ৪০-৫০ জন নেতা-কর্মীকে আহত করা, যাদের দেশে-বিদেশে চিকিৎসা করাতে হয়েছে এবং কারো কারো চিকিৎসা এখনো চলছে বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, এটা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা কারো ছিল না। রাস্তায় নিজেরা আগুন জ্বালিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগে যখন পুলিশ সেই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে গেল সেটাই সবথেকে বড় হয়ে গেল। অথচ পিলখানায় বিজিবি গেটের সামনে গণ্ডগোল করা হচ্ছিল, অনেকে বিজিবি গেট দিয়েও ঢুকে গিয়েছিল, কাজেই সেখানে বিজিবি যদি গুলি চালাতো তাহলে কি অবস্থা হতো।

শেখ হাসিনা সে সময়কার অপর একটি উদাহরণ টেনে বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য একজন টিভি অভিনেত্রীর মিথ্যা স্টেটমেন্ট (পরে আটক ও কারাভোগকারী) আওয়ামী লীগ অফিসে নিয়ে তাকে অসম্মান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, তার প্রচারিত ভিডিওতে রাস্তার সাইনবোর্ড দেখে ধরা পড়ছে যে, সে নিজেই রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে ভিডিও করে সমানে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago