কোনো ষড়যন্ত্রই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবসহ বেশ কয়েকটি ষড়যন্ত্রের উল্লেখ করে জনসমর্থনের প্রতি আওয়ামী লীগের আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবসহ বেশ কয়েকটি ষড়যন্ত্রের উল্লেখ করে জনসমর্থনের প্রতি আওয়ামী লীগের আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘কেউ চাইলেই আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে পারবে না। যখন আমরা ২০০৮ এর পর থেকে সরকারে এসেছি অনেক ভাবে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের চেষ্টা করা হয়েছে, বিডিআর এর ঘটনা ঘটানো হলো, হেফাজতের ঘটনা ঘটানো, নানা ধরনের ঘটনা, বহু রকমের কারসাজির চেষ্টা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে খুন করে ফেলা যায়, হত্যা করে ফেলা যায়, কিন্তু জনসমর্থন না থাকলে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না, মানুষের কল্যাণও করতে পারে না, এ হচ্ছে বাস্তবতা।’ প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ টিকে আছে কারণ এর তৃণমূলের নেতা-কর্মী অর্থাৎ এর শিকড়ের শক্তি অনেক গভীরে। কাজেই, সেটা যদি কারো চক্ষুশূল হয় বা সে কারণে কারো মনে ব্যথা হয় তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা জনগণের সমর্থনটা পাই কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জনগণের স্বার্থে, জনকল্যাণে এবং জনগণের মঙ্গলে কাজ করে। আর এটা জনগণ খুব ভালভাবে উপলদ্ধি করে এবং এর শুভফলটা জনগণই পায়।’

তিনি বলেন, ‘হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে, কত পরিবার লাশ খুঁজে পায়নি। তারা কেবল হত্যাই করেনি একটি জাতির একটি প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ টিকে আছে শুধু জনগণের জন্য কাজ করার মধ্যে দিয়ে। কারও দয়া ভিক্ষে করে না, কারও করুণা ভিক্ষে করে না।’

জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতাসহ বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এত হত্যাকাণ্ড চালিয়েও তৃণমূলে যার শিকড় একেবারে গ্রথিত সেই সংগঠনের ক্ষতি তারা করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ টিকে আছে কারণ এর তৃণমূলের নেতা-কর্মী, অর্থাৎ এর শিকড়ের শক্তি অনেক বেশি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা শুধু এই দিবসটা পালন নয়, সেই সঙ্গে আমাদের এই কথা মনে রাখতে হবে, যে সন্ত্রাসী চক্র, খুনী চক্র, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র তারা কিন্তু বসে নাই। তাদের চক্রান্ত চলতেই থাকবে যত ভালো কাজই আমরা করি না কেন তাদের মুখ থেকে ভালো কথা বের হয় না।’

তিনি গণভবনের থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এসময় বক্তৃতা করেন। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা অপপ্রচার চালাবার বা সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করে, মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তাদেরকে আমি এটাই বলব তারা কি ৩ নভেম্বরের ঘটনা কোনদিন ভেবে দেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেধাবীদের এক হাতে জিয়াউর রহমান পুরস্কার আর অন্য হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে। অস্ত্র, জঙ্গিবাদ, মাদক দিয়ে প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তারা ধ্বংস করেছে। তারা তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ এবং কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘এদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, এই নির্বাচন কারা শুরু করেছিল।’ ভোট নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘জিয়ার নির্বাচন দেখুক আর এরশাদের নির্বাচন দেখুক।’

খালেদা জিয়া সরকারের সময়ে ভোটার লিস্টে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার অন্তর্ভুক্তির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৬ সালের নির্বাচনের জন্য ১ কোটি ২৩ লাভ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার লিস্ট বানানো হলো। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি বাংলাদেশকে পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করল। বাংলাভাই, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হলো, এভাবেই একটা দেশকে তারা আবার ধ্বংসের দিকে নিল। এরআগে ’৯১ সালে এই খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের হাত ধরে ক্ষমতায় এসেছিল এরপর ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন, রাজনৈতিক দলবিহীন নির্বাচন করল।

তিনি বলেন, সে সময় আওয়ামী লীগের রাজপথের আন্দোলনে সে বছরের ৩০ মার্চ জনগণের অভ্যুত্থানে খালেদা জিয়া মাত্র দেড় মাসের মধ্যে পদত্যাগে বাধ্য হয় এবং ক্ষমতা থেকে চলে যায় ভোট চুরির অপরাধে। কাজেই, বিএনপি’র যে নেতারা কথা বলে তাদেরকে আপনারা এই কথাটা স্মরণ করিয়ে দেবেন। কারণ, মানুষ সে কথা ভুলে যায়নি।

১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অভ্যন্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর এবং পাকিস্তানে তার আটককালীন মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদানকারি জাতীয় চার নেতা মুজিব নগরের প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থমন্ত্রী এম মুনসুর আলী এবং খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

42m ago