যুক্তরাষ্ট্রের হতভাগ্য ১০ প্রেসিডেন্ট

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ২৩১ বছরের ইতিহাসে ৪৫ জন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ১৭৮৯ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নারী-পুরুষ যে কেউ প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হতে পারবেন— যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে এমনটি বলা থাকলেও প্রায় ২৫০ বছরের ইতিহাসে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ এখনো কোনো নারী প্রেসিডেন্ট পায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে এক জন চার বছর মেয়াদে দুই বারের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন না।
white house
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ২৩১ বছরের ইতিহাসে ৪৫ জন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ১৭৮৯ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নারী-পুরুষ যে কেউ প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হতে পারবেন— যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে এমনটি বলা থাকলেও প্রায় ২৫০ বছরের ইতিহাসে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ এখনো কোনো নারী প্রেসিডেন্ট পায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে এক জন চার বছর মেয়াদে দুই বারের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন না।

মজার ব্যাপার হলো ৪৫ জন প্রেসিডেন্টের মধ্যে মাত্র ১০ জন দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হতে চেয়েও পারেননি। এদের মধ্যে জন এফএম কেনেডি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনের আগেই আততায়ির হাতে নিহত হন।

জর্জ এইচডব্লিউ বুশ ১৯৯২ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কাছে হেরে যান। তারপরে চলে গেছে দীর্ঘ ২৮ বছর। এর মধ্যে যারাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তারা সবাই দুই মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে কারা সেই হতভাগ্য প্রেসিডেন্ট যারা দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করেও ক্ষমতায় আসতে পারেননি। আর কেনইবা নির্বাচিত হতে পারেননি। তবে চলুন দেখে আসি এক নজরে কারা তারা।

জন এডামস

তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট। জর্জ ওয়াশিংটন সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। জর্জ ওয়াশিংটনের পরে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনে তিনি তৃতীয় হন। বলা হয়ে থাকে ফ্রান্সের সঙ্গে এক ছায়াযুদ্ধে তিনি লিপ্ত হয়েছিলেন, যার খেসারত তাকে নির্বাচনে দিতে হয়েছিল।

জন কুইন্সি এডামস

তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট জন এডামসের জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনিও তার বাবার মতো দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে হেরে যান। তিনি মূলত দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে হেরে গিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট।

গ্রোভার ক্লেভলেন্ড

তিনি আমেরিকার ২২তম ও ২৪তম প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৮৮৪ ও ১৮৯২ সালে নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে বেনজামিন হ্যারিসনের কাছে হেরে যান। ১৮৯২ সালে তিনি বেনজামিন হ্যারিসনকে হারিয়ে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

বেনজামিন হ্যারিসন

তিনি ১৮৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে তিনি গ্রোভার ক্লেভলেন্ডের কাছে হেরে যান। তিনি পঞ্চম প্রেসিডেন্ট, যিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে হেরে যান।

উইলিয়াম হওয়ার্ড টাফট

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একমাত্র ব্যাক্তি যিনি প্রেসিডেন্ট ও প্রধান বিচারপতি এই দুই পদেই ছিলেন। তাকে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ মানের। তিনি ১৯০৯ থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি আফ্রো-আমেরিকানদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন এবং নির্বাচনে হেরে তার খেসারত দেন। তিনি ওডওয়ার্ড উইলসনের কাছে হেরে বিদায় নেন হোয়াইট হাউস থেকে।

হার্বার্ট হোবার

তিনি ১৯২৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯২৯ সালের গ্রেট ডিপ্রেশন বা মহামন্দার কারণে দেশের অর্থনীতি এক চরম বিপর্যয়ে পড়ে। হোবারকে দেশের শাসন ব্যবস্থার চেয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বেশি মনযোগী হতে হয়। যার কারণে তিনি তার নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ করতে ব্যর্থ হন। তিনি প্রথম মেয়াদ শেষে যখন দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তখনো দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তাই ১৯৩২ সালের নির্বাচনে তিনি ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের কাছে হেরে যান।

জেরাল্ড ফোর্ড

ঐতিহাসিক ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারী মাথায় নিয়ে রিচার্ড নিক্সন যখন ক্ষমতা ছাড়েন তখন ফোর্ড দায়িত্ব নেন। তিনি ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনে তিনি জিমি কার্টারের কাছে হেরে যান ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে। মজার ব্যাপার হলো, তিনি কখনো নির্বাচনে না জিতেও প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

জিমি কার্টার

তিনি ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে রোনাল্ড রিগ্যান এর কাছে হেরে যান।

জর্জ এইচডব্লিউ বুশ

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট যিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হতে পারেননি। তিনি ১৯৯২ সালে বিল ক্লিনটনের কাছে হেরে যান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৪১তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭৬ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র পরিচালক ছিলেন। তিনি রিগ্যান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত। তার সময় যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

তথ্য সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago