দেশে ফিরে কোয়ারেন্টিন না মেনে জনসমাগমে সাকিব

স্বাভাবিকভাবেই দেশের ফেরার পর কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা ছিল অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। কিন্তু ফেরার ১২ ঘণ্টা পার না হতেই গুলশানে একটি সুপারশপ উদ্বোধন করতে গিয়েছেন এ অলরাউন্ডার।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

এক বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত ২৯ অক্টোবর। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন শুক্রবার ভোর রাতে। স্বাভাবিকভাবেই দেশের ফেরার পর কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা ছিল অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। কিন্তু ফেরার ১২ ঘণ্টা পার না হতেই গুলশানে একটি সুপারশপ উদ্বোধন করতে গিয়েছেন এ অলরাউন্ডার।

শুক্রবার দুপুরে গুলশানের সে সুপারশপে দেখা গিয়েছে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। অথচ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ভয়াবহতা এখনও কমেনি দেশে। উল্টো মাঝে কিছুটা কম থাকলেও বর্তমানে আরও বেড়েছে। কিন্তু আয়োজক আর উৎসুক জনতার ভীর সামলাতে হিমশিম খেতে হয় নিরাপত্তাকর্মীদের। এমনকি রীতিমতো ভিড় ঠেলে কোনো রকমে ফিতা কাটেন সাকিব। এরপর আয়োজকদের অনুরোধে মুখের মাস্কও খুলতে হয় তাকে।

অথচ বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের নিয়ম অনুযায়ী দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টিন করার নির্দেশনা দেওয়া আছে। এর সাধারণ নির্দেশিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য  অধিদপ্তরের ডাইরেক্টরেট জেনারেল (ডিজিএইচএস) ডাঃ হাবিবুর রহমান বলেন, কেউ যদি দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টিনের সময়ে বাসা থেকে বের হন তাহলে তিনি কোয়ারেন্টিনের আইন ভঙ্গ করবেন।

ডেইলি স্টারের সঙ্গে একান্ত আলাপে তিনি আরও বলেন, 'যদি কোনো যাত্রী সাম্প্রতিক সময়ে নেগেটিভ পরীক্ষার প্রমাণ দেখায়, তাহলে আমরা তাদের ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারান্টিনে যেতে বলি। তবে যাত্রীরা যদি কোনো সার্টিফিকেট ছাড়াই পৌঁছায় তবে আমরা তাদের ১৪ দিনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিনে পাঠাই।'

এদিকে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ থেকে রক্ষা পেতে গত রোববারই ইউরোপ কিংবা অন্য কোথাও থেকে ফেরা প্রবাসীদের যথাযথ স্ক্রিনিং ও কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, 'বিদেশ থেকে ফিরে আসা প্রবাসীদের যথাযথ স্ক্রিনিং এবং কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার জন্য আবারও সময় এসেছে। আগের মতো ব্যবস্থাগুলি আবারও দেশের বিমানবন্দর ও অন্যান্য বন্দরগুলিতে স্থাপন করতে হবে যেন কেউ প্রবেশ করোনাভাইরাস নিয়ে দেশে ঢুকেছে কি-না নিশ্চিত করতে।’

আইসিডিডিআরবির অ্যাপিডেমিক কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিপারেনডেন্সির সাবেক ইউনিট প্রধান আনোয়ারুল ইসলাম মিতুর মতে, কোনও যাত্রীর আগমনকালে করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকলেও সেই ব্যক্তির দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং সে যাত্রী হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা জরুরি, 'অবশ্যই, এটি এমন ব্যক্তির পক্ষেও ঝুঁকিপূর্ণ, যার করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট রয়েছে। আপনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে বিমানে আরোহণ করতে পারেন, তবে আপনি বিমানের ভিতরে বা টার্মিনালেও সংক্রামিত হতে পারেন।'

'যদিও আমাদের বিমানবন্দর এখন যাত্রীদের স্ক্রিনিং করার জন্য সুসজ্জিত। তবুও বিদেশ থেকে আসার পরে কমপক্ষে দশ দিন হোম কোয়ারান্টিনে থাকা সে ব্যক্তির কর্তব্য। অন্যান্য দেশে, কর্তৃপক্ষ বিদেশ থেকে আসা সমস্ত যাত্রীদের উপর একটি ট্র্যাকিং সফটওয়্যার ইনস্টল করে এবং তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে। আমি মনে করি আমাদের বাংলাদেশে এরকম কিছু হওয়া উচিত। - যোগ করে আরও বলেন আনোয়ারুল।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী অবশ্য বলেছেন, সাকিব যখন বিসিবি মেডিকেল দলের সঙ্গে পরামর্শ করবেন তখন বোর্ডের স্বাস্থ্য নির্দেশিকাতে থাকবেন, 'সে করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে ফিরে এসেছে। এখনও বিসিবির মেডিকেল টিমের সাথে পরামর্শ করতে পারেননি। একবার তা করলে সে বিসিবির স্বাস্থ্য নির্দেশিকার আওতায় থাকবেন।'

এ প্রসঙ্গে সাকিবের বক্তব্য জানার জন্য ডেইলি স্টার তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু এই ক্রিকেটার ফোন এবং বার্তার কোনো উত্তর দেননি।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago