‘হ্যাজার্ড’ নামের কারণে কড়া ট্যাকলের শিকার হন তিনি
নামটাকে ফুটবল দুনিয়ায় পরিচিত ও জনপ্রিয় করে ফুলেছেন এডেন হ্যাজার্ড। সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলারদের তালিকায় অবধারিতভাবে থাকেন তিনি। লিল, চেলসি ঘুরে বেলজিয়ান উইঙ্গার এখন ঘর বানিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদকে।
হ্যাজার্ড ভাইদের মধ্যে সবচেয়ে বড় এডেনকে অনুসরণ করে দ্বিতীয়জন থরগ্যান আর তৃতীয়জন কিলিয়ান পেশাদার ফুটবলার হয়েছেন। থরগ্যান খেলেন জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে, কিলিয়ান স্বদেশি ক্লাব সার্কেল ব্রুগেতে। সবার ছোট ইথানও আছেন একই পথে। তিনি বর্তমানে খেলছেন স্থানীয় ক্লাব টুবিজের একাডেমিতে। এই দলে শৈশব-কৈশোর কেটেছে, ভবিষ্যতের স্বপ্ন বোনা হয়েছে তার আগের তিন জনেরও।
এডেন হ্যাজার্ড বেলজিয়াম ও স্প্যানিশ পরাশক্তি রিয়ালের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তার কারণে ফুটবল অনুরাগীরা হ্যাজার্ড নামটিকে ঠাঁই দিয়েছেন অন্তরে। থরগ্যানও জাতীয় দলে খেলছেন লম্বা সময় ধরে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান পেয়ে ইতিহাস গড়া বেলজিয়াম দলের গর্বিত সদস্য ছিলেন দুজনেই।
২৫ পেরিয়ে যাওয়া কিলিয়ান অবশ্য বড় দুই ভাইয়ের মতো সফলতার দিশা পাননি এখনও। দুই মৌসুম ইংলিশ জায়ান্ট চেলসিতে ছিলেন বটে। তবে কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তার। ২০১৮-১৯ মৌসুমে ব্রুগেতে ধারে যোগ দেওয়ার পর সেখানেই চুক্তি পাকা করেছেন তিনি। গত মৌসুমে বেলজিয়ামের শীর্ষ লিগে ১৬ দলের মধ্যে তারা হয়েছিল চতুর্দশ।
সে যাই হোক। পদবিতে হ্যাজার্ড থাকায় কিলিয়ানকে ছেড়ে কথা বলে না প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা। বিখ্যাত নামের কারণে প্রায়শই কড়া ট্যাকলের শিকার হতে হয়ে তাকে। নিজ দেশের গণমাধ্যম আরটিবিএফকে এমনটাই বলেছেন তিনি, ‘মাঠে এমনটা ঘটেছে যখন কেবল আমার নামের কারণে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা আমাকে বাজেভাবে চ্যালেঞ্জ করেছে।’
‘এডেনকে যেভাবে লাথি দেয়, সেভাবে তারাও আমাকে মেরেছে। আমরা ছোট ছোট পাসে দ্রুত লয়ে খেলি (যা এই জাতীয় কড়া ট্যাকল) করতে উদ্বুদ্ধ করে। এটাকে আমাদের খেলার স্টাইলের ঝুঁকিও বলতে পারেন। আমার হাঁটু ও গোড়ালিতে এমন সব ক্ষতচিহ্ন রয়েছে যেগুলো সারাজীবন থাকবে। আর ম্যাচ শেষ হওয়ার পর ব্যথানাশক ঔষধ খেয়ে আমাকে রাতে বিছানায় যেতে হয়।’
তবে কি হ্যাজার্ড নামের সঙ্গে শুধু বিড়ম্বনারই যোগাযোগ? কিলিয়ান জানিয়েছেন, সুবিধাও রয়েছে, ‘নামের শেষে হ্যাজার্ড থাকায় সত্যিকার অর্থেই উপকার হয়েছে। যখন আমি উইপেস্তে (হাঙ্গেরির ক্লাব) ছিলাম এবং কোচের সঙ্গে আমার ঝামেলা বেঁধে গিয়েছিল, এডেন আমাকে সেখান থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল এবং চেলসিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার বন্দোবস্ত করেছিল।’
গত বছর বিশাল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে চেলসি ছেড়ে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর এডেন হ্যাজার্ড আদৌ নিজের সেরা ছন্দ দেখাতে পারেননি। এর পেছনে বড় দায় রয়েছে চোটের। বারবার মাঠের বাইরে ছিটকে যাওয়ায় ফর্মে ফেরা কঠিন হয়ে পড়েছে তার জন্য। তবে গত সপ্তাহে হুয়েস্কার বিপক্ষে মাঠে নেমে দর্শনীয় এক গোল করেন তিনি। দীর্ঘ ৩৯২ দিন পর রিয়ালের জার্সিতে গোল পাওয়ায় বড় ভাইকে নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন কিলিয়ান।
রিয়ালের ভক্ত-সমর্থকদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেছেন, ছিটেফোঁটা ঝলক নয়, শিগগিরই এডেন হ্যাজার্ডের সামর্থ্যের পুরোটা উপভোগ করতে পারবেন তারা, ‘ভাগ্য তার সহায় হচ্ছে না। চোট সমস্যাও রয়েছে। কিন্তু আমি তাকে চিনি। সে আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে। (লা লিগার চলতি মৌসুমে) প্রথমবারের মতো খেলতে নেমেই সে গোল করেছে।’
কিলিয়ানের কথা যেন ফলে যায়, কায়মনোবাক্যে সেই প্রার্থনা নিশ্চয়ই থাকবে রিয়াল মাদ্রিদ সংশ্লিষ্ট সবার!
Comments