মার্কিন নির্বাচনের দিন থেকে শপথ গ্রহণের যাত্রা

জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আনঅফিসিয়ালি ম্যাজিক সংখ্যা ২৭০ এর দেখা পেয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার দায়িত্ব শুরু হবে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে।

অফিসিয়ালি ম্যাজিক সংখ্যার নাগাল পেতে এবং নির্বাচন থেকে শুরু করে নির্বাচনে জয়ের পর প্রেসিডেন্ট পদে অফিসিয়ালি দায়িত্ব পেতে বেশ কিছু ধাপ পার করতে হয় আমেরিকানদের।

নির্বাচনের দিন আমেরিকানরা ভোট দিয়ে সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন না। সাংবিধানিক পদ্ধতি অনুযায়ী তারা মূলত ভোট দিয়ে এমন ৫৩৮ জন ভোটারকে নির্বাচিত করেন যারা পপুলার ভোটের সংখ্যা পুরোপুরি গণনা শেষে সার্টিফাইড হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টকে ভোট দেবেন।

সিএনএনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ৫৩৮ জন ভোটারকেই সম্মিলিতভাবে ইলেকটোরাল কলেজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাদের ভোটগুলো পরবর্তীতে সিনেটের প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হবে। নতুন বছরে কংগ্রেসের একটি যৌথ অধিবেশনে সিনেট এই ভোট গণনা করবে।

নির্বাচনের দিন থেকে শপথ গ্রহণের দিন

নভেম্বর ৩

নির্বাচনের দিন। ভোটাররা ভোট দিয়েছেন এবং সেগুলো গণনা করা হয়েছে, হচ্ছে। আমেরিকানরা চাইলে ভোটের দিনের আগে তাদের ভোট ডাকযোগে পাঠাতে পারেন।

নভেম্বর ৪-২৩

নির্বাচনের দিনই যাতে ডাকযোগে পাঠানো ভোট কর্তৃপক্ষের পৌঁছে যায় সেভাবেই তা পোস্ট করা হয়। কিন্তু, সব সময় ডাকগুলো সময় মতো পৌঁছে না। অঙ্গরাজ্যভিত্তিক এই ভোটগুলো আসার শেষ সময় নির্ধারণ করা রয়েছে। ওয়াশিংটনে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই ডাকযোগে আসা ভোট গ্রহণ করা হয়। নর্থ ক্যারোলিনা এবং পেনসিলভেনিয়াতে এই ভোটগুলো গ্রহণ করা হয় ৬ নভেম্বর পর্যন্ত। এছাড়াও মিন্নিসোটা ও নেভাদায় ১০ নভেম্বর এবং অহিওতে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই ভোটগুলো গ্রহণ করা হয়।

নভেম্বর ১০- ডিসেম্বর ১১

ভোট গণনা শেষে রাজ্যগুলো ভোট সার্টিফাইড করেন। প্রতিটি রাজ্যে এটি ভিন্ন ভিন্ন ভাবে করা হয়, তবে নির্বাচনের দিন থেকে এক সপ্তাহ পরে শুরু হয় সব জায়গাতেই। ভোট পুনর্গণনা করতে হলে এই সময় বেশি প্রয়োজন হতে পারে। প্রায় সব রাজ্যেই এই কাজটি নভেম্বরের শেষ দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হলেও ক্যালিফোর্নিয়ায় বাধ্যবাধকতার কারণে সময় লাগে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

ডিসেম্বর ৮

এই দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যকে পপুলার ভোটের হিসেবে ইলেকটোরাল কলেজের চূড়ান্ত নির্ধারণ করতে হবে। নির্বাচিত ইলেকটোরাল কলেজ ভোটারদের সার্টিফাইড করা রাজ্য গভর্নরের দায়িত্ব। যদি কোনও রাজ্যে ভোট পুনর্গণনাও করতে হয়, তবে তা ৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করতে হবে।

ডিসেম্বর ১৪

ইলেকটোরাল ভোট গ্রহণ করা হবে এই দিনে। দেশটির আইন অনুযায়ী ডিসেম্বরের দ্বিতীয় বুধবারের পর প্রথম সোমবার এই ভোট গ্রহণ করা হবে। তারা প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।

ডিসেম্বর ২৩

২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ইলেকটোরাল ভোট ওয়াশিংটনে পৌঁছতে হবে। ভোট গ্রহণের পর নয় দিনের মধ্যে এই ভোট ক্যাপিটাল হিলে পৌঁছানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

জানুয়ারি ৩

হাউস এবং সিনেটের নতুন সদস্যরা শপথ নেবেন। এর মাধ্যমেই দেশটির ১১৭তম কংগ্রেস শুরু হবে।

জানুয়ারি ৬

হাউস এবং সিনেটের সদস্যরা হাউস চেম্বারে মিলিত হবেন। সেখানে সিনেটের প্রেসিডেন্টের (মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট- বর্তমানে মাইক পেন্স) পরিচালনায় ইলেকটোরাল ভোট গণনা করবেন হাউস এবং সিনেট থেকে মনোনীত দুজন সদস্য। তারা ইলেকটোরাল ভোট গণনা করে মাইক পেন্সকে দেবেন এবং তিনি তা ঘোষণা করবেন।

মার্কিন কংগ্রেসম্যান এবং সিনেটররা প্রত্যেকে একটি করে ইলেকটোরাল ভোট দেন এবং সেই সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসির তিনটি ভোট যুক্ত হয়ে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোট হয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে অন্তত ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হয়।

জানুয়ারি ২০

জানুয়ারির ২০ তারিখে নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেবেন। নির্বাচনের দিন থেকে শুরু করে শপথ গ্রহণের দিনের মধ্যে যদি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মারা যান, সেক্ষেত্রে ভাইস প্রেসিডেন্ট শপথ নেবেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে। সিনেট থেকে যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন না হয়, কিন্তু ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারপ্রাপ্ত হিসেবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। আর যদি দুটি পদের কোনটিই নির্ধারণ করা না যায়, তাহলে যতদিন সিদ্ধান্ত না আসছে ততদিনের জন্য একজন অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে দেবে সিনেট ও হাউসের যৌথ সভা।

Comments

The Daily Star  | English

Tajia procession marks holy Ashura in Dhaka amid tight security

Crowds began gathering at the site from the early hours, with many attending alongside their families and children

1h ago