রোহিঙ্গাদের ছাড়াই মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচন

রোববার ভোর থেকে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। নব্বইয়ের দশকে শুরু হওয়া সামরিক শাসনের পর এটিই দেশটির দ্বিতীয় গণতান্ত্রিক সাধারণ নির্বাচন। তবে, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মতো বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এই নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ বা প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিয়ানমারের নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন একজন ভোটার। ছবি: সংগৃহীত

রোববার ভোর থেকে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। নব্বইয়ের দশকে শুরু হওয়া সামরিক শাসনের পর এটিই দেশটির দ্বিতীয় গণতান্ত্রিক সাধারণ নির্বাচন। তবে, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মতো বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এই নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ বা প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের মতো এবারও অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, রোববার পর্যন্ত মিয়ানমারে প্রায় ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় মারা গেছেন ১ হাজার ৩৯৯ জন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দেশটির বিরোধী দলগুলো নির্বাচন পেছানোর আহ্বান জানালেও তা প্রত্যাখ্যান করে প্রশাসন।

তবে, প্রবীণ ভোটারদের অগ্রিম ভোট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতসহ ভোটকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম সরবরাহের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।

আল জাজিরা জানায়, মিয়ানমারের পূর্ব ইয়াঙ্গুনের দক্ষিণ ওক্কালপা শহরের ভোটকেন্দ্রগুলোতে কয়েকশ ভোটারদের মাস্ক, ফেস শিল্ড ও গ্লাভস পরে ভোরবেলা থেকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

এ বছর দেশটিতে প্রায় তিন কোটি ৭০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার আছে।

এদিকে, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে দেশটির নির্বাচন কমিশন রাখাইনসহ জাতিগত সংখ্যালঘু অঞ্চলে ভোটকেন্দ্র বন্ধ থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।

সংখ্যালঘুদের ভোটাধিকার বাতিলের এমন সিদ্ধান্তে মিয়ানমার সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ নির্বাচনকে ‘মৌলিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি গত মাসে জাতিগত রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু ভোটারদের বাদ দেওয়া, সরকারি সমালোচকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের ও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের পক্ষপাক্ষিত্ব নিয়ে সমালোচনা করে।

সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়নের কারণে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হলেও আবারও সু চির দল এনএলডি ক্ষমতায় আসতে চলেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

৬০ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত নাবিক উইলসন আল জাজিরাকে বলেন, ‘সু চির দল এনএলডির জন্য শতভাগ ভোট আসবে।’

ইয়াঙ্গুনের একটি পোলিং বুথের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘দেশ এখন রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এবং আমরা একটি ভালো সরকার পেয়েছি। আমাদের পছন্দ কেবল একটা দলই, আর কেউ না। এ দেশে স্বাধীনতা এসেছে। জনগণ এখন নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারে। আমি যখন জন্মেছিলাম তখন দেশে সামরিক শাসন ছিল। এনএলডি মাত্র চার বছর ধরে ক্ষমতায়। তাই আমাদের একটি নতুন ভবিষ্যতের জন্য তাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ জাতি ও ধর্মের বিষয়েও এনএলডি’র সিদ্ধান্ত ঠিক আছে বলে মনে করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার নির্বাচনী প্রচারণার চূড়ান্ত ভাষণে আবারও নির্বাচিত হলে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সু চি।

নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আইনি সীমাবদ্ধতার মধ্যে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই সমস্যাগুলো সমাধান করা।’

এ সময় ভোটারদের শান্ত থেকে ‘স্থিতিশীলতা’ বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই নিজেদের ভবিষ্যৎ তৈরিতে কাজ করতে হবে।’

জাতীয় নির্বাচনে এনএলডি-র বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে সামরিক-সমর্থিত দল ইউনিয়ন সংহতি ও উন্নয়ন পার্টি (ইউএসডিপি)।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago