দুর্দান্ত বোল্ট, বিধ্বংসী রোহিত, আইপিএলে মুম্বাইর পঞ্চম শিরোপা

ট্রেন্ট বোল্টের দুর্দান্ত প্রথম স্পেলেই মোমেন্টামটা পেয়ে গিয়েছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। পরে তাতে যোগ দেন জয়ন্ত যাদব, ন্যাথান কাটারনেইলরা। জাসপ্রিট বুমরাহ উইকেট না পেলেও খরুচে নন। শ্রেয়াস আইয়ার, ঋষভ পান্তের দুই ফিফটির পরও তাই মাঝারি পূঁজি পায় দিল্লি ক্যাপিটালস। অধিনায়ক রোহিত শর্মার ব্যাটে নাগালে থাকা ওই লক্ষ্য পেরিয়ে আরও একবার আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
মঙ্গলবার আইপিএলের ফাইনালে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতল তারা। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো পঞ্চমবার।
আগে ব্যাট করা দিল্লির ১৫৬ রান টপকে যেতে ৮ বল কম খেলতে হয়েছে তাদের। মুম্বাইর জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন রোহিত। খেলেছেন ৫১ বলে ৬৮ রানের ইনিংস।
রান তাড়ায় দারুণ শুরু আনেন রোহিত শর্মা-কুইন্টেন ডি কক। ওভারপ্রতি দশের বেশি রান আনতে থাকেন তারা। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি এগিয়ে থাকে তাদের দল। প্রথম ৪ ওভারে ৪৫ আনার পর ছন্দপতন। পঞ্চম ওভারে বল করতে এসেই মার্কাস স্টয়নিস ফিরিয়ে দেন ১১ বলে ২০ করা ডি কককে।
তাতে অবশ্য কিছু যায় আসেনি মুম্বাইর। সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গেও জুটি পেয়ে যান রোহিত। আরও ৪৫ রানের জুটির পর অবশ্য রোহিতের ভুলেই ভেঙ্গেছে তা। মিড অফে ঠেলে রান নেওয়ার অবাস্তব কলে বিপদে পড়া অধিনায়ককে বাঁচাতে উইকেট ত্যাগ করেন সূর্যকুমার।
অধিনায়কের সঙ্গে মিলে বাকি কাজটা সারতে ফের চওড়া হয়ে যায় তরুণ সেনসেশন ইশান কিশানের ব্যাট। কাজটা একদম সহজ হয়ে যায় মুম্বাইর। তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে আরও ৪৭ রান। দলকে জয়ের কাছে এনে ক্যাচ দেন রোহিত। তার আগে ৫১ বলের ইনিংসে ৪ ছক্কা, ৫ বাউন্ডারিতে ৬৮ করে যান তিনি। পরে আরও দুই উইকেট হারালেও শঙ্কা জাগেনি একেবারে। ইশান ১৯ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং বেছে ট্রেন্ট বোল্টের দারুণ এক ডেলিভারিতে ইনিংস শুরু হয় দিল্লি ক্যাপিটালসের। বাঁহাতি পেসারের লাফিয়ে উঠা দারুণ এক বলে কিছুই করার ছিল না মার্কাস স্টয়নিসের। উইকেটের পেছনে ক্যাচ যায় তার।
তৃতীয় ওভারে আবার আঘাত বোল্টের। এবার আজিঙ্কা রাহানে লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট লাগিয়ে বিদায়। ১৬ রানে ২ উইকেট হারানো দল খানিক পরই ২২ রানে ৩ উইকেটে পরিণত শেখার ধাওয়ানের বাজে শটে। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অফ স্পিনার জয়ন্ত যাদবের বলে সুইপ করতে গিয়ে হয়েছেন বোল্ড।
এরপরই প্রতিরোধ শুরু শ্রেয়াস আইয়ার আর ঋষভ পান্তের। পুরো টুর্নামেন্টে ঘুমন্ত পান্ত জাগেন ফাইনালের মঞ্চে। অধিনায়ক শ্রেয়াস ছিলেন অবিচল। দুজনের জুটি জমে যায় বেশ। ফিফটি পেরুনোর পর রান বাড়ানোর তাড়ায় পান্তের বিদায়ে ভাঙ্গে ৬৯ বলে ৯৬ রানের জুটি।
এরপর শিমরন হেটমায়ারের দিকে তাকিয়ে ছিল দিল্লি। এই ক্যারিবিয়ান এবার ঝড় তুলতে পারেননি। শেষ ৫ ওভারে তাই প্রত্যাশা মতো রান পায়নি দল। অধিনায়ক শ্রেয়াস শেষ পর্যন্ত টিকে থাকায় তারা পেরুতে পারে দেড়শোর গন্ডি। ওই রান পরে মামুলি হয়েছে মুম্বাইর আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৫৬/৭ (স্টয়নিস ০, ধাওয়ান ১৫, রাহানে ২ , শ্রেয়াস ৬৫*, পান্ত ৫৬, হেটমায়ার ৫, প্যাটেল ৯, রাবাদা ০ ; বোল্ট ৩/৩০, বুমরাহ ০/২৮, জয়ন্ত ১/২৫, কাটারনেইল ২/২৯, ক্রুনাল ০/৩০, পোলার্ড ০/১৩)
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স: ১৮.৪ ওভারে ১৫৭/৫ (রোহিত ৬৮ , ডি কক ২০, সূর্যকুমার ১৯, ইশান, পোলার্ড ৯, হার্দিক , ক্রুনাল ; অশ্বিন ০/২৮ , রাবাদা, নরকিয়া, স্টয়নিস ১/২৩, প্যাটেল ০/১৬, দুভে ০/২৯)
ফল: মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ফাইনাল: ট্রেন্ট বোল্ট।
Comments