মিয়ানমারে সামরিক অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে জাপানি সংস্থা কিরিন
জাপানি পানীয় সংস্থা কিরিন হোল্ডিংস মিয়ানমারে সামরিক অর্থায়ন বন্ধের জন্য মিয়ানমারের দুটি বিয়ার উদ্যোগ ও মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেডে (এমইএইচএল) লভ্যাংশ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ব্যবসা কীভাবে মিয়ানমারের সামরিক অর্থায়নের সঙ্গে যুক্ত এবং কিছু ইউনিট আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে কীভাবে প্রত্যক্ষভাবে দায়ী, এ নিয়ে একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
এমইএইচএল থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও শেয়ারহোল্ডারদের অফিসিয়ালি ফাঁস হওয়া নথি বিশ্লেষণ করে তদন্ত প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
এ সপ্তাহে জাপানের মাল্টিন্যাশনাল বিয়ার ফার্ম কিরিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ব্যবসায়িক পরিবেশের অভাব বিবেচনা করে এই সাময়িক স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।’
জুনে নাগরিক সমাজের তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হওয়ার পর মিয়ানমার ব্রুওয়ারি লিমিটেড ও ম্যান্ডলে ব্রুওয়ারি লিমিটেড, এই দুই যৌথ-উদ্যোগ তদন্তের জন্য ‘ডেলোয়েট’ নামের একটি পরামর্শক সংস্থাকে নিয়োগ দেয় কিরিন।
এমইএইচএল’র শেয়ারহোল্ডার রেকর্ডে দেখা গেছে, দেশটির সামরিক ইউনিটগুলো এমইএইচএল’র প্রায় এক তৃতীয়াংশ শেয়ারের মালিক।
১৯৯০ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের প্রাপ্ত বার্ষিক লভ্যাংশ প্রদানের তথ্য অনুযায়ী, এমইএইচএল এই ২০ বছরে মোট ১৮ বিলিয়ন ডলার লভ্যাংশ দিয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার সামরিক ইউনিটগুলোতে স্থানান্তরিত হয়।
গত ১১ নভেম্বর এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, ডেলোয়েটের তদন্তের ভিত্তিতে কিরিনের উচিত এমইএইচএল’র সঙ্গে সব ব্যবসায়িক সম্পর্ক দায়িত্ব নিয়ে শেষ করা।
সেপ্টেম্বরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, এমইএইচএল’র ব্যবসায়িক অংশীদার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ আছে। এমইএইচএল মিয়ানমারে যৌথ উদ্যোগ বা লাভ-ভাগাভাগির চুক্তি প্রতিষ্ঠায় এই ব্যবসায়িক অংশীদারদের সহযোগিতায় কাজ করে। যখন এগুলো থেকে লাভ হয়, তারা এমইএইচএলকে শেয়ারহোল্ডার হিসেবে সরবরাহ করে। পরে এমইএইচএল তার নিজস্ব শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ বিতরণ করে।
মিয়ানমারে এমইএইচএল’র সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে এমন আটটি কোম্পানিকে চিঠি লিখেছিল অ্যামনেস্টি। এগুলো হলো- জাপানি পানীয় সংস্থা কিরিন হোল্ডিংস, মিয়ানমারের একটি লজিস্টিক কোম্পানি এভার ফ্লো রিভার গ্রুপ পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড (ইএফআর), মিয়ানমারের জেড এবং রুবি খনির সঙ্গে জড়িত কানাবাজা গ্রুপ (কেবিজেড), দক্ষিণ কোরিয়ার প্রোপার্টি ডেভলপার আইএনএনও গ্রুপ, দক্ষিণ কোরিয়ার পোশাক তৈরি ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্যান-প্যাসিফিক, দক্ষিণ কোরিয়ার স্টিল প্রস্তুতকারক কোম্পানি পোস্কো, সিঙ্গাপুরের তহবিলে পরিচালিত তামাক প্রতিষ্ঠান আরএমএইচ সিঙ্গাপুর এবং চীনা ধাতব খনি সংস্থা ওয়ানবাও মাইনিং।
আরও পড়ুন:
Comments