বাঙালির আনন্দের জন্য আর কতো পাহাড়ি উচ্ছেদ?

Bandarban-1.jpg
পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ ও পর্যটনের নামে প্রাচীন জুম ভূমি কেড়ে না নেওয়ার দাবি জানিয়েছে পাহাড়িরা। ছবি: সংগৃহীত

‘আমি তখন ঢাকায় নটরডেম কলেজের ছাত্র। ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে ফিরছি। মনে বাড়ি ফেরার আনন্দ। কিন্তু বিকালের দিকে গ্রামে ফিরে দেখি সব ফাঁকা। কোথাও জনমানুষ নেই। অনেক চেষ্টার পর রাতের বেলা গহিন জঙ্গলে আমার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনকে খুঁজে পাই। ভয়াবহ শীতের রাতে ৩৩টি পরিবার জঙ্গলের ভেতর কলাপাতা দিয়ে অস্থায়ী ছাউনি করে কোনোরকমে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। উচ্ছেদের পর অজানা আতঙ্কে সবাই ভীতসন্ত্রস্ত।’

‘আমাদের গ্রামটি প্রায় ৫০ বছরের পুরনো। উচ্ছেদের পর আমরা চিম্বুক পথের ধারে অল্প কিছু জমিতে ক্রামাদি পাড়া নামে নতুন বসতি গড়েছি। আমাদের জুম পাহাড়, শিকারের বন, মাছ ধরার নদী, ঝরনা- সবই এখন অধিগ্রহণ করা। জুম চাষের জমি কমে যাওয়ায় ঘরে ঘরে অভাব লেগেই আছে। নতুন উচ্ছেদ আতঙ্ক এখনো তাড়া করে ফেরে।’

চিম্বুক পাহাড়ের স্থানীয় যুবক চিনপাত ম্রো ২০০৬ সালে উচ্ছেদ অভিযানের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছিলেন এক সাংবাদিককে।

এরপর ১৪ বছর কেটে গেছে। চিনপাতের এই ‘নতুন উচ্ছেদ আতঙ্ক এখনো তাড়া করে ফেরে’ একেবারে সত্যে প্রমাণিত হলো। ঠিক ১৪ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রেংয়ং ম্রো বলল, ‘নীলগিরি কোনোদিন আমাদের নাম ছিল না, চন্দ্রপাহাড় কোনোদিন আমরা চিনি না। আমরা “শোং নাম হুং” নামে চিনেছি, আমরা “তেংপ্লং চূট” নামে চিনেছি। এই “শোং নাম হুং” কীভাবে চন্দ্রপাহাড় হয়ে যায়, এই “তেংপ্লং চূট” কিভাবে নীলগিরি হয়ে যায়? এই জীবন নগর কীভাবে তোমাদের জীবন নগর হয়ে যায়? এই ভূমি, এই মাটির প্রত্যেকটা ইঞ্চি আমাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি। এই চিম্বুক পাহাড়ে একটাও প্রাইমারি স্কুল নেই, একটাও সরকারি হাই-স্কুল নেই। কোন মুখে আপনারা এখানে উন্নয়নের কথা বলেন, কোন মুখে বলেন- আমরা ম্রোদের জন্য উন্নয়ন করছি, ম্রোদের উন্নতির জন্য পর্যটন করছি।’

‘আপনাদের ভিটেমাটিতে যদি কোন ম্রো জনগোষ্ঠী গিয়ে জায়গা দখল করে, আপনাদের জায়গায় গিয়ে যদি আমরা বলতাম- এটা আমদের পর্যটন স্পট, আপনাদের কেমন লাগতো একবার নিজের বুকে হাত রেখে প্রশ্ন করুন। যেদিন আপনারা এ প্রশ্নের জবাব খুঁজে পাবেন, সেদিন আমাদের প্রশ্নও বুঝতে পারবেন।’

২০০৬ সালে কোনোরকম আগাম নোটিশ ছাড়াই ভাগ্যকুল, কদুখোলা, সুয়ালক ও টংকাবতির পাহাড়ে যে ৭৫০টি পরিবারকে উচ্ছেদ করে, তাদের মধ্যে ম্রো ছাড়াও বম, চাকমা এমনকি কিছু সংখ্যক বাঙালি পরিবারও ছিল। এরপর কেউ তাদের কোনো খবর রাখেনি। এতো বছর পর আবার মানুষগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছেন, দখল বন্ধ না হলে এবং সেখানে বিলাসবহুল হোটেল ও পর্যটন নির্মাণ করা হলে ম্রোরা তাদের চিরচেনা পরিবেশকে হারিয়ে ফেলবে এবং সেখানে ম্রোদের টিকে থাকাটা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। অন্যদিকে, পাহাড় কেটে বিলাসবহুল হোটেল নির্মাণ ও ঝরনায় বাধ নির্মাণ করা হলে প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

ম্রোদের ভিটে-মাটিহীন হওয়ার কথা শুনে আমার মনে পড়ে গেল, আমার ছোটবেলায় দেখা রমজান ভাইয়ের কথা। সে ছিল আমাদের বহুদিনের পরিচিত মাছ বিক্রেতা। একদিন বাসায় এসে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। সেদিন তার সঙ্গে মাছের ঝুড়িটা ছিল না। এভাবে কাঁদছে কেন, জানতে চাইলে বলল তাদের পুরো গ্রামের মানুষের সর্বনাশ হয়ে গেছে। মাথা গোঁজার ভিটে-মাটিটা সরকার নিয়ে নিচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে সবাইকে পথে বসতে হবে তাদের। যমুনা সেতু তৈরি করবার জন্য ওই এলাকার অনেক মানুষের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। রমজান ভাই আব্বার কাছে এসেছিল, যদি কিছু করতে পারে আব্বা, এই প্রত্যাশায়। কিন্তু রমজান ভাইতো জানতো না, সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সেখানে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে বাধা দেওয়ার কোনো মানে হয় না। রমজান ভাইকে আর পাইনি আমরা। পাগলের মতো গলা ছেড়ে কাঁদতে কাঁদতে সেই যে চলে গেল, আর আসেনি। বাস্তুচ্যুত হয়ে কোথায় যেন হারিয়ে গেল লোকটা।

রমজান ভাইয়ের ওই জমি নেওয়া হয়েছিল যমুনা ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য। উন্নয়ন কাজের জন্য যখন সরকার কারও জমি অধিগ্রহণ করে, তখন তো বলার কিছু থাকে না। এভাবে ইপিজেডগুলো করার সময় বহু মানুষের বহু জমি নিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর বদলে সরকার যে টাকা দিয়েছিল, তা প্রকৃত দামের তুলনায় খুব সামান্য হলেও তো কিছু টাকা দিয়েছিল।

কিন্তু বিনোদন কেন্দ্র বা হোটেল করার জন্য নৃগোষ্ঠী মানুষকে যখন ভিটে-মাটি ছাড়া করা হয়, তখন সেটি হয় এক ধরনের অপরাধ। কারণ এর জন্য তাদের কোনোরকম টাকা-পয়সা দেওয়া হয় না, এমনকি পুনর্বাসনও করা হয় না। এ ধরনের ভূমি দখল পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য অঞ্চলের বিদ্যমান আইন কানুনেরও লঙ্ঘন ঘটায়। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু সরকার আইএলও কনভেনশন নম্বর ১০৭ রেকটিফাই করেন। এতে বলা হয়েছে, আদিবাসীদের কাগজ বা দলিল থাকুক বা না থাকুক, যে জমি ঐতিহ্যগতভাবে ওরা ব্যবহার করে, সে জমি তাদের। কিন্তু এর আলোকে জাতীয় পর্যায়ে আইন বা নীতিমালা হয়নি এখনো। বঙ্গবন্ধু রেকটিফাই করে গেছেন। বাকিরা পরের কাজগুলো করেননি বলে, সেই সুযোগ গ্রহণ করছে সুবিধাবাদী গোষ্ঠী। আইএলও কনভেনশনের ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর সদস্যদের ঐতিহ্যগতভাবে অধিকৃত ভূমির ওপর যৌথ কিংবা ব্যক্তিগত মালিকানার অধিকার স্বীকার করতে হবে।’ আন্তর্জাতিক  সনদের বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবং এসবের আলোকে আইন না থাকায়, নৃগোষ্ঠীগুলো তাদের ভূমি রক্ষা করতে পারছে না। এখন সময় এসেছে আইএলও কনভেনশন নম্বর ১৬৯ অনুস্বাক্ষরের।

এরকমই একটি অপরাধ করেছে বনবিভাগ, টাঙ্গাইলের মধুপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক নারীর কলাবাগান কেটে ফেলে। মধুপুর গড় এলাকার বাসন্তী রেমা ৫০ শতাংশ জমি বংশ পরস্পরায় চাষ করে আসছেন। অথচ বন বিভাগ ওই জমি তাদের দাবি করে সেখানে সামাজিক বনায়নের উদ্যোগ নেয়। আমরা জানি যে, বংশ পরম্পরায় মধুপুর বনের নৃগোষ্ঠীর মানুষেরা এসব জমি চাষবাস করে আসছেন। কাগজপত্র না থাকলেও এ জমির ওপর তাদের ঐতিহ্যগত অধিকার রয়েছে। তাই এভাবে ফসলি জমিতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো অমানবিক। যদি বনবিভাগ মনে করে এটি তাদের জমি। তাদের উচিৎ ছিল আইনি পথে আসা। তাই বলে ফলনশীল গাছ কেটে ফেলবে?

এরও বহু আগে ৬০ এর দশকে টাঙ্গাইলের মধুপুর বনে পাকিস্তান সরকার একটি জাতীয় উদ্যান গড়ে তুলেছিল গারোদের ভূমিতে, ওদের উচ্ছেদ করে। বন সংরক্ষণ ও উন্নয়নের কথা বলে এটি করা হলেও, আদতে উদ্দেশ্য ছিল নৃগোষ্ঠীর উচ্ছেদ। মধুপুর বনের প্রাকৃতিক গাছগাছালি কোথায়? জীববৈচিত্র ধ্বংসের পথে। অরণ্য এখন পিকনিক স্পট। দলে দলে লোক মাইক বাজিয়ে বাস-ট্রাক নিয়ে আনন্দ করতে যাচ্ছে। আমরা আনন্দ করছি, আর বনের আদি বাসিন্দা গারো ও কোচদের জীবন শেষ। তারা মামলার ভয়ে গৃহত্যাগ করে জঙ্গলে থাকছে। উন্নয়ন ও প্রমোদ প্রকল্প তৈরির জন্য স্থানীয় মানুষকে করা হয়েছে ভিটেমাটিহীন ও দরিদ্র। মধুপুর বনের পরিবেশ ও মানুষ দুইই বিপন্ন।

প্রশ্ন হচ্ছে শুধু আনন্দের জন্য আমরা কেন দুর্বল ও বঞ্চিত মানুষদের পথে বসাচ্ছি? ২০০৪ সালে এসে আবার মধুপুর বনে জায়গা দখলের প্রক্রিয়া শুরু হয় ইকো পার্ক তৈরির জন্য। পুলিশের গুলিতে নিহত হন পিরেন সরেন। গারো আর কোচদের অনেক মানুষ আহত হয়। তাদের সংঘবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে ইকো পার্ক প্রকল্প বন্ধ হয় ঠিকই, কিন্তু জমি রক্ষার সংগ্রাম চালিয়েই যেতে হচ্ছে। সরকার, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন পরিকল্পনা বা সামাজিক বনায়ন পরিকল্পনা আদতে বনের ও জীববৈচিত্র্যেরও ক্ষতিই করে বলে পরিবেশবিদরা মনে করেন।

যে মানুষগুলো শত শত বছর ধরে বেঁচেই আছে শুধু অরণ্যকে ঘিরে, যাদের বসবাস, জন্ম, মৃত্যু, সংস্কৃতি, আনন্দ-বেদনা সব এই প্রকৃতিকে ঘিরে, সেই মানুষগুলোকেই আধুনিকতার নামে, বিনোদন কেন্দ্রের নামে আমরা উচ্ছেদ করে চলেছি। আর তাই এখন উন্নয়নের কথা শুনলেই এই নৃগোষ্ঠীর মানুষগুলো ভয় পায়। কারণ এর ফলেই তারা নিজস্ব জগত, বসতভূমি, বন ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর তাদের অধিকার হারিয়েছে।

তাকান পটুয়াখালী-বরগুনা অঞ্চলে রাখাইনদের দিকে, দেখবেন তাদের অস্তিত্ব পুরোপুরি বিলীন হওয়ার পথে। জমিজমা, মন্দির, শ্মশান, ভিটেমাটি সব দখল হয়ে গেছে। একসময় এই অঞ্চলে লক্ষাধিক রাখাইন বসবাস করতেন। এখন এই অঞ্চলে রাখাইন জনসংখ্যা আড়াই হাজারেরও কম। অনেকেই দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন অথবা অন্য কোথাও চলে গেছেন নিরাপত্তার কারণে। একই অবস্থা চলছে সিলেটের খাসিয়াপুঞ্জিতে।

চাকমা সার্কেলের রাজা দেবাশীষ রায় বহু বছর ধরেই বলে আসছেন, রাষ্ট্র কখনোই অরণ্যবাসীদের জমির অধিকার স্বীকার করেনি। আমরাও তাই দেখছি যে, পাহাড় ও বনকে নৃগোষ্ঠীর মানুষ নিজেদের ঐতিহ্য বলে মনে করে, ক্রমশ রাষ্ট্র তা কেড়ে নিচ্ছে নানা কায়দায়। তাদের সঙ্গে কোনো কথা না বলে যাকে ইচ্ছা তাকেই জমির অধিকার দিয়ে দিচ্ছে। সেখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করছে। এক্ষেত্রে কাপ্তাই লেকের কথা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

আবার নতুন করে নজর পড়েছে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের ম্রোদের জমি-জমার ওপর। অসহায় মানুষকে ভিটেমাটি ছাড়া করে পাঁচতারকা হোটেলসহ বিলাসবহুল পর্যটনের স্থাপনা তৈরি করা হবে। এর আগেও, পর্যটনের নামে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জমি দখল হতে দেখেছি। ওখানকার মানুষ স্পষ্ট করেই দাবি তুলেছে যে, পর্যটনের নামে জমি দখলের উন্নয়ন তারা চান না। বরং তারা চান ওই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল। তারা নিজেদের জমিতে চাষ করে খেয়ে পরে বাঁচতে চান। এসব কিছু না দিয়ে শুধু উন্নয়নের নামে এই উচ্ছেদ আর কত?

সাংবাদিক বিপ্লব রহমানের একটি লেখায় দেখেছি, ২০০৬ সালেও উচ্ছেদে হতদরিদ্র ম্রো জনগোষ্ঠী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘরে বাস করছেন চিম্বুক প্রধান সড়কের পাশে। তাদেরই একাংশ ‘ক্রামাদি পাড়া’ নামে নতুন একটি বসতি গড়ে তুলেছেন। কিন্তু জুম চাষের জমি কমে আসায় জীবন হয়েছে আরও কঠিন। কেউ বা পেশা বদল করে পরিণত হয়েছেন দিনমজুরে।

এভাবেই ‘উন্নয়ন’র বলি হচ্ছে নৃগোষ্ঠীর মানুষেরা। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর এতগুলো বছর পার হলেও, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশন কার্যকর হয়নি। চুক্তির পরও পাহাড়ে হাজার হাজার একর জমি দখল হয়ে গেছে রিজার্ভ ফরেস্ট, পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন, ব্যবসায়ী, প্রভাবশালী আমলা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হর্টিকালচার ও রাবার চাষের নামে ইজারা দেওয়ার নামে। হাজার হাজার একর জবরদখল করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, এইসব নৃগোষ্ঠীর মানুষ, যারা শরণার্থী হয়েছেন, তাদের জায়গা-জমি প্রত্যর্পণ ও পুনর্বাসন হয়নি। সব মিলিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পাহাড়ের মানুষ। এরা হয়তো কখনো কখনো আইনের আশ্রয় নিয়েছে, মামলা করেছে, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মামলা চালাতে গিয়ে আরও নিঃস্ব হয়েছে। এখনো জমি হারাচ্ছে তারা আর অসহায়ভাবে দেখছে যে, তাদের পাশে দাঁড়াবার বিশেষ কেউ নেই।

রামরি পাড়া থেকে আসা মেনঙি ম্রো বলেন, ‘২০০৬ সালে পার্শ্ববর্তী টংকাবতি এলাকা থেকে উচ্ছেদ হয়েছিলাম। চিম্বুক পাহাড়ে এসে যদি আবারও উচ্ছেদ হতে হয় আমরা কোথায় যাব?’ তিনি বলেন, ‘ম্রোরা পর্যটন উন্নয়নে বিরোধিতা করছেন না, কিন্তু পর্যটন স্থাপনার নামে ম্রোদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না।’

আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার। নয়তো মহাশ্বেতা দেবীর ‘চোট্টি মুন্ডা ও তার তীর’ উপন্যাসের মুন্ডা হেডম্যান পহানের মতো পাহাড়ের মানুষকে আবার বলতে হবে, ‘তুই যদি ভালো গোরমেন (গভর্নমেন্ট), তবে আমাদের এত কষ্ট কেন?’

শাহানা হুদা রঞ্জনা: সিনিয়র কোঅর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

[email protected]

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago