নোয়াখালীতে চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ১

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে চাঁদা না পেয়ে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশা ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে টর্সারসেলে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার আমান উল্লাহপুর ইউনিয়নের আইয়ুবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই ব্যবসায়ীর নাম মো. কফিল উদ্দিন (৩৫)। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় কফিল উদ্দিনের স্ত্রী বাদী হয়ে সোমবার রাতে ১৫ জনের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি রায়হানকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে।

অপহরণ ও নির্যাতনকারীরা আমান উল্লাহপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমানের অনুসারী এবং যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার আইয়ুবপুর গ্রামের পণ্ডিত বাড়ির লকিয়ত উল্লাহর ছেলে সিএনজি ব্যবসায়ী কফিল উদ্দিনের কাছে পার্শ্ববর্তী অভিরামপুর গ্রামের মোরশেদ আলমের ছেলে যুবলীগ কর্মী রায়হান দীর্ঘদিন ধরে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। কফিল উদ্দিন চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় রায়হান তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।

কফিল উদ্দিনের স্ত্রী সুমি আক্তার বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যায় আইয়ুবপুর গ্রামের কাজী বাড়ির মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রায়হানের নেতৃত্বে দুই-তিনটি মোটরসাইকেল যোগে চার-পাঁচ জন সন্ত্রাসী এসে কফিল উদ্দিনকে অপহরণ করে রায়হানের টর্সারসেলে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। স্থানীয়রা বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ রাতে ঘটনাস্থল পৌঁছে কফিল উদ্দিনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে সোমবার রাতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে রাত ৩টার দিকে তাকে ঢামেকে পাঠানো হয়।’

আজ মঙ্গলবার বিকালে আহত কফিল উদ্দিনের স্ত্রী মোবাইল ফোনে জানান, বিকাল ৪টা পর্যন্ত কফিলের জ্ঞান ফেরেনি। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

স্বামীর ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমান উল্লাহপুর বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর অভিযোগ, যুবলীগ নেতা রায়হান, জুয়েল ও বাবুসহ ১৫-২০ জনের একটি বাহিনী আমান উল্লাহপুর ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় এলাকায় সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। কফিল উদ্দিনকে মারধর করা ছাড়াও এই বাহিনীর লোকজন এলাকায় আরও অনেক অপকর্ম ঘটিয়েছে।

তবে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি কোনো বাহিনীর আশ্রয়দাতা নই। কফিল উদ্দিনকে যুবলীগ কর্মী রায়হানসহ কয়েকজন মারধর করেছেন, তবে অপহরণ করেনি। আহত কফিল উদ্দিন যুবলীগ নেতা বঙ্গমুন্সিকে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি।’

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান সিকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অপহরণ ও মারধরের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কফিল উদ্দিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তির স্ত্রী বাদী হয়ে রায়হানকে প্রধান আসামি, ১০ জনের নাম উল্লেখ এবং চার-পাঁচ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ গতরাতে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago