বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে ১ বছরেও চালু হয়নি পাবনা মেডিকেলের সিটি স্ক্যান মেশিন
পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কাম পাবনা জেনারেল হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিনটি উদ্বোধনের এক বছর পরও চালু করা যায়নি।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, শুধুমাত্র বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে অত্যাধুনিক এ মেশিনটি রোগীদের কোনো কাজে আসছে না। মূল্যবান যন্ত্রটি অচল পড়ে থাকায় উচ্চ ব্যয়ে রোগীদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে সিটি স্ক্যান করাতে হচ্ছে।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা মো. রুহুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রায় দুই কোটি টাকা দামের অত্যাধুনিক সিটি স্ক্যান মেশিনটি পাবনা জেনারেল হাসপাতালে বরাদ্দ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তোশিবা-১৬০ মডেলের এই মেশিনটি গত জানুয়ারি মাসে উদ্বোধন করা হয়। নিচতলায় এক্সরে বিভাগের পাশে একটি কক্ষে এটি স্থাপন করা হয়েছে। মেশিনটি চালানোর জন্য একজন টেকনিশিয়ানকেও পদায়ন করা হয়েছে। শুধু বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় মেশিনটি পড়ে আছে।
তিনি জানান, হাসপাতালে যে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে সেটি ২২০ ভোল্টের। কিন্তু সিটি স্ক্যান মেশিন চালানোর জন্য ৪৪০ ভোল্টের বিদ্যুৎ সংযোগ প্রয়োজন।
হাসপাতালের সিটি স্ক্যান বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে, রোগীরা সেবা না পেলেও সচল রাখার স্বার্থে প্রতিদিন ব্যাটারি চার্জ করে মেশিনটি চালু করা হয়। এই ঘরের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রগুলোও সচল রাখতে হয়।
সিটি স্ক্যান মেশিন পরিচালনার কাজে নিয়জিত টেকনিশিয়ান মো. শহিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মেশিনটি সচল রাখতে প্রতিদিন মেশিন চালু করতে হয়। হাই-ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায়, হাই-ভোল্টেজ ব্যাটারি চার্জ করে প্রতিদিন মেশিনটি চালু করতে হয়। এ ছাড়া মেশিন রুমে সার্বক্ষণিক এসি চালাতে হচ্ছে। এতে করে হাসপাতালের অহেতুক খরচ বাড়ছে।
পাবনা শহরের কিস্তপুর এলাকার বাসিন্দা রিজভি জয় ডেইলি স্টারকে বলেন, কয়েকমাস আগে আমার চাচাকে গুরুতর অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি। সিটি স্ক্যানের সুযোগ না থাকায় তাকে বেসরকারি হাসপাতালে নিতে হয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় স্থানান্তর করায় তাকে বাঁচানো যায়নি।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আইয়ুব হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, সিটি স্ক্যান মেশিনটি সেবার জন্য স্থাপন করা হলেও সেবা দিতে না পারাটা দুঃখজনক। এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগকে বার বার বলা হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। গণপূর্ত বিভাগ আর বিদ্যুৎ বিভাগের উদাসীনতায় সিটি স্ক্যান মেশিনটি চালু করা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, পাবনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম ডেইলি স্টারকে বলেন, ৪৪০ ভোল্টের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপনের জন্য হাসপাতালে ইতিমধ্যে পাওয়ার সাব-স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। সাব-স্টেশন নির্মাণের সব কাজ শেষ হয়েছে এখন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে কাজ করতে হবে।
সংযোগের জন্য নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানিকে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তারা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন করলেই হাসপাতালে সংযোগ প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।
Comments