বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ-২০২০

বাজেট কম, স্বপ্ন বড় রাজশাহীর

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে সবচেয়ে সাদামাটা দল কাদের? মুহূর্তে উত্তর আসবে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর নাম।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে সবচেয়ে সাদামাটা দল কাদের? মুহূর্তে উত্তর আসবে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর নাম। প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে ‘এ’ গ্রেডের কোনো খেলোয়াড়ই নেয়নি তারা! এমনকি নিয়মিত জাতীয় দলে খেলেন এমন ক্রিকেটারও মাত্র তিনজন।

বলাই বাহুল্য, দল তৈরি করতে বাকি চার দলের তুলনায় সবচেয়ে কম টাকা লেগেছে রাজশাহীর বেলায়। তাদের ১৬ ক্রিকেটারের পারিশ্রমিকের অঙ্কটা ১ কোটি ২ লাখ টাকা।

জাতীয় দলের তারকা

বাংলাদেশ জাতীয় দলে মোটামুটি নিয়মিত খেলেন এমন তারকাদের মধ্যে রাজশাহীতে আছেন কেবল মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, ইবাদত হোসেন ও নাজমুল হোসেন শান্ত। এদের মধ্যে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান শান্তর আবার বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা পাকা নয়। পেসার ইবাদত সুযোগ পান কেবল টেস্টে।

সেদিক থেকে বিবেচনায় তাদের মূল তারকা ভাবা যেতে পারে সাইফউদ্দিনকে। এই অলরাউন্ডারই দলটির সবচেয়ে বড় ভরসার নাম। স্ট্রাইক বোলার হিসেবে অবদান রাখার পাশাপাশি শেষ দিকে নেমে ঝড় তোলা ব্যাটিং দিয়ে রাজশাহীর অক্সিজেন যোগান দিতে পারেন সাইফউদ্দিন

টি-টোয়েন্টিতে এখনো সরগরম না হলেও গত বিপিএলে বড় একটি ইনিংস এসেছিল শান্ত ব্যাট থেকে। জাতীয় দলের ওয়ানডে ও টেস্টে নিয়মিত হতে যাওয়া এই তরুণ নেতৃত্বেও দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা। বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপে তার অধিনায়কত্ব নজর কেড়েছে আলাদাভাবে। টপ অর্ডারে দলের ব্যাটিংয়ে মূল কাজটা করার পাশাপাশি নেতৃত্বেও দেখা যাবে এই বাঁহাতিকে। 

উঠতি তারকা

অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান ইদানিং তার আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়ে বেশ নজর কাড়ছেন। তার অফ স্পিনটা জুতসই না হলেও মন্থর উইকেটে কার্যকর হতে পারে। ম্যাচ উইনারদের তালিকায় তার নাম থাকবেই।

তরুণ পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ তার গতি দিয়ে সবশেষ বিপিএলেও আলো কেড়েছেন। টি-টোয়েন্টির ভাষা চিনে ফেলা এই ডানহাতির সামনে সুযোগ নিজেকে আরও মেলে ধরার।

শক্তি-দুর্বলতা

নামেভারে শক্তিশালী দল করার দিকে মূলত রাজশাহী হাঁটেইনি। তাদের নজর ছিল মাঝারি খেলোয়াড়দের দিকে। দলের মূল শক্তির জায়গা সাইফউদ্দিন, শান্ত বা শেখ মেহেদির মতো তরুণরা। বড় ম্যাচে পারফর্ম করার স্কিল আছে রনি তালুকদারের।  কিন্তু টুর্নামেন্ট জিতিয়ে দেওয়ার রসদ তাতে আছে কিনা, সেই প্রশ্ন থাকছে।

রাজশাহী দলে নিয়েছে বেশ কয়েকজন সাবেক জাতীয় তারকাকে। ৩৬ পেরুনো মোহাম্মদ আশরাফুলকে ড্রাফটের শুরুর দিকেই দলে নিয়ে নেয় তারা। মেদ ঝরিয়ে ফিটনেসে উন্নতি করা আশরাফুল বলছেন, তিনি আছেন সেরা অবস্থায়। তবে সেরা সময় পেরিয়ে আসা এই তারকা কতটা জ্বলে উঠবেন তা নিয়ে বড় সংশয় আছে। অভিজ্ঞ রকিবুল হাসানও তেমন একজন। হাতে মার আছে, ইনিংসও গড়তে পারেন রকিবুল। কিন্তু লম্বা সময় টি-টোয়েন্টি না খেলার জড়তা কাজ করতে পারে তার মধ্যে।

ঘরোয়া পারফরমার

রাজশাহীর শক্তি হয়ে উঠতে পারেন বেশ কজন অভিজ্ঞ ঘরোয়া পারফর্মার। রনি ওপেন করতে নেমে ঝড় তুলতে পারেন। ফজলে মাহমুদ রাব্বিরও আছে সেই ক্ষমতা। উইকেটের পেছনে দেশসেরা নাম নুরুল হাসান সোহানও তাদের ডেরায়।  তরুণ জাকের আলি অনিক এই জায়গায় ভালো বিকল্প।  অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা বরাবরই এই ধরনের আসরে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন।

এক্স-ফ্যাক্টর

নিশ্চিতভাবেই পেস অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

প্রত্যাশা-লক্ষ্য

অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর শান্ত জানান, এই দলই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যথেষ্ট ভারসাম্যপূর্ণ, ‘আমার কাছে মনে হয় যে, অনেক লম্বা একটা টুর্নামেন্ট। তাই আস্তে আস্তে ধাপে ধাপে আমরা আগাতে চাই। দল নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু আমি মনে করি যে, ঘরোয়া ক্রিকেটে যারা পারফর্মার, প্রতিবছর যারা ভালো ক্রিকেট খেলে, তারাই আমাদের দলে আছে। দল নিয়ে বলব যে খুব ভালো একটা দল হয়েছে। আমরা চ্যাম্পিয়নশিপের জন্যই খেলব।’

মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী: মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শেখ মেহেদী হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), নুরুল হাসান সোহান, ফরহাদ রেজা, মোহাম্মদ আশরাফুল, আরাফাত সানি, ইবাদত হোসেন, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, রনি তালুকদার, আনিসুল ইমন, রেজাউর রহমান, জাকের আলি অনিক, রকিবুল হাসান (সিনিয়র), মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, সানজামুল ইসলাম।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago