বঙ্গবন্ধু কখনো নিজের এবং সন্তানদের আরাম আয়েশের কথা চিন্তা করেননি: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কখনো নিজের এবং সন্তানদের আরাম আয়েশের কথা চিন্তা করেননি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কখনো নিজের এবং সন্তানদের আরাম আয়েশের কথা চিন্তা করেননি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন।

আজ বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের দশম অধিবেশনের সমাপণী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার নিয়ে নানা মিথ্যা রটনা করা হয়েছিল। কিন্তু, বঙ্গবন্ধু কখনো নিজের এবং সন্তানদের আরাম আয়েশের কথা চিন্তা করেননি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে ক্ষমতা জনগণের হাতে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন।’

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের বাসায় থাকতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু, করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া যাবে না।’

এর আগে, বিরোধী দলীয় উপনেতা এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের তার সমাপণী বক্তব্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানান।

জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে একবার স্কুল খোলা হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পরে আবার তারা স্কুল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংক্রমণ কমে এলে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছিল। কিন্তু, ইউরোপে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ দেখা দিয়েছে। সংক্রমক এই ব্যাধির এখনো চিকিৎসা বের হয়নি। বাচ্চারা স্কুলে গেলে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি কেন নেব?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অটো–পাস’ (পরীক্ষা ছাড়া পাস) দেওয়াতে খুব ক্ষতি হয়ে গেছে এমন নয়। ইংল্যান্ডও অটো–পাস দিয়েছে।

সংসদ নেতা বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও অর্থনীতি গতিশীল রাখতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তারপরও মানুষের কিছু কষ্ট আছে।

তিনি বলেন, ‘আবার করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে।’ তাই সবাইকে মাস্ক পরে বাইরে বের হওয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি ।

গত ৮ নভেম্বর শুরু হয়েছিল এই অধিবেশন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রথমবারের মতো এই ‘বিশেষ অধিবেশন’ ডাকা হয়। মোট ১০ কার্য দিবসের এই অধিবেশনে পাঁচ কার্যদিবস ছিল বিশেষ অধিবেশন।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই অধিবেশনের প্রস্তাব এনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার ও বিরোধী দলীয় সদস্যরা এই প্রস্তাবের ওপর বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক এবং কর্মময় জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন।

এই প্রস্তাবের উপর ৭৯ জন সরকারি এবং বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য পাঁচ কার্যদিবসে প্রায় ১৯ ঘণ্টা দীর্ঘ আলোচনা করেন। পরে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে সংসদ এ গৃহীত হয়।

গতকাল সমাপনী বক্তব্যে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা একটি দেশ দিয়ে গেছেন। বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়তে চেয়েছিলেন উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে। কিন্তু, তিনি সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর সময়। জাতির পিতাকে হত্যার পর ইতিহাস থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণি পেশার মানুষের সমন্বয়ে ঐক্য সৃষ্টি করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সে জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্য ছিল দেশকে সমৃদ্ধশালী করা। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংবিধান সংশোধনের দিন সংসদে বঙ্গবন্ধু যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তাতে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।’

পরে বঙ্গবন্ধুর সেদিনের ভাষণের রেকর্ডটি জাতীয় সংসদে বাজানো হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago