টিএসপি সারের অতিরিক্ত দামে চাষিদের হতাশা
সরবরাহ কমে যাওয়ায় অতিরিক্ত দামে টিএসপি সার বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। শীতের শুরুতেই সারের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ায় চাষিদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
লালমনিরহাটের সদর উপজেলার কর্ণপুর গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী প্রতি কেজি টিএসপি সার ২২ টাকা দরে বিক্রি হওয়ার কথা কিন্তু সার ব্যবসায়ীরা সংকট দেখিয়ে ২৮ থেকে ২৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। বাধ্য হয়ে আমরাও বেশি দামে কিনছি।
একই গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, শীতকালীন ফসলের রোগবালাই দমন ও গাছের পুষ্টিগুণ ঠিক রাখতে টিএসপি সার ব্যবহার করা হয়। বিকল্প হিসেবে ডিএপি সার ব্যবহার করে দেখা গেছে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসে না। ডিএপি সারের ব্যবহারে গাছ তাড়াতাড়ি বড় হয় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণও বেড়ে যায়।
আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী গ্রামের কৃষক নরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, এই মৌসুমে প্রতিদিনই টিএসপি সার ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া, ভালো ফসল উৎপন্ন করা সম্ভব না। অথচ সারের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সার ডিলার আশরাফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, চাহিদার তুলনায় টিএসপি সারের সরবরাহ খুবই অপ্রতুল। কৃষকদের চাহিদা থাকায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে বেশি দামে টিএসপি সার কিনে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
মহেন্দ্রনগরে বিএডিসি সার গুদামের ইনচার্জ মোজাম্মেল হক জানান, জেলায় ৯২ জন বিএডিসি সার ডিলারের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে চাষিদের মধ্যে ন্যায্য মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে। চলতি মাসে প্রত্যেক সার ডিলারকে ছয় হাজার কেজি টিএসপি সারের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামিম আশরাফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের লোকজন সারের দাম নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। টিএসপি সারের সরবরাহ কম থাকায় ডিলাররা বেশি দামে বিক্রি করতে পারে। টিএসপি সারের সরবরাহ বাড়াতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে। ডিএপি সার মানের দিক থেকে টিএসপি সারের চেয়ে বেশি ভালো এবং দামেও সস্তা। আমরা কৃষকদের ডিএপি সার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি। টিএসপি সারে শুধু ফসফেটের গুণ রয়েছে কিন্তু ডিএপি সারে রয়েছে ফসফেট ও ইউরিয়ার গুণ।
Comments