জৈব সুরক্ষা বলয় রাবাদার কাছে ‘বিলাসবহুল কারাগার’
দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের সামনে ব্যস্ত সূচি। পরিবর্তিত বাস্তবতায় নতুন সিরিজ মানেই দীর্ঘ সময়ের জন্য জৈব সুরক্ষা বলয়ে ঢুকে পড়া। সেখানে সুযোগ-সুবিধা অন্ত নেই, স্বাস্থ্য ঝুঁকির শঙ্কাও ক্ষীণ। কিন্তু চলাফেরা করতে হয় একটি সীমাবদ্ধ গণ্ডির ভেতরে। সবকিছু মিলিয়ে প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদার কাছে জৈব সুরক্ষা বলয় যেন ‘বিলাসবহুল কারাগার’। তবে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে নিজেদের ভাগ্যবানও ভাবছেন তিনি।
আগামী ২৭ নভেম্বর শুরু হবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের সিরিজ। তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর সমান সংখ্যক ওয়ানডে খেলবে দুদল। নিজেদের মাটিতে এই সিরিজকে সামনে রেখে কেপ টাউনে জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকছে প্রোটিয়ারা। সোমবার অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে তার জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন রাবাদা, ‘এটা বেশ কঠিন হতে পারে (শুরুতে)। অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করা যায় না। কার্যত স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলতে হয়। মনে হয়, আমরা যেন বিলাসবহুল কারাগারে আছি। কিন্তু আমাদের স্মরণে রাখতে হবে যে, আমরা ভাগ্যবান।’
কেন নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছেন, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি, ‘(করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে) কত লোক চাকরি হারিয়েছে, কত লোক এখন সংগ্রাম করছে। তাই আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। কারণ, আমরা অর্থ উপার্জনের ও নিজেদের ভালোবাসার কাজটি করার সুযোগ পাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে তো খারাপ আচরণ করা হচ্ছে না (সুরক্ষা বলয়ে)। আমরা ভালো হোটেলে থাকছি। সেরা খাবারটা খাচ্ছি। ব্যাপারটা এমন যে, এক দুষ্টু বালক চকলেটের দোকানে গিয়ে পছন্দেরটি পাচ্ছে না।’
জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকার সময়টা দুরূহ হলেও মাঠে নামলেই সমস্ত নেতিবাচকতা থেকে মুক্তি মেলে বলেও জানান রাবাদা, ‘এটা কঠিন হতে পারে। কারণ, চার দেয়ালের ভেতরে থাকতে হয় এবং মানসিকভাবেও একটা প্রভাব পড়ে। তখন আশেপাশে যা ঘটছে, তা নিজেকে মনে করিয়ে দিতে হয়। আর একবার যখন আমরা খেলতে শুরু করি, সেসব নিঃসঙ্গ সময় থেকে এটা আমাদের দূরে সরিয়ে নেয়।’
চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার জারি করেছিল লকডাউন। প্রায় ছয় মাস সেভাবে কাটিয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলতে গিয়েছিলেন রাবাদা। সেখানে ১১ সপ্তাহ জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকতে হয় তাকে। তবে একটানা দীর্ঘ সময় সীমাবদ্ধ গণ্ডির ভেতরে থাকার পরও রাবাদার পারফরম্যান্সে কোনো নড়চড় হয়নি। ১৭ ম্যাচে ৩০ উইকেট নিয়ে আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হন তিনি।
Comments