ধানের মৌসুমে ‘ধান কুড়ানি’র গল্প

ধানের মৌসুম এলে মাঠে মাঠে দেখা মিলে ধান কুড়ানিদের। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ধান কুড়ানি শিশু ও বয়স্করা মাঠে মাঠে ধান কুড়িয়ে দিন শেষে বাড়ি ফিরেন। ধান কুড়ানি এসব মানুষ ভুমিহীন দরিদ্র পরিবারের। প্রত্যেক ধান কুড়ানি দিন শেষে ৩-৫ কেজি পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করতে পারেন।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভাদাই গ্রামের দুই শিশু ধান কুড়াচ্ছে। ছবি: এস দিলীপ রায়

ধানের মৌসুম এলে মাঠে মাঠে দেখা মিলে ধান কুড়ানিদের। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ধান কুড়ানি শিশু ও বয়স্করা মাঠে মাঠে ধান কুড়িয়ে দিন শেষে বাড়ি ফিরেন। ধান কুড়ানি এসব মানুষ ভুমিহীন দরিদ্র পরিবারের। প্রত্যেক ধান কুড়ানি দিন শেষে ৩-৫ কেজি পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করতে পারেন।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভাদাই গ্রামের কৃষক জীতেন চন্দ্র বর্মণ (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘ধানের মৌসুমে জমি থেকে ধান কেটে বাড়িতে নেওয়ার পথে কিছু ধান মাটিতে পড়ে যায়। গ্রামের অনেক ভূমিহীন দরিদ্র পরিবারের নারী ও শিশুরা মাটিতে পড়া এসব ধান সংগ্রহ করে থাকেন। এতে ধানের মৌসুমে গ্রামের ভূমিহীন পরিবারেও দেখা যায় কয়েক মন ধান।’

‘মাটিতে পড়া ধান কৃষকরা সংগ্রহ করেন না,’ বলেও জানান তিনি।

একই গ্রামের কৃষক নাসের উদ্দিন (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘মাটিতে পড়া ধান কুড়ানোর পাশাপাশি জমিতে ইঁদুরের গর্তও খুড়ে ধান সংগ্রহ করে থাকে ধান কুড়ানিরা। ইঁদুর বিভিন্ন সময় জমির ধান কেটে নিয়ে গর্তে জমা করে রাখে।’

কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিরাম গ্রামের ভূমিহীন সখিনা বেগম (৪৬) ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘আমাদের জমি নেই বলে অন্যের মাটিতে বাড়ি করে থাকি। কিন্তু, ধানের মৌসুমে আমাদের ঘরেও ৬ থেকে ৭ মণ ধান জমা থাকে।’

স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ধানের মৌসুমে স্বামীও মাঠে-মাঠে ঘুরে মাটিতে পড়া ধান সংগ্রহ করেন।’

একই গ্রামের ধান কুড়ানি শিশু মানিক ইসলাম (১০) জানিয়েছে, সে ও তার এক বন্ধু মিলে মাটিতে পড়া ধান কুড়ায়। মাঝে-মধ্যে ইঁদুরের গর্ত থেকেও ধান বের করে।

‘ধান কুড়াতে মোক খুব ভাল লাগে। আমরা দুই জনে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি ধান কুড়াই,’ যোগ করে সে।

মানিকের বন্ধু সিফাত ইসলাম (১১) বলে, ‘ইঁদুরের গর্ত খুঁড়তে গেলে ভয় লাগে। বড় বড় ইঁদুর বের হয়ে আসে। মাঝে মাঝে গর্তে সাপও দেখা যায়।

‘বাড়িতে যখন খুব অভাব থাকে তখন কুড়ানি ধান দিয়ে চাল বানায়, ভাত রাঁধে,’ যোগ করে সে।

এনজিওকর্মী সোহেল রানা ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ধান কুড়ানো এ অঞ্চলে নুতন কিছু নয়। এটা অনেক পুরাতন। কুড়ানি ধানে গ্রামের অনেক দরিদ্র পরিবার অভাব মেটানোর সুযোগ পায়।’

Comments

The Daily Star  | English

Rab will never get involved in enforced disappearances, killings: DG

Rab will never get involved in incidents such as enforced disappearances and killings anymore, the force’s Director General AKM Shahidur Rahman said today

12m ago