আগামীকাল দৃশ্যমান হতে পারে পদ্মাসেতুর ৫.৮৫ কিলোমিটার
অনুকূল আবহাওয়া আর কারিগরি জটিলতা দেখা না দিলে পদ্মা সেতুর ৩৯তম স্প্যান বসানো হতে পারে আগামীকাল শুক্রবার। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১০ ও ১১ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হবে 'টু-ডি' স্প্যানটি। পদ্মার মূল নদীতে অবস্থিত এ দুই পিলারে স্প্যানটি বসানো গেলে দৃশ্যমান হবে সেতুর ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার। এটি হলে সেতুতে স্প্যান বসানো বাকি থাকবে আর দুটি।
৩৮তম স্প্যান বসানোর ছয় দিনের মাথায় এ স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু করেছে প্রকৌশলীরা। যার জন্য অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা ছিল দুই পিলার ও ইয়ার্ডে রাখা স্প্যানটি। বৃহস্পতিবার সকালে পদ্মাসেতুর প্রকৌশলী সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
শুক্রবার সকালে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে 'তিয়ান-ই' নামের ভাসমান ক্রেনটি বহন করবে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটিকে। কুয়াশাসহ আবহাওয়া পরিস্থিতি বাধা না হয়ে দাঁড়ালে সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে রওয়ানা করবে। এরপর ৩০-৪০ মিনিট সময় নিয়ে নির্ধারিত দুই পিলারের কাছে পৌঁছানোর কথা।
পদ্মা সেতুর প্রকৌশলী সূত্র জানান, স্প্যানটিকে নির্ধারিত পিলারের কাছে নিয়া আসা, মূল নদীতে ভাসমান ক্রেনের নোঙর, পজিশনিং, এরপর পিলারের উচ্চতায় স্প্যানটিকে তোলা ও বেয়ারিং এর উপর রাখার ধাপগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করা গেলেই কার্যক্রম শেষ হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে সকাল ৯টায় কাজ শুরু হয়ে দুপুর ২টার মধ্যেই দৃশ্যমান হবে। তবে, প্রাকৃতিক কারণ বাধা হয়ে দাঁড়ালে একদিন বেশি সময় লাগতে পারে। ৩৯তম স্প্যানটি বসানোর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন শেষ ধাপের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। একদিনের মধ্যেই স্প্যান বসিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী প্রকৌশলীরা।
এদিকে, ১০ ও ১১ নম্বর পিলারের আশেপাশে চলাচলকারী নৌযানগুলো যাতে স্প্যান বসানোর কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত না করে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুইটি বোট সেখানে অবস্থান নিয়ে নিরাপদ দূরত্ব দিয়ে চলাচলের নির্দেশনা দেবে।
প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, গেল মাসেও টার্গেট অনুযায়ী চারটি স্প্যান বসানো হয়েছে সেতুতে। আর ৩৯তম স্প্যানটি বসানো গেলে এ মাসেও চারটি স্প্যান বসানোর লক্ষ্য সম্পন্ন হবে। ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর পিলারে ৪০তম স্প্যান (স্প্যান ২-ই) বসানোর পরিকল্পনা আছে প্রকৌশলীদের। বিজয় দিবসের আগেই মাওয়া প্রান্তে ৪১তম স্প্যানটি বসার কথা রয়েছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসে।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মাসেতুর কাঠামো। সেতুর ওপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
Comments