রাজধানীর খালগুলোর দায়িত্ব পেতে যাচ্ছে ২ সিটি করপোরেশন

Water-logging
সামান্য বৃষ্টিতেও জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পরতে হয় রাজধানীবাসীকে। ছবি: আনিসুর রহমান

রাজধানীর খালের দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনের হাতে দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় খালের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতেই ছিল এবং আইনেও তাই আছে। পরবর্তীতে কোনো এক সময় রাষ্ট্রপতির আদেশে সেটি ঢাকা ওয়াসার হাতে দেওয়া হয়। এখন দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র খালের দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আজ সকলে মিলে আলোচনায় বসে আমরা ওয়াসা থেকে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে খালগুলো হস্তান্তরের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

খালের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতে দেওয়ার জন্য ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘হস্তান্তরের কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যায় সেলক্ষ্যে আজকেই একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে চার জন করে মোট আট জন, ঢাকা ওয়াসা থেকে চার জন এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিমকে আহ্বায়ক ও মোহাম্মদ সাঈদ উর রহমানকে সদস্য সচিব করে এই কমিটি করা হয়েছে।’

সিটি করপোরেশন কীভাবে কাজ করবে এবং ওয়াসা কীভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে সে বিষয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে এই কমিটি। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী আইনানুগ প্রক্রিয়া সম্পাদন হবে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সংস্কারসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে এতদিন ওয়াসা দায়িত্ব পালন করেছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর দুই সিটি করপোরেশন পালন করবেন। পানি নিষ্কাশনের জন্য জনবল, যন্ত্রপাতিসহ সবকিছুই সিটি করপোরেশনের কাছে আছে, তাদের সক্ষমতাও আছে। দুই মেয়র অত্যন্ত আন্তরিক এবং জনবান্ধব। তারা এই কাজ স্বতঃস্ফূর্তভাবে করতে পারবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’

রাস্তা খোড়াখুড়ি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর আধুনিক শহরে ইউটিলিটিক্যাল সাপোর্ট দেওয়ার জন্য পাইপলাইন স্থাপন করতে হয় এবং সময়ের সঙ্গে ক্যাপাসিটির জন্য পরিবর্তনও করতে হয় ‘

এ সমস্যা সমাধানে মেয়রসহ বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। আমরা দুই সিটির মেয়র চেয়েছিলাম ঢাকা শহরের খালগুলো আমাদের আওতায় যেন দেওয়া হয়। আজ সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো জনগণকে এই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করতে।’

দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আজকে আমরা দীর্ঘ দিনের পুঞ্জিভূত সমস্যা নিরসনে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। প্রায় ৩০ বছরের বেশি সময় ঢাকাবাসী দুর্ভোগে ছিল। আমি আশাবাদী, সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের কাজের মাধ্যমে অচিরেই ঢাকাবাসীকে এর সুফল দিতে পারব।’

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, ‘১৯৮৮ সালে রাষ্ট্রপতির একটি সিদ্ধান্ত ছিল ওয়াসাকে দিয়ে দেওয়া। আমরা যখন ২০০৯-১০ সালে দায়িত্বে আসার পর ২০১২ সাল থেকে অনেক বার বলেছি এটা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হোক। আজকে সেটার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

10h ago