ফার্গুসনের তোপে ক্যারিবিয়ানদের হারাল নিউজিল্যান্ড

ছবি: টুইটার

রীতিমতো ঝড় তুলে ইনিংসের সূচনা করেছিল উইন্ডিজ। হঠাৎ করেই সেই ঝড় থামিয়ে দেন লোকি ফার্গুসন। অসাধারণ বোলিং করে ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস আটকে রাখেন লক্ষ্যসীমার মধ্যেই। এরপর বাকি কাজটা করেন ব্যাটসম্যানরা। ফলে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জয় তুলে এগিয়ে গিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে শুক্রবার উইন্ডিজকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। বৃষ্টিস্নাত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৬ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রান করে উইন্ডিজ। তবে বৃষ্টির কারণে নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬ ওভারে ১৭৬ রান। ৬ বল বাকি থাকতেই সে লক্ষ্যে পৌঁছায় স্বাগতিকরা।

বৃষ্টি কারণে এদিন ম্যাচে দফায় দফায় বাধা সৃষ্টি হয়। ম্যাচের ৪ বল গড়াতেই বৃষ্টি নামে। এরপর থামলেও ২ ওভার পর ফের নামে। পরে বৃষ্টি থামলে ১৬ ওভারে ম্যাচ নির্ধারণ করা হয়। বৃষ্টিস্নাত দিনের সুবিধা আদায় করে নিতে টস জিতে প্রথমে উইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান কিউই অধিনায়ক টিম সাউদি। যদিও প্রত্যাশা অনুযায়ী সূচনা হয়নি তাদের। দুই ক্যারিবিয়ান ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার ও ব্রান্ডন কিং উড়ন্ত সূচনা করেন। এ দুই ব্যাটসম্যানের আগ্রাসনে মাত্র ৩ ওভারেই ৫৫ রান তোলে দলটি।

কিন্তু এরপর হঠাৎ করেই বদলে যায় পাশা। ওপেনিং জুটি ভাঙতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে দলটি। দলীয় ৫৮ রানেই ৪টি উইকেট হারায় তারা। মূলত লোকি ফার্গুসনের তোপে পড়ে দলটি। চতুর্থ ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নেন। পরের ওভারে বল করতে এসে জোড়া উইকেট তুলে নেন সাউদিও। এরপর স্কোরবোর্ডে আর ১ রান যোগ করার পর আরও এক উইকেটের পতন হয়। ফলে উড়তে থাকা ক্যারিবিয়ানরা হঠাৎই কোণঠাসা হয়ে পড়ে।

এরপর ফ্যাবিয়ান অ্যালানকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। ৮৪ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন তারা। এরপর ফের দ্রুত ২টি উইকেট হারালে শেল্ডন কট্রেলকে সঙ্গে নিয়ে শেষ উইকেটে ৩৪ রান তোলেন পোলার্ড। অবশ্য এর মূল কৃতিত্ব অধিনায়কেরই। কারণ এ জুটিতে কট্রেলের অবদান মাত্র ১ রান।

শেষ পর্যন্ত ৩৭ বলে ৭৫ রান করে অপরাজিত থাকেন পোলার্ড। ৪টি চার ও ৮টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ ব্যাটসম্যান। ফ্লেচার ১৪ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় খেলেন ৩৪ রানের ইনিংস। এছাড়া ২৬ বলে অ্যালানের ব্যাট থেকে আসে মূল্যবান ৩০ রান। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে এদিন দুর্দান্ত বোলিং করেছেন ফার্গুসন। ২১ রানের খরচায় তুলে নিয়েছেন ৫টি উইকেট। ২টি উইকেট নিয়েছেন অধিনায়ক সাউদিও।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। দলীয় ৭ রানেই মাঠ ছাড়েন মার্টিন গাপটিল। খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার টিম সেইফের্টও। এরপর গ্লেন ফিলিপ্স অবশ্য ডেভন কনওয়ের সঙ্গে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এ জুটিতে স্কোরবোর্ডে ২৮ রান যোগ করতেই ওশেন থমাসের বলে বোল্ড হয়ে যান ফিলিপ্স। আর অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রস টেইলরকে দারুণ এক থ্রোতে রানআউট করেন অ্যালান। ফলে চাপে পড়ে যায় কিউইরা।

তবে পঞ্চম উইকেট জেমি নিশামকে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন কনওয়ে। স্কোরবোর্ডে ৭৩ রান যোগ করেন তারা। বল হাতে নিয়ে এ জুটি ভাঙেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক পোলার্ড। ফলে ফের ম্যাচে ফিরে আসে উইন্ডিজ। কিন্তু স্যান্টনারকে সঙ্গে নিয়ে এরপর আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন নিশাম। অবিচ্ছিন্ন ৩৯ রানে জয় নিশ্চিত করেন তারা। অবশ্য এ জুটিতে মূল অবদান স্যান্টনারেরই। ১৮ বলে ৩ ছক্কায় করেন ৩১ রান।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করে অপরাজিত থাকেন নিশাম। ২৪ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। কনওয়ের ব্যাট থেকে আসে ৪১ রান। ২৯ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া ফিলিপ্স করেন ২২ রান। ক্যারিবিয়ানদের পক্ষে ২৩ রানের খরচায় ২টি উইকেট পেয়েছেন ওশেন থমাস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

উইন্ডিজ: ১৬ ওভারে ১৮০/৭ (ফ্লেচার ৩৪, কিং ১৩, হেটমায়ার ০, পুরান ১, পাওয়েল ০, পোলার্ড ৭৫*, অ্যালান ৩০, পল ০, কট্রেল ১*; সাউদি ২/২২, জমিসন ০/২৬, বেনেট ০/৫০, ফার্গুসন ৫/২১, স্যান্টনার ০/২৩, নিশাম ০/৩২)।

নিউজিল্যান্ড: ১৫ ওভারে ১৭৯/৫ (গাপটিল ৫, সেইফের্ট ১৭, কনওয়ে ৪১, ফিলিপ্স ২২, টেইলর ০, নিশাম ৪৮*, স্যান্টনার ৩১*; কট্রেল ১/৩০, অ্যালান ০/৩২, থমাস ২/২৩, উইলিয়ামস ০/৩৩, পল ০/৩৯, পোলার্ড ১/১৬)।

ফলাফল: বৃষ্টি আইনে নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী। 

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: লোকি ফার্গুসন (নিউজিল্যান্ড)। 

Comments

The Daily Star  | English

Govt at it again, plans to promote retirees

"A list of around 400 retired officials is currently under review though it remains unclear how many of them will eventually be promoted"

9h ago