শ্রমিক সংকটে আমন ধান নিয়ে বিপাকে পাবনার কোলাদি গ্রামের কৃষক

Pabna_Koladi_Aman_29Nov20.jpg
ছবি: স্টার

মাঠজুড়ে আমন ধান পেকে হলুদ হয়ে গেছে। পর্যাপ্ত শ্রমিক না পাওয়ায় ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না পাবনা শহর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে কোলাদি গ্রামের কৃষকরা। অল্প শ্রমিক নিয়ে অনেকে ধান কাটা শুরু করলেও ঘরে নিয়ে যেতে না পেরে জমিতেই স্তূপাকারে ফেলে রাখছেন।

কোলাদি গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়য়ের শিক্ষক সাইদ-উল-ইসলাম এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এক সপ্তাহ হলো কৃষিশ্রমিক খুঁজছি। পাঁচ বিঘা জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে ২৫ থেকে ৩০ জন শ্রমিক প্রয়োজন। মাত্র চার জন শ্রমিক নিয়ে ধান কাটা শুরু করেছি। কাটার পরে ঘরে আনতে পারিনি, জমিতেই শুকাতে দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিক সংকট হওয়ায় জমি থেকে ধান ঘরে আনতে এবার ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহৃত হচ্ছে।’

কোলাদি গ্রামের ঘোড়ার গাড়িচালক ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘আমাদের গ্রামে প্রায় ১৯টি ঘোড়ার গাড়ি আছে। যাত্রী পরিবহনে এখনো ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহৃত হয়। এবার ধান পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে।’

‘অনেকেই ঘোড়ার গাড়ি কিনছেন। একটি মহিষের গাড়ি প্রস্তুত করতে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা ব্যয় হয়। দেখা যায়, সারা বছর মহিষের গাড়ি কোনো কাজে আসে না। এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ করে ঘোড়ার গাড়ি বানিয়ে নিলে সারা বছর যাত্রী পরিবহন করা যায়’— বলেন ইসলাম মোল্লা।

অপেক্ষাকৃত উঁচু জমি হওয়ায় কোলাদি গ্রামে বন্যার প্রভাব পড়ে না। ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করলে এবড়োথেবড়ো রাস্তা দিয়েও সহজে ফসল পরিবহন করা যায়।

কোলাদি গ্রামের কৃষক হাসেম মোল্লা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রতি মণ ধান পরিবহনে কৃষিশ্রমিককে দিতে হয় সাত কেজি। ঘোড়ার গাড়িতে এক মণ ধান পরিবহনে দিতে হয় তিন কেজি ধান। সময়ও কম লাগে।’

কৃষিবিদ জাফর সাদেক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মাঠ থেকে গরু বা মহিষের গাড়িতে ফসল পরিবহন বাঙালির সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে। তবে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার নতুন সংযোজন। নানা কারণে কৃষিশ্রমিকরা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। ফলে শ্রমিক সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Israel welcomes 'all help' in striking Iran

Israel hits nuclear sites, Iran strikes hospital as conflict escalates

1d ago