বেগুন চাষে পুষিয়ে গেছে গত বছরের ক্ষতি
অতিবৃষ্টি, দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও পোকার আক্রমণে বেগুন উৎপাদন খরচ বাড়লেও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দাম পাচ্ছেন লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের কৃষকরা। এতে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে গেছে। গত বছর বাজারে সরবরাহ বেশি থাকায় দুই জেলার চাষিরা প্রত্যাশিত দামে বেগুন বিক্রি করতে পারেননি। এদের মধ্যে অনেককে লোকসানে পড়তে হয়েছিল।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত বছর এই সময় প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি করেছিলাম সাত থেকে আট টাকা কেজি দরে। এ বছর বিক্রি করছি ২৫ টাকা কেজি দরে। এক শতাংশ জমিতে বেগুন চাষ করতে খরচ হয় পাঁচ শ থেকে ছয় শ টাকা। এক শতাংশ জমিতে দুই থেকে তিন মণ বেগুন হয়। এবার প্রায় চার গুণ বেশি লাভ হচ্ছে।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলার চিনিপাড়া গ্রামের কৃষক মিনারুল ইসলাম বলেন, ‘এবার ২৫ হাজার টাকায় ৪০ শতাংশ জমিতে বেগুন চাষ করেছি। গত এক সপ্তাহে ৬৫ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। প্রতি দিন গড়ে ছয় থেকে সাত হাজার টাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে। এখনো খেতে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকার বেগুন আছে। গত বছর বেগুন নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছিল।’
গত বছর বেগুন চাষে প্রত্যাশিত লাভ না হওয়ায় এবার সব ধরনের সবজি চাষ করেছেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, ‘সব ধরনের শাক-সবজি চাষ করে এবার আমরা লাভবান হচ্ছি। এটা অপ্রত্যাশিত।’
লালমনিরহাট শহরের গোশালা বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী গোলাম রসুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চাহিদা বেশি থাকায় এবার কৃষক ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে।’
লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে দুই জেলায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে বেগুনের চাষ হয়েছে। গত বছর দুই হাজার তিন শ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছিল।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ বছর অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে প্রচুর শাক-সবজি খেতে নষ্ট হয়েছে। উৎপাদন হওয়ায় শাক-সবজির দাম তুলনামুলক বেশি। আর এতে কৃষকও লাভবান হচ্ছে।’
Comments