‘সম্প্রীতি’র মহারাসলীলা আজ
ঐতিহ্যবাহী উৎসব মহারাসলীলা আজ সোমবার মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ও আদমপুরের অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মণিপুরী অধ্যুষিত গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় এখন রাস উৎসবের রঙ ফুটছে। তবে, মহামারি পরিস্থিতির কারণে এবার সীমিত পরিসরে হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবের চূড়ান্ত মহড়া ও আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি। একইভাবে সিলেট ও হবিগঞ্জেও অনুষ্ঠিত হবে উৎসবটি।
মণিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মহারাসলীলার মূল উপস্থাপনা শুরু হবে আজ দুপুর থেকে “গোষ্ঠলীলা বা রাখালনৃত্য” দিয়ে। গোষ্ঠলীলায় রাখাল সাজে কৃষ্ণের বালকবেলাকে উপস্থাপন করা হবে। এতে থাকবে কৃষ্ণের সখ্য ও বাৎসল্য রসের বিবরণ। গোধূলি পর্যন্ত চলবে রাখালনৃত্য। রাত ১১টা থেকে পরিবেশিত হবে মধুর রাসের নৃত্য বা শ্রী-শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলানুসরণ। এই রাসনৃত্য ভোর (ব্রাহ্ম মুহূর্ত) পর্যন্ত চলবে। এই রাসনৃত্যে গোপিনীদের সঙ্গে কৃষ্ণের মধুরলীলাই কথা, গানে ও সুরে ফুটিয়ে তুলবেন শিল্পীরা।’
এই রাস উৎসবের শুরু বলতে গেলে বিজয়া দশমীর পর যে পূর্ণিমা জগত আলো করে আসে, সেই পূর্ণিমা থেকেই সরবে-নীরবে শুরু হয়ে যায় রাসের প্রস্তুতি। এ বছর কমলগঞ্জের মাধবপুর জোড় মণ্ডপে পূর্ণ হচ্ছে ১৭৮তম রাস উৎসব।
আদমপুর মহারাস উদযাপন কমিটির অন্যতম নেতা ইবুংহাল সিংহ শ্যামল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘১৯৮৬ সাল থেকে কমলগঞ্জের আদমপুরে মণিপুরী মৈতৈ সম্প্রদায় আয়োজন করছে পৃথক রাসমেলার। আদমপুরে পাশাপাশি দুটি স্থানে হবে রাস উৎসব। আদমপুর জোড়া মণ্ডপ ও মণিপুরী কালচারাল কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে। এখানেও থাকবে যথারীতি রাখাল নৃত্য ও রাসলীলা। তবে, মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ও মণিপুরী মৈতৈ সম্প্রদায় আলাদা স্থানে আয়োজন করলেও উৎসবের অন্তঃস্রোত, রসের কথা, আনন্দ-প্রার্থনা সবই একই। উৎসবের ভেতরের কথা হচ্ছে বিশ্বশান্তি, সম্প্রীতি ও সত্য-সুন্দর মানবপ্রেম।’
গোপীবেশী এই শিল্পীদের বয়স ১৬ থেকে ২২ বছর। শুধুমাত্র রাধার বয়স পাঁচ থেকে ছয় বছর। নৃত্যের প্রতিটি দলে ন্যূনতম ১২ জন অংশ নিয়ে থাকে। একইভাবে রাখাল নৃত্যেরও প্রতিটি দলে ২০ থেকে ২২ জন ১৪ থেকে ১৫ বছর বয়সী বালক অংশ নিয়ে থাকে।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রাস উৎসবে নিরাপত্তায় পুলিশ তিন স্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে মণিপুরী রাসলীলা অনুষ্ঠিত হবে।’
Comments