চাঁদা না পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে জখম, ইউপি চেয়ারম্যানসহ কারাগারে ৫
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় ইটভাটা মালিক মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম হাওলাদারকে (৬৪) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখমের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের ‘বিসমিল্লাহ’ ইটভাটার অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
আহত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আকলিমা বেগম বাদী হয়ে রাতেই কলাপাড়া থানায় টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান শিমুকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করেন।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কলাপাড়া থানা পুলিশ রাত ২টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিউর রহমান শিমু ও তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার এলিজাকে বাড়ি থেকে এবং চেয়ারম্যানের ক্যাডার নেছার উদ্দিন, নাইম ও ইমরানকে কলাপাড়া শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হয় আজ। কলাপাড়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ৬ ডিসেম্বর দিন ধার্য করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।’
মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলমের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান জানান, স্থানীয় শিমু বাহিনীর সন্ত্রাসীরা তার বাবার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছিল। তিনি চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় রোববার সন্ধ্যায় চেয়ারম্যানের ক্যাডার জহিরুল, সবুজ, খলিল, রুবেলসহ ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার বাবার মালিকানাধীন বিসমিল্লাহ ইটভাটার অফিস রুমে প্রবেশ করে তার ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্রের উপর্যুপরি কোপে তিনি গুরুতর জখম হন। স্থানীয়রা রক্তাক্ত ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, খবর শোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। ইউপি চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীসহ রাতেই পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এদিকে, গ্রেপ্তারকৃত চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর মুক্তির দাবিতে ওই ইউপির কয়েকজন সদস্যের নেতৃত্বে সোমবার বেলা ১১টার দিকে কলাপাড়া শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এক পর্যায়ে তারা থানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করলে পুলিশি হস্তক্ষেপে তা পণ্ড হয়ে যায়।
এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান শিমু তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাকে অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে।’
Comments