রংপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্রের পাশে মানুষের হাড়

রংপুর নগরীর ঐতিহ্যবাহী টাউন হলের পাশে খোঁড়াখুঁড়ি করার সময় একটি পরিত্যক্ত কুয়া থেকে মানুষের হাড় ও দাঁতের অংশ বিশেষ পাওয়া গেছে।
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

রংপুর নগরীর ঐতিহ্যবাহী টাউন হলের পাশে খোঁড়াখুঁড়ি করার সময় একটি পরিত্যক্ত কুয়া থেকে মানুষের হাড় ও দাঁতের অংশ বিশেষ পাওয়া গেছে।

আজ সোমবার সকালে টাউন হলের পাশের বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের জন্য শ্রমিকরা মাটি খুঁড়লে এসব হাড় বের হয়।

মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান বাহিনী টাউন হলটিকে নির্যতন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করত।

খনন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, মাটিতে ভরাট হয়ে যাওয়া কুয়ার উপরিভাগ খোঁড়া হয়েছে মাত্র। পুরো কুয়া খুঁড়লে মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে এমন আরও অনেক মানুষের চিহ্ন পাওয়া যেতে পারে।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষ ছুটে যান টাউন হল বধ্যভূমি চত্বরে।

বধ্যভূমি পরিদর্শনে এসে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি রংপুরের সভাপতি ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু বলেন, ‘এটা তো বিশাল খবর। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক এই টাউন হল বধ্যভূমি। পাকিস্তানি বাহিনী টাউন হলে নির্যাতন কেন্দ্র করেছিল। মুক্তিকামী বাঙালি, মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ মানুষদের ধরে এনে টর্চার সেলে নির্যাতন ও হত্যা করেছিল। মা-বোনদের সম্ভ্রম লুটসহ তাদের হত্যা করে ফেলে দেওয়া হয়েছিল টাউন হলের পাশের কুয়াতে। এই ইতিহাসের কথা এতদিন আমরা সবাই বলছিলাম। পাকিস্তানি বাহিনীদের হাতে মারা যাওয়া মানুষের হাড় আজ মিলেছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের মহান ইতিহাস সংরক্ষণ করে অমরগাথা ও স্মারক চিহ্ন জীবন্ত রাখতে চাই।’

সংবাদকর্মী রেজাউল করিম জীবন বলেন, ‘আমার মতো তরুণরা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। কিন্তু ইতিহাস থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মমতা, হত্যাযজ্ঞ ও তাণ্ডবের কথা শুনেছি। টাউন হল টর্চার সেলে এনে মানুষকে হত্যা করার ইতিহাস শুনেছি। কিন্তু সেই নির্মমতার শিকার হওয়া মানুষের হাড় ও দাঁতের অংশ বিশেষ স্বচক্ষে দেখতে পেলাম। ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখতে এসব হাড়গোড় সংরক্ষণ করা জরুরি।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড শাহাদত হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠকরা বধ্যভূমি পরিদর্শনে আসেন।

গত বছর ১৬ নভেম্বর ওই স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। ঐতিহাসিক টাউন হল ও আশপাশের সৌন্দর্যবর্ধন বৃদ্ধিসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বধ্যভূমিটি সংরক্ষণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করছে রংপুর জেলা প্রশাসন। বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ আগামী বছরের জুনে শেষ হবে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ লাখ টাকা।

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

7m ago