৩৮০ কোটি টাকা কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করলেন ৩২২০ জন

তিন হাজার ২২০ জন ব্যক্তি শ্রেণির করদাতা তাদের অপ্রদর্শিত সম্পদের ঘোষণা আয়কর রিটার্নে জমা দিয়েছেন। এই ঘোষণা দিয়ে তারা ৩৮০ কোটি টাকা কর দিয়েছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যানুযায়ী, কর দিয়ে সাদা করা এসব অর্থ আয়ের উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে না।

অপ্রদর্শিত আয় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৯ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে এনবিআর। শেয়ারে বিনিয়োগকৃত অর্থের ১০ শতাংশ হারে কর প্রদানের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ নিয়েছেন ১৩৮ জন করদাতা। তারা শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড ও ঋণপত্রে বিনিয়োগের মাধ্যমে এই সুবিধা নিয়েছেন। তবে, শেয়ারবাজারে এই অর্থ অন্তত এক বছর বিনিয়োগ করে রাখার শর্তের কারণে অনেকেই এই সুবিধার প্রতি আগ্রহী হননি।

এনবিআরের এক সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আশা করছি আরও অনেকেই তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি প্রশ্নবিহিনভাবে সাদা করার সুযোগ নেবেন এবং আমাদের রাজস্ব আয় আরও বাড়বে।’

মহামারির কারণে দেশের অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে আয়কর আদায়ে যে প্রভাব পড়বে, তা কাটিয়ে উঠতে আয়কর দেওয়ার মাধ্যমে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ দিয়েছে সরকার।

গত অর্থবছর পর্যন্ত করদাতারা আয়কর বিধি অনুসারে তাদের অপ্রদর্শিত আয় ঘোষণা করতে পারতেন। তবে, সরকারের অন্যান্য সংস্থা চাইলে এই আয়ের উত্স নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারত। ফলে খুব কম মানুষই এই সুযোগ নিতে আগ্রহী হয়েছিলেন।

যার কারণে এবার এনবিআর আইনে পরিবর্তন এনে নতুন বিধান করেছে যে, এই আয়ের উত্স সম্পর্কে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

নতুন বিধানের আওতায় করদাতারা জমি, ভবন ও ফ্ল্যাটসহ যেকোনো অঘোষিত সম্পত্তি এলাকার ওপর নির্ভর করে প্রতি বর্গমিটারে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর প্রদানের মাধ্যমে বৈধ করতে পারবেন।

করদাতারা তাদের আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত আয়ের নগদ অর্থ, ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড বা অন্য কোনো যেকোনো সম্পদের ওপর ১০ শতাংশ কর প্রদানের মাধ্যমে বৈধ করতে পারবে।

ব্যক্তি পর্যায়ে প্রদর্শিত আয়ের ওপর সর্বোচ্চ প্রদেয় কর ২৫ শতাংশ। সেখানে অপ্রদর্শিত আয়ের ওপর এই হার মাত্র ১০ শতাংশ।

এনবিআর কালো টাকা সাদা করার এই সুযোগ দিচ্ছে এক বছরের জন্য। ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কালো টাকার উৎস না জানিয়েই সাদা করা যাবে।

বিগত দশকগুলোতে বিভিন্ন সময়ে কালো টাকা সাদা করার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে, খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায়নি।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭-০৮ এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছরে সেনাবাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নয় হাজার ৬৮২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা সাদা করা হয়েছিল। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছিল।

আওয়ামী লীগের আগের দুই মেয়াদে যথাক্রমে এক হাজার ৮০৫ কোটি টাকা এবং চার হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা সাদা করা হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Consensus commission: Talks stall over women’s seats, upper house

The National Consensus Commission proposed establishing an upper house comprising elected representatives from each district and city corporation, and suggested abolishing the current system of reserved seats for women in parliament.

3h ago