৮ মাস পর অনুশীলনে মাশরাফি

গত মার্চে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ হলে মাঠ ছেড়েছিলেন। এরপর করোনাভাইরাসের থাবায় কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। মাশরাফি বিন মর্তুজা নিজেও আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনায়। পরিবারের সদস্যরাও ভুগেছেন এই অতিমারিতে। দীর্ঘ আট মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে ক্রিকেটের চেনা আঙিনায় আবার পা পড়ল মাশরাফির।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আসেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। ট্রেনার তুষার কান্তি হাওলাদারকে নিয়ে সোজা চলে যান একাডেমি মাঠে। সেখানে ৪ ওভার বল করেছেন তিনি।
মিরপুরে জৈব সুরক্ষিত বলয় থাকায় অনুশীলনের জন্য মাশরাফি নেন আলাদা অনুমতি। করোনামুক্ত হয়েছেন আগেই। তবু সেখানে ওই সময় অনুশীলন করতে থাকা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের খেলোয়াড়দের নিজে থেকেই কাছে আসতে বারণ করেন। বলয়ের বাইরে থাকা ট্রেনার তুষার ছাড়া তার আশেপাশে ১০ ফুটের মধ্যে ঘেঁষতে দেননি কাউকে।

ঘণ্টাখানেকের উপস্থিতিতে রানিং করে মাঝের উইকেটে বল করতে দেখা যায় মাশরাফিকে। তার অনুশীলন সেশন দেখভাল করা ট্রেনার তুষার গণমাধ্যমকে বলেন, মূলত ম্যাচ ফিটনেস ফেরানো নিয়েই কাজ করেছেন তারা, ‘আসলে ও ওর মতো করে অনুশীলন করেছে করোনা পরবর্তী। এখন ও ওজন কমিয়ে একটা অবস্থায় আসতে চায়। এ ব্যাপারে আমি সাহায্য করছি। ম্যাচ ফিটনেসের ব্যাপারে বলার মতো সময় আসেনি। ও এমনিতে বল করেছে। যেভাবে অনুশীলন করছে, এভাবে অবশ্যই সে ফিট হয়ে ফিরতে পারবে। টেকনিক নিয়ে তো তার তেমন কোনো সমস্যা নাই, সমস্যাটা ফিটনেসে। ফিটনেসের ব্যাপারে কাজ করলে সে ফিট হয়ে উঠবে।’
করোনায় গৃহবন্দি অবস্থায় ওজন প্রায় একশো কেজির কাছাকাছি চলে গিয়েছিল মাশরাফির। তুষার জানান, এ কদিনে ১০ কেজি ওজন কমিয়ে ৮৪ কেজিতে এসেছেন মাশরাফি। অনেকটা ঝরঝরে অবস্থায় বল করেছেন পুরো রানআপে, ‘৪ ওভার বল করেছে ফুল রানআপে। ওর ইচ্ছের উপরই। ও চেয়েছে, তাই আমরা সাহায্য করছি।’
করোনা স্থবিরতার পর সব ক্রিকেটার খেলায় ফিরলেও মাংশপেশির চোটে পড়ায় প্রস্তুতিমূলক প্রেসিডেন্ট’স কাপে খেলেননি মাশরাফি। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ড্রাফট থেকেও একই কারণে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। তবে তাকে ড্রাফটের বাইরে উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল। চোটে পড়া কারো বদলি হিসেবে বা বিশেষ ব্যবস্থায় এমনিতেও যেকোনো দলে খেলার সুযোগ আছে তার।
তুষার জানান, ম্যাচ খেলার মতো অবস্থা তৈরি করা মাশরাফির নিজের উপর, ‘ও অন্যরকম, ও মাশরাফি, অনেক কিছুই করতে পারে। এখন ওর সিদ্ধান্ত, ও খেলতে চাইলে খেলবে। ৪ ওভার বোলিংয়ের একটা ব্যাপার। এই কম ওভার যদি ও ম্যানেজ করতে পারে ম্যাচ ফিটনেস, এটা ওর ব্যাপার।’
মাশরাফির সামনে অবশ্য খেলার নিশ্চিত কোনো সূচি নেই। জানুয়ারিতে বাংলাদেশে সফর করার কথা ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবে দলটির বিপক্ষে ওয়ানডে থাকছে কিনা তা এখনো চূড়ান্ত নয়। ওয়ানডের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া মাশরাফিকে খেলোয়াড় হিসেবে জায়গা পেতেও লড়তে হবে। এছাড়া করোনার কারণে অসমাপ্ত থাকা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ আবার চালু হবে কিনা তা নিয়েও পরিষ্কার ধারণা নেই বিসিবির।
চলতি বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ড্রাফটের বাইরে উন্মুক্ত থাকায় খেলার সুযোগ এখনো আছে মাশরাফির। বিশেষ নিয়মের আওতায়, আগ্রহ প্রকাশকারী যেকোনো দল চাইলে তাকে নিতে পারে। গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের মুমিনুল হক চোটে পড়ে ছিটকে গেছেন। তবে দলটির পেসাররা বেশ ভালো করায় একজন ব্যাটসম্যানের বদলে মাশরাফিকে নেওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। জানা গেছে, বেক্সিমকো ঢাকা ও মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী তাকে নিতে আগ্রহী।
Comments