আন্ধারমানিক নদী থেকে ১০ গ্রামে নোনা পানি ঢোকার আশঙ্কা
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সবজি গ্রাম খ্যাত পাখিমারা খালে নোনা পানির প্রবেশ ঠেকাতে বাঁধ দিতে না পারায় শীতকালীন সবজিসহ বোরো চাষাবাদে অনিশ্চিত দেখা দিয়েছে।
আন্ধারমানিক নদীর সঙ্গে যুক্ত খালটিতে বাঁধ দিতে প্রতিবছর উপজেলা পরিষদ কৃষকদের ৫০ হাজার টাকা টাকা অনুদান দিলেও, এ বছর অনুদান দেওয়া হচ্ছে না। ফলে পাখিমারা, কুমিরমারা, মজিদপুর, এলেমপুরসহ ১০ গ্রামের প্রায় তিন হাজার কৃষক বিপাকে পড়েছেন।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, পাখিমারা খালের সঙ্গে আন্ধারমানিক নদীর সংযোগ থাকায় শীতকালে নদীর লবণাক্ত পানি ঢুকে কৃষি জমি নষ্ট করে দেয়। খালে স্লুইসগেট থাকলেও দীর্ঘদিন মেরামত না করায় কপাটের ফাঁক দিয়ে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে। তাই প্রতিবছর ১০ গ্রামের কৃষকরা নিজেদের উদ্যোগে স্লুইসগেটের সামনে মাটির বাঁধ দিয়ে নোনা পানি আটকানোর ব্যবস্থা করেন। বাঁধ নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদ প্রতি বছর ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেয়। এ বছর ধর্না দিয়েও অনুদান পাওয়া যায়নি।
এলেমপুর গ্রামের প্রবীণ কৃষক সুলতান গাজী জানান, মাত্র ৫০ হাজার টাকার সংকটে তিন হাজার কৃষকের সবজিসহ বোরো আবাদ অনিশ্চয়তায় রয়েছে।
এ বছর আম্পানসহ তিন দফা অতিবৃষ্টিতে শীতকালীন আগাম সবজির খেত পচে গেছে। ফলে আর্থিক সংকটে রয়েছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় নিজেরা চাঁদা তুলে মাটির বাঁধ দেবেন এমন সঙ্গতিও তাদের নেই, জানান তিনি।
কুমিরমারা গ্রামের কৃষক জাকির গাজী জানান, ৫০ হাজার টাকার যোগান পেলে তিন হাজার কৃষক পরিবার অন্তত পাঁচ কোটি টাকার কৃষিপণ্য উৎপাদন করতে পারবে। পাখিমারা খালে নোনা পানি ঢুকলে সবাইকে খেসারত দিতে হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান জানান, তিনি কৃষকদের আর্থিক সংকটের বিষয়টি বিবেচনার জন্য সুপারিশ করেছেন।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাকিবুল আহসান বলেন, ‘সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় অকেজো স্লুইসগেটগুলো দ্রুত মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। কৃষকরা সাধারণত নিজেদের উদ্যোগেই স্থানীয়ভাবে এসব ছোটখাটো অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে থাকেন। বাঁধ নির্মাণে উপজেলা পরিষদ থেকে অর্থ বরাদ্দের সুযোগ কম।’
Comments