আমার জীবনে অভিনয়টাই বেশি প্রিয়: সুবর্ণা মুস্তাফা

বিটিভির স্বর্ণালী দিনের নাটকের অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। স্বনামধন্য অভিনেতা গোলাম মুস্তাফার যোগ্য উত্তরসূরী তিনি। অভিনয়ই তার ধ্যান-জ্ঞান। দশকের পর দশক ধরে অভিনয় করছেন তিনি। মঞ্চ-টেলিভিশন ও সিনেমার সফল শিল্পী সুবর্ণা মুস্তাফা।
সুবর্ণা মুস্তাফা। ছবি: শেখ মেহেদী মোর্শেদ/ স্টার ফাইল ফটো

বিটিভির স্বর্ণালী দিনের নাটকের অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। স্বনামধন্য অভিনেতা গোলাম মুস্তাফার যোগ্য উত্তরসূরী তিনি। অভিনয়ই তার ধ্যান-জ্ঞান। দশকের পর দশক ধরে অভিনয় করছেন তিনি। মঞ্চ-টেলিভিশন ও সিনেমার সফল শিল্পী সুবর্ণা মুস্তাফা।

কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সুবর্ণা পেয়েছেন একুশে পদক। একজন সংসদ সদস্যও তিনি। আজ তার জন্মদিন।

জন্মদিন নিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘আমি সবসময় বলি জন্মদিন একটি বয়সের মানুষদের জন্য ভীষণ আনন্দের। কিন্তু, একটা সময়ে এসে নয়। অন্যান্য দিনের মতোই কাটবে জন্মদিনটি।’

আশির দশকে সুবর্ণা অভিনীত সিনেমা ‘গুড্ডি’ মুক্তি পায়। সাদাকালো যুগের এই সিনেমাটির আবেদন এখনো রয়ে গেছে। ‘গুড্ডি’তে হ্যাপী আখন্দের গান ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’র দৃশ্যায়নে সুবর্ণা মুস্তাফা ও রাইসুল ইসলাম আসাদকে দেখা গেছে অসাধারণ রূপে।

সুবর্ণার আরেকটি আলোচিত ও দর্শকপ্রিয় সিনেমা ‘নয়নের আলো’। চিরসবুজ নায়ক হিসেবে খ্যাত জাফর ইকবালের বিপরীতে নায়িকা ছিলেন তিনি। আজও এ সিনেমার ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’ গানটি খুবই জনপ্রিয়।

সুবর্ণা অভিনয় করেছেন বিখ্যাত পরিচালক কাজী জহিরের ‘নতুন বউ’-এ। এতে অভিনয়ের জন্যে সুবর্ণা পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ সিনেমায় সুবর্ণার বিপরীতে ছিলেন আফজাল হোসেন।

হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস থেকে নির্মিত দর্শক প্রশংসিত সিনেমা ‘শংখনীল কারাগার’। সুবর্ণা মুস্তাফা এ সিনেমায় রুনু চরিত্রে অভিনয় করেন। এর পরিচালক ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান।

সৈয়দ হাসান ইমাম পরিচালিত ‘লাল সবুজের পালা’ আশির দশকের একটি আলোচিত সিনেমা। সুবর্ণা এই সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছিলেন।

সাদাকালো যুগে সুবর্ণার আরেকটি সামাজিক গল্পের সিনেমা ‘সুরুজ মিয়া’। এটি পরিচালনা করেছেন কাজল আরেফিন।

এছাড়াও, ‘গহীন বালুচর’, ‘দূরত্ব’, ‘আঁখি ও তার বন্ধুরা’ ও ‘হেডমাস্টার’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।

কয়েকটি বাণিজ্যিক সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন সুবর্ণা। সেগুলো হচ্ছে: ‘পালাবি কোথায়’, ‘অপহরণ’ ও ‘কমান্ডার’। তার অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা ‘গণ্ডি’। এ সিনেমায় অভিনয় করেও সুবর্ণা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

সিনেমার বাইরে টিভি নাটকে সুবর্ণা মুস্তাফা বিশাল জায়গা করে নিয়েছেন। বহু কালজয়ী নাটকের এই অভিনেত্রী টিভি নাটকের সফল শিল্পীদের মধ্যে দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

সুবর্ণা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন টিভি নাটকে। ‘বরফ গলা নদী’ নাটক দিয়ে তার টিভি নাটকে পথচলা শুরু।

‘কোথাও কেউ নেই’ নামের আলোচিত ধারাবাহিক নাটকে মুনা চরিত্রটি সুবর্ণার অভিনয় জীবনের অন্যতম সেরা কাজ। এটি এখনো দর্শকদের মনে গেঁথে আছে।

বিটিভির কালজয়ী নাটক ‘সংশপ্তক’-এ রাবু চরিত্রে অভিনয় করে সুবর্ণা দর্শক নন্দিত হন।

‘বারো রকম মানুষ’ ধারাবাহিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। অন্যদিকে, ‘আজ রবিবার’ ধারাবাহিকে মীরা চরিত্রটিও তাকে এনে দেয় খ্যাতি।

বিটিভির এক ঘণ্টার নাটক ‘রক্তে আঙুর লতা’, ‘পারলে না রুমকী’ ও ‘অচিন বৃক্ষ’ তার অভিনয় জীবনকে নিয়ে গেছে অনেক উচ্চতায়।

টিভি নাটকে সুবর্ণা নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী।

এছাড়াও, টিভি নাটকে জুটি প্রথা গড়ে উঠে তাকে ও আফজাল হোসেনকে নিয়ে। এ জুটির কথা এখনো আলোচিত হয়।

টানা  দুই দশকেরও বেশি সময় সুবর্ণা মুস্তাফা কাটিয়েছেন মঞ্চে। ঢাকা থিয়েটারের বেশ কয়েকটি আলোচিত নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।

‘জন্ডিস ও বিবিধ সেলুন’ নাটকটি দিয়ে জীবনের প্রথম ঢাকার মঞ্চে অভিনয় করেন সুবর্ণা।

‘যৈবতী কন্যার মন’ মঞ্চনাটকটি তাকে দিয়েছিল ব্যাপক প্রশংসা। ঢাকা থিয়েটারের হয়ে তিনি মঞ্চে অভিনয় করেছেন ‘কেরামত মঙ্গল’, ‘কিওনখোলা’, ‘কসাই’ ও ‘মুনতাসির ফ্যান্টাসী’ নাটকে।

অভিনয় নিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘আমার জীবনে অভিনয়টাই বেশি প্রিয়। অভিনয় করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এই কাজটি সারাজীবন ধরে করে আসছি।’

Comments

The Daily Star  | English

Govt forms committee to monitor harassment cases against journos

The government today formed an eight-member committee, led by an additional secretary, to monitor harassment cases against journalists

14m ago