রাবিতে শিক্ষার্থীরা ‘নিজভূমে পরবাসী’
করোনা মহামারির কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে বিকাল ৩টার পর শিক্ষার্থীসহ সবার প্রবেশ নিষেধ, এমন বিজ্ঞপ্তিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন রাবি শিক্ষার্থীরা। বিজ্ঞপ্তিতে করোনার কথা উল্লেখ থাকলেও, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে ভিন্ন কথা।
প্রশাসন জানায়, মূলত বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে বিকেল তিনটার পর ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জরুরি প্রয়োজনে ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরিচয়পত্র দেখিয়ে জরুরি প্রয়োজনের কথা বলেও দুপুরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও রাবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিনোদপুর গেট দিয়ে শিক্ষার্থী পরিচয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ।
পরে, ছাত্রলীগ পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একজনকে ফোন দিয়ে তাকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হয়।
মিশু বলেন, ‘ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে সাংগঠনিক পরিচয় দিতে হলে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে কি হবে?’
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মোখলেছুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি প্রবেশ না করতে পারে, তাহলে কার নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে প্রশাসন? এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র বহিরাগতদের জন্য হওয়া উচিত ছিল।’
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও রাবি ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক আবুল বাশার আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও, ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিরাপত্তা প্রহরীদের সঙ্গে তর্কে জড়াতে হয়। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছুই নেই। অথচ, উচিত ছিল শুধুমাত্র বহিরাগতদের চলাচল নিষিদ্ধ বা সীমিত করা।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান জানান, জরুরি প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত এটিএম বুথ ব্যবহারের উদ্দেশ্য ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলেও, ফটকে অবস্থানরত নিরাপত্তা প্রহরীরা তাকে ঢুকতে দেয়নি।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘মূলত বহিরাগতদের প্রবেশ সীমিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, সম্প্রতি ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা প্রবেশ করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছে। এতে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। এ কারণে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিকেল তিনটার পর কাউকেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
‘জরুরি প্রয়োজনে পরিচয়পত্র দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে’, বলেন প্রক্টর।
Comments