আমন ধানে লেদা পোকার আক্রমণ, দুশ্চিন্তায় কৃষক
![Patuakhali-2.jpg Patuakhali-2.jpg](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/patuakhali-2.jpg?itok=heFOhJp2×tamp=1607150335)
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আমন ধান ক্ষেতে দেখা দিয়েছে লেদা পোকার আক্রমণ। এতে হতাশ হয়ে পড়া কৃষকদের কেউ আধপাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন, আবার কেউ ওষুধ ছিটাচ্ছেন।
এজন্য অতিবৃষ্টিসহ আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাবকে দায়ী করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
উপজেলার মঠবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মজিবর ফকির জানান, তিনি এ বছর প্রায় ৯ একর জমিতে ইরি-৫২ জাতের আমন ধান চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। ধান এখনো আধপাকা। কিন্তু শীষকাটা লেদা পোকার আক্রমণ হওয়ায় তিনি আধপাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন।
ঘুচরাকাঠি গ্রামের কৃষক বশার হাওলাদার জানান, শীষকাটা লেদা পোকার আক্রমণে তার চাষকৃত প্রায় ৬ একর জমির আমন ধান বিনষ্ট হয়েছে।
ধানদী গ্রামের কৃষক রহিম মৃধা বলেন, ‘এবার ধানের ফলন ভালো, বাজারে দামও তুলনামূলক ভালো। তবে আমার দেড় একর জমির ধান পোকা নষ্ট করে ফেলেছে। কী আর করব, তাই আধপাকা ধানে ওষুধ ছিটাচ্ছি।’
মঠবাড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ২ একর জমির আমন ধান পোকা কেটে ফেলেছে।
তিনি বলেন, ‘ওষুধ ছিটিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। এবার অতিবৃষ্টির কারণে আমন ক্ষেতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয় এবং সঠিক সময়ে ধান ক্ষেত শুকাতে পারেনি। স্যাঁতস্যাঁতে ভাব রয়েছে ক্ষেতে। দিনের বেলায় লেদা পোকা ধানের গোছার গোঁড়ায় লুকিয়ে থাকে আর রাতে শীষ কাটে, ধান খায় না। গত ১৫-২০ বছরের মধ্যে লেদা পোকার এমন মারাত্মক আক্রমণ হয়নি।’
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ বছর উপজেলায় প্রায় ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। আমাদের লোকজন লিফলেট বিতরণসহ মাঠে কৃষকদের সচেতন করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। সার্বক্ষণিক ক্ষেতের অবস্থা জানানোর জন্য কৃষকদের অনুরোধ করা হয়েছে।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনটোমোলজির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘পরিমিত মাত্রায় বৃষ্টিপাত না হওয়া, গাছ থেকে গাছের দূরত্বের কারণে পাতার সংখ্যা বেড়ে গিয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে ধানে শীষকাটা লেদা পোকার আক্রমণ হতে পারে। শীষ যখন বের হয়ে আসে তখন এই লেদা পোকা আক্রমণ করে। এ পোকা দুই-তিনশ ডিম দেয়। বিপরীত লিঙ্গের একজোড়া পোকা একটি ফসলের জমি ধ্বংস করতে যথেষ্ট।’
সহজে ও কম খরচে আলোর ফাঁদ, আক্রান্ত জমিতে গর্ত করে পাতা জমিয়ে রেখে সেখানে পোকাকে আশ্রয় নিতে দিয়ে, কেরোসিন তেলে ভিজিয়ে ধানের ওপর রশি টেনে দিয়ে এবং আক্রান্ত ক্ষেতের চারপাশে ছাই ছিটিয়ে দিয়ে পোকাগুলো মেরে আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে জানান তিনি।
Comments