কৃষকের জন্যে বরাদ্দ সরকারি গমবীজ পাচারকালে জব্দ
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি প্রণোদনার ২০ বস্তায় ৪০০ কেজি গমবীজ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় আটকে দেন স্থানীয়রা। এরপর তারা খবর দেন রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও)। পরে ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি প্রণোদনার গমবীজগুলো জব্দ করেন। গতকাল রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন রৌমারীর ইউএনও আল ইমরান।
স্থানীয় শাহীন আলম জানান, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা কৃষি অফিসের স্টোর থেকে ভ্যানে করে ২০ বস্তা গমবীজ নিয়ে যাওয়ার সময় তিনিসহ স্থানীয় কয়েকজন ভ্যানটি আটকান। ভ্যানের সঙ্গে কোনো কৃষক ছিলেন না। ভ্যানচালক আব্দুল খালেক তাদেরকে জানান, এসব বীজ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের। পরে ভ্যান চালকের ফোন পেয়ে জিয়াউর রহমান ঘটনাস্থলে যান। জিয়াউর ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে ভ্যান ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে ব্যর্থ হন।
স্থানীয় সাফিউল ইসলাম জানান, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর অনিয়মের মাধ্যমে কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত এসব বীজ স্টোর থেকে বের করে তার ভাই রবিউল ইসলাম বাবুর দোকানে নিয়ে যাচ্ছিল। সে তার ব্লকের (চুলিয়ারপার ব্লক) কৃষকদের নামে বরাদ্দ নিয়ে এসব গমবীজ পাচার করে বাজারে বিক্রির চেষ্টা করছিলেন।
তবে, স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করে রৌমারী উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ভ্যানচালকের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলেও বীজগুলো পাচারের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এ ছাড়া, কাউকে কোনো টাকা দিয়ে গমবীজসহ ভ্যানটি ছাড়িয়ে নেওয়ার কোনো চেষ্টা আমি করিনি।’
রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বীজগুলো জব্দ করে উপজেলা প্রশাসনে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি জানান, এ বছর রৌমারী উপজেলায় মোট আট হাজার ৩৫০ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জন্য পুনর্বাসন প্রণোদনা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
রৌমারীর ইউএনও আল ইমরান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি প্রণোদনার গমবীজ কীভাবে বাইরে এলো, তা জানতে তদন্ত করা হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Comments