চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নকআউট পর্বে উঠতে দলগুলোর সমীকরণ
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি মৌসুমে এর মধ্যেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে বেশ কিছু দল। আবার বেশ কিছু দল ঝুলে আছে শেষ দিনের খেলার ফলাফলের উপর। কোনো দলের ভাগ্য রয়েছে নিজেদের হাতেই, আবার কোনো দলের ভাগ্য নির্ভর করছে অন্য দলগুলো ফলাফলের উপর। তাই দ্বিতীয় রাউন্ডের ১৬ দল নিশ্চিত করতে অপেক্ষা শেষ দিন পর্যন্ত।
দেখে নেওয়া যাক চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে কোন দলের কি সমীকরণ? আর কোন দলকে ইউরোপা লিগে খেলেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে -
গ্রুপ 'এ'
'এ' গ্রুপ থেকে এরমধ্যেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ। ৫ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট তাদের। তবে দ্বিতীয় স্থানটির জন্য সুযোগ রয়েছে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ ও এফসি সলজবুর্গের। এ দুটি দলই আবার শেষ দিনে মুখোমুখি হবে। ম্যাচটি ড্র হলে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হবে অ্যাতলেতিকোর। আর দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করতে জিততেই হবে সলজবুর্গকে। তবে আগে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে লোকোমোটিভ মস্কোর।
গ্রুপ 'বি'
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এবার সবচেয়ে বেশি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে 'বি' গ্রুপেই। এখন পর্যন্ত কোনো দল দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করতে পারেনি। আবার এখন এখন পর্যন্ত বিদায়ও নেয়নি কোনো ক্লাব। শেষ দিনের জমজমাট লড়াইয়ে ভাগ্য নির্ধারিত হবে ক্লাবগুলোর। শেষ দিনে ইন্টার মিলান নিজেদের মাঠে মুখোমুখি হবে শাখতার দোনেস্কের। অন্যদিকে এ আসরের সবচেয়ে সফল দল রিয়াল মাদ্রিদ খেলবে জার্মান ক্লাব বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখের সঙ্গে। মুখোমুখি লড়াইয়ে জয় পেলেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত হবে দলগুলোর।
অন্যদিকে দুটি ম্যাচ ড্র হলে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠবে মনশেনগ্লাডবাখ ও শাখতার। মূলত হার এড়াতে পারলেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত হবে এ দলদুটির। অর্থাৎ দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে জয়ের বিকল্প নেই রিয়ালের। হেড টু হেডে শাখতারের কাছে পিছিয়ে আছে তারা। জয়ের বিকল্প নেই ইন্টারের জন্যও।
গ্রুপ 'সি'
এই গ্রুপ থেকে এরমধ্যেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে ম্যানচেস্টার সিটি ও এফসি পোর্তো। তবে লড়াইটা ইউরোপা লিগে স্থান পাওয়া নিয়ে। অলিম্পিয়াকোস ও মার্শেই দুই দলের পয়েন্টই ৩। সেক্ষেত্রে নিজ নিজ ম্যাচের ফলাফলের উপর নির্ভর করবে ইউরোপা লিগ। মার্শেই লড়বে সিটির মাঠে। আর আলিম্পিয়াকোস নিজেদের মাঠে মুখোমুখি হবে পোর্তোর।
গ্রুপ 'ডি'
'ডি' গ্রুপে এরমধ্যেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে লিভারপুল। আর এ গ্রুপ থেকে বিদায় নিয়েছে এফসি মিডজিল্যান্ড। দ্বিতীয় স্থানের জন্য লড়বে আয়াক্স আমস্টার্ডাম ও আতালান্তা। যে জিতবে তারাই খেলবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। তবে আতালান্তা কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। আয়াক্সের চেয়ে ১ পয়েন্ট বেশি তাদের। ড্র করলেও নকআউট পড়বে উঠবে ইতালির দলটি।
গ্রুপ 'ই'
এ গ্রুপের রোমাঞ্চ শেষ হয়ে গেছে আগেই। শেষ দিনে কেবল নিয়ম রক্ষার জন্যই মাঠে নামবে দলগুলো। এরমধ্যেই নকআউট পর্বে জায়গা করে নিয়েছে চেলসি ও সেভিয়া। ইউরোপা লিগে জায়গা করে নিয়েছে ক্রাসনোদার। শেষ ম্যাচে সেভিয়াকে হারালেও লাভ হবে না স্তাদে রেনেসের। কারণ মুখোমুখি লড়াইয়ে ক্রাসনোদারের চেয়ে পিছিয়ে আছে তারা।
গ্রুপ 'এফ'
এ গ্রুপ থেকে এরমধ্যেই দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের। ক্লাব ব্রুসের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই জয় পাওয়ায় নকআউট পর্ব নিশ্চিত হয়েছে তাদের। মূল লড়াইটা দ্বিতীয় স্থান নিয়ে। ক্লাব ব্রুস ও লাৎসিওর মধ্যকার জয়ী দল খেলবে পরবর্তী রাউন্ডে। হারা দল খেলবে ইউরোপা লিগে। তবে ড্র করলেও নকআউট পড়ব খেলবে লাৎসিও, ক্লাব ব্রুসের চেয়ে ২ পয়েন্ট বেশি তাদের। আর এ গ্রুপ থেকে এর মধ্যেই বিদায় নিয়েছে জেনিট সেইন্ট পিটার্সবুর্গ।
গ্রুপ 'জি'
এরমধ্যেই নকআউট নিশ্চিত বার্সেলোনা ও জুভেন্টাসের। মূল লড়াইটা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। জুভেন্টাসকে অবশ্য জিততেই হবে। কারণ প্রথম লেগে তুরিন থেকে ২-০ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছিল কাতালানরা। লড়াই রয়েছে ডায়নামো কিয়েভ ও ফেরেঙ্কভারসের মধ্যে। দুই দলেরই পয়েন্ট ১। সেক্ষেত্রে বিজয়ী দল ইউরোপা লিগ খেলার সুযোগ পাবে।
গ্রুপ 'এইচ'
জমজমাট শেষ দিনের অপেক্ষায় 'এইচ' গ্রুপ। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) ও আরবি লাইপজিগ তিন দলের পয়েন্ট সমান ৯। তাই নকআউট পর্বে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে যে কোনো দলের জন্যই। পিএসজির জন্য অবশ্য কাজটা কিছুটা সহজ। কারণ ঘরের মাঠে তারা মুখোমুখি হবে এ গ্রুপ থেকে বিদায় নেওয়া ইস্তাম্বুল বাসেকসেহিরের সঙ্গে। অন্যদিকে ম্যানইউকে লড়তে হবে লাইপজিগের মাঠে। জয় চাই সব দলেরই। জয় চাই সব দলেরই।
তবে দুটি ম্যাচ ড্র হলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠবে ম্যানইউ। তাদের সঙ্গী হবে পিএসজি। দুই দলের কাছেই মুখোমুখি লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকায় ইউরোপা লিগেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে গত মৌসুমে চমক দেখানো লাইপজিগকে।
Comments