খুলনাকে হারিয়ে শেষ চারে ঢাকা
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/dhaka.png?itok=PomG1i7s×tamp=1607595418)
দিনের শুরুটাই ভালো ছিল না জেমকন খুলনার। দলের সেরা বোলার সাকিব আল হাসান নিজের প্রথম ওভারে ৪ ছক্কায় দেন ২৬ রান। সবমিলিয়ে বড় রানের লক্ষ্য পায় দলটি। আর লক্ষ্য তাড়ায় সে অর্থে কেউই হাল ধরতে পারেননি। ফলে আরও একটি হারের মুখ দেখেছে খুলনা। অন্যদিকে প্রথম তিন ম্যাচে হারের পর টানা জয়রথে রয়েছে বেক্সিমকো ঢাকা।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে খুলনাকে ২০ রানে হারিয়েছে ঢাকা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৯ রান তোলে দলটি। জবাবে ৩ বল বাকি থাকতে ১৫৯ রানেই গুটিয়ে যায় তারা।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে খুলনা। রবিউল ইসলাম রবির ঘূর্ণিতেই কুপোকাত হয় দলটি। নিজের প্রথম ওভারে ওপেনার জাকির হাসানকে তুলে নেওয়ার পর সাকিব আল হাসানকেও তুলে নেন এ স্পিনার। তবে তৃতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার জহুরুল ইসলামের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তবে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়ে লংঅনে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
ওপেনার জহুরুল খেলছিলেন ভালোই। হাফসেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। ৩৬ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৩ রান তোলার পর নাসুম আহমেদের বলে ক্যাচ তুলে দেন শর্ট থার্ডম্যানে। মূলত স্কোরবোর্ডে ১৭ রান যোগ করতেই ৪টি উইকেট হারায় দলটি। তাতে ফের চাপে পড়ে তারা।
এরপর ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শামিম পাটোয়ারি। মুক্তার আলীর করা পরের ওভারেই দুটি করে চার ও ছক্কায় ২৪ তুলে লড়াইয়ের আভাস দেন তিনি। কিন্তু এরপরের ওভারে রুবেল হোসেনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। কার্যত তখনই শেষ হয়ে যায় খুলনার আশা। শেষদিকে শহিদুল ও হাসান মাহমুদ চেষ্টা করেছিলেন। তবে তাদের চেষ্টা যথেষ্ট হয়নি।
এদিন খুলনাকে থামিয়ে দেন মূলত অখ্যাত বোলার রবি। তুলে নেন আসরের প্রথম ফাইফার। ৪ ওভার বল করে ২৭ রানের খরচায় নেন ৫টি উইকেট। এছাড়া শহিদুল পেয়েছেন ২টি উইকেট।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ হয় ঢাকার। দ্বিতীয় ওভারেই চোখ কপালে তোলা ঘটনা। সাকিবকে এক ওভারে চার ছক্কায় ২৬ রান নিয়ে নেন নাঈম। এই তরুণ আভাস দিচ্ছিলেন বিস্ফোরক কিছুর। তবে দলীয় ৪১ রানের মাথায় শহিদুল ইসলামের ফুলটসে ১৭ বলে ৩৬ রানে ইতি টানেন তিনি। এরপর আল-আমিনের সঙ্গে ৬৪ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন ওপেনিংয়ে নামা সাব্বির হোসেন।
তানজিদ তামিমের জায়গায় সুযোগ পাওয়া আল আমিন স্পিন খেলছিলেন দারুণ। নাজমুল ইসলাম অপুর বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দেওয়ার আগে করেন ২৫ বলে ৩৬। মুশফিকুর রহিম এসে শিকার হন মাশরাফির। তার বলে পয়েন্টে ঢাকা অধিনায়কের দারুণ ক্যাচ হাতে জমান শামীম পাটোয়ারি। ছন্দে থাকা ইয়াসির আলি কোন বল খেলার আগেই হয়ে যান রানআউট।
তবে দ্রুত তিন উইকেট হারালেও ঢাকার আগ্রাসন থেমে থাকেনি। আকবর আলি নেমেই তুলেন ঝড়। নাজমুলের এক ওভারে তিনিও মেরে দেন ৪ ছক্কা। দারুণ এক ইনিংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। হাসান মাহমুদের বলে রান বাড়ানোর তাড়ায় থেমে যান তিনি। মাত্র ১৪ বলে ৩১ করা আকবর ক্যাচ দেন কাভারে।
এদিন উইকেট ছিল বেশ ভালো। বল ব্যাটে আসছিল দারুণভাবে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন সাব্বির। ৩৮ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ ব্যাটসম্যান। তবে শেষ দিকে পর্যাপ্ত রান আসেনি। দুইশো পেরুনোর আভাস দিলেও ঢাকা থেমে যায় ১৮০ এর নিচে।
সাকিব ৩ ওভারেই দেন ৩৬ রান। করেননি কোটার শেষ ওভার। আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাজমুলের ৪ ওভার থেকে আসে ৫১ রান। মাশরাফি তার চার ওভারে ২৬ রানে পান ১ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বেক্সিমকো ঢাকা: ২০ ওভারে ১৭৯/৭ (নাঈম ৩৬, সাব্বির ৫৬, আল-আমিন জুনিয়র ৩৬, মুশফিক ৩, ইয়াসির ০, আকবর ৩১, মুক্তার ৬*, রবিউল ১, নাসুম ৫*; মাশরাফি ১/২৬, সাকিব ০/৩৬, শহিদুল ২/৩১, নাজমুল ১/৫১, হাসান ১/২৩, শুভাগত ০/১১)।
জেমকন খুলনা: ১৯.৩ ওভারে ১৫৯ (জহুরুল ৫৩, জাকির ১, সাকিব ৮, মাহমুদউল্লাহ ২৩, মাশরাফি ১, আরিফুল ৭, শামিম ২৪, শুভাগত ৫, শহিদুল ৮, হাসান ১৫*, নাজমুল ৪; রুবেল ১/৩০, রবি ৫/২৭, নাসুম ১/২৮, শফিকুল ০/৩০, মুক্তার ২/৩৫)।
ফলাফল: বেক্সিমকো ঢাকা ২০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রবিউল ইসলাম রবি (বেক্সিমকো ঢাকা)।
Comments