মোস্তাফিজ-লিটনদের ছাড়াই তামিমদের হারাল চট্টগ্রাম

দেশ সেরা পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, লিটন কুমার দাস দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান আর সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ছন্দে থাকা শরিফুল ইসলামরা ছিলেন বিশ্রামে। আগেই প্লে অফ নিশ্চিত হওয়া রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি দেখতে চেয়েছিল গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। তাতে সামান্য সমস্যা হয়নি তাদের। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে সহজেই জয় তুলে নিয়েছে দলটি।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দেশ সেরা পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, লিটন কুমার দাস দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান আর সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ছন্দে থাকা শরিফুল ইসলামরা ছিলেন বিশ্রামে। আগেই প্লে অফ নিশ্চিত হওয়া রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি দেখতে চেয়েছিল গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। তাতে সামান্য সমস্যা হয়নি তাদের। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে সহজেই জয় তুলে নিয়েছে দলটি।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ফরচুন বরিশালকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানেই হারায় গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েও নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৯ রানের বেশি করতে পারেনি দলটি। জবাবে ৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় দলটি।

লক্ষ্য তাড়ায় এদিন যেন ভাগ্য সঙ্গে নিয়ে মাঠে নেমেছিল চট্টগ্রাম। সৈকত আলী ও সৌম্য সরকারের ওপেনিং জুটিতে আসে ৭৯ রান। অথচ দুই ব্যাটসম্যান ফিরে যেতে পারতেন আরও আগেই। সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু সুযোগ গ্রহণ করতে পারেনি বরিশাল। সৈকত আলী তো তুলেছেন দুইবারই। ব্যক্তিগত ৯ রানের লংঅনে প্রথম জীবন পান কামরুল ইসলাম রাব্বির কাছে। পরে ৩১ রানে ফের জীবন পান আফিফ হোসেনের হাতে। এর আগে ব্যক্তিগত ৯ রান এই আফিফের হাতেই সহজ জীবন পান সৌম্য সরকার।

তবে দুটি ক্যাচ মিস করা আফিফই পরে ক্যাচ ধরেছেন সৈকত আলীর। তাতে ভাঙে ওপেনিং জুটি। কিন্তু ততোক্ষণে জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়ে যান তারা। শুরুতে কিছুটা আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভোগা সৌম্য ধীরে ধীরে সাবলীল ব্যাট চালাতে থাকেন। দ্বিতীয় উইকেটে মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে গড়েন ৪০ রানের জুটি। পরে সৌম্য আউট হয়ে গেলেও বাকি কাজ জয়কে নিয়ে শেষ করেন মোসেদ্দেক হোসেন সৈকত।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬২ রানের ইনিংস খেলেন সৌম্য। ৩৭ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ৩৩ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৯ রান করেন সৈকত আলী। ৩১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন জয়। বরিশালের পক্ষে ৩০ রানের খরচায় ২টি উইকেট নেন পেসার সুমন খান।

এর আগে দারুণ সূচনা করেও প্রতিপক্ষকে বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি বরিশাল। প্রথম ১০ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই ৮৪ রান করেছিল দলটি। স্বাভাবিকভাবেই বড় স্কোরের পথে ছিল তারা। কিন্তু এরপর যেন হঠাৎ খেই হারিয়ে ১৪৯ রানে সন্তুষ্ট থাকতে হয় দলটি। শুরুতে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন ওপেনার সাইফ হাসান। অধিনায়ক তামিম ইকবাল এক প্রান্ত ধরে খেললেও হাত খুলে মেরে রানের গতি সচল রাখার কাজটা করেন তিনিই। তামিমের সঙ্গে গড়েন ৮৭ রানের জুটি।

তবে বরিশালের মতো চট্টগ্রামের ফিল্ডারও সহজ ক্যাচ ছেড়েছিল। খালি হাতেই ফিরতে পারতেন তামিম। মেহেদী হাসানের করা প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ উঠিয়ে দিয়েছিলেন কভারে। সহজ ক্যাচ ফেলে দেন সৈকত আলী। দলীয় ১৪ রানে জীবন পান আরও একবার। এবার ক্যাচ ছাড়েন অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন নিজেই। ক্যাচ ধরেও বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি। কিন্তু তারপরও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তামিম।

বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এ দুই ওপেনারকে ফেরান মোসাদ্দেক হোসেন। একাদশ ওভারে সাইফকে ফেলেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। এক ওভার ফের বল করতে এসে তামিমের ক্যাচ নিজেই লুফে নেন তিনি। এরপর আর পিছু তাকাতে হয়নি তাদের। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বরিশাল। আর কোনো ব্যাটসম্যান দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৯ রান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন সাইফ। ৩৩ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। তামিমের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ রান। ৩৯ বলে ৫টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। এছাড়া পাঁচ নম্বরে নামা আফিফ হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ২৮ রান।

চট্টগ্রামের পক্ষে এদিন অসাধারণ বোলিং করেছেন মোসাদ্দেক। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৬ রান খরচ করে ২টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন সঞ্জিত সাহাও। ৪ ওভার বল করে ২২ রানের বিনিয়ে পান ২টি উইকেট। ২টি উইকেট পান জিয়াউর রহমানও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৪৯/৬ (সাইফ ৪৬, তামিম ৪৩, ইমন ১৪, হৃদয় ৪, আফিফ ২৮*, মিরাজ ১, ইরফান ২, সুমন ৬*; নাহিদুল ০/২৮, মেহেদী ০/৩২, সঞ্জিত ২/২২, রুয়েল ০/২২, মোসাদ্দেক ২/১৬, জিয়াউর ২/২৫)।

গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম: ১৮.৪ ওভারে ১৫৩/৩ (সৈকত ৩৯, সৌম্য ৬২, জয় ৩১*, মিঠুন ৩, মোসাদ্দেক ১২*; মিরাজ ১/৩২, তাসকিন ০/৩১, শাকিল ০/২৩, সুমন ২/৩০, রাব্বি ০/২৭, সাইফ ০/৯)।

ফলাফল: গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সৌম্য সরকার (গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম)।

Comments

The Daily Star  | English
economic challenges for interim government

The steep economic challenges that the interim government faces

It is crucial for the interim government to focus on setting a strong foundation for future changes.

13h ago