‘তুমি কি সত্যিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের?’

joshua da silva
ছবি: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট

তিন বছর আগে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন জশুয়া দা সিলভা। ক্লাব পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার জন্য। তাকে দেখার পর সেখানে যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল, তা স্মরণ করে না হেসে পারেন না তিনি।

চলতি বছর ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের পডকাস্টকে জশুয়া বলেছিলেন, ‘আমি যখন ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে যাই, তখন লোকেদের ভাব অনেকটা এরকম ছিল, “আমরা ঠিক তোমাকে প্রত্যাশা করছিলাম না।” এটা বেশ মজার ছিল। আমি শুধু হেসেই উড়িয়ে দিয়েছি। আমাকে বহুবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, “তুমি কি সত্যিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের?”’

শুক্রবার ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছে জশুয়ার। ত্রিনিদাদের ২২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার একজন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। অভিষেকের দিনেই তিনি উঠে এসেছেন আলোচনায়। কারণ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে শ্বেতাঙ্গ ক্রিকেটারের খেলার নজির যে বিরল!

জিওফ গ্রিনিজের পর জশুয়াই প্রথম ক্যারিবিয়ান বংশোদ্ভূত শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড়, যিনি উইন্ডিজের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলছেন। তাতে অবসান হয়েছে ৪৭ বছরের অপেক্ষার। বার্বাডোজে জন্ম নেওয়া গ্রিনিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে তার পাঁচ টেস্টের সবশেষটি খেলেছিলেন সেই ১৯৭৩ সালে।

মাঝে এই দলটির হয়ে সাদা পোশাকে কোনো শ্বেতাঙ্গ ক্রিকেটার যে খেলেননি, তা নয়। এক দশক আগেই দেখা গেছে ব্রেন্ডন ন্যাশকে। তিনি ২১টি টেস্ট ও ৯টি ওয়ানডে খেলেছিলেন। তার সবশেষ টেস্ট ম্যাচটি ছিল ২০১১ সালে, ভারতের বিপক্ষে। কিন্তু ন্যাশের জন্ম ও বেড়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়াতে, জশুয়ার মতো ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে নয়।

joshua da silva
ছবি: আইসিসি

জশুয়ার পরিবারের শিকড় পর্তুগালে। ফুটবলের মহাতারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার মোইজেস হেনরিকসের জন্মস্থান মাদেইরা দ্বীপে ছিল তার পূর্বপুরুষদের আদিনিবাস। তবে তার মা জন্মগ্রহণ করেছিলেন কানাডায়, আর বাবা ত্রিনিদাদে। গত শতাব্দীতে মাদেইরা থেকে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ ও উত্তর আমেরিকাতে স্থানান্তরিত হয় তার পূর্বপুরুষরা।

ত্রিনিদাদের অধিকাংশ মানুষই কৃষ্ণাঙ্গ; ভারতীয় কিংবা আফ্রিকান বংশোদ্ভূত। তবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হননি বলে জানিয়েছেন জশুয়া, ‘আমি সত্যিই কখনো মনে করিনি যে, এটি কোনো সমস্যা বা কিছু একটা।… আমি কেবল একজন শ্বেতাঙ্গ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান।’

চলতি বছরে ফের ইংল্যান্ড সফরে যাওয়ার অভিজ্ঞতা হয় জশুয়ার। তিনি মূলত ছিলেন রিজার্ভ ক্রিকেটারদের তালিকায়। তবে নিজেদের মধ্যে ভাগ হয়ে খেলা একটি প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ ব্যাটিংয়ে নজর কাড়েন তিনি। ১৩৩ ও ৫৬ রানের ইনিংস খেলে মূল স্কোয়াডে পেয়ে যান জায়গা। দুবারই তিনি ছিলেন অপরাজিত।

ত্রিনিদাদের প্রথম পছন্দের উইকেটরক্ষকের লড়াইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক দিনেশ রামদিনকে পেছনে ফেলেছেন। ফলে চলমান নিউজিল্যান্ড সফরের দলেও ডাক মেলে জশুয়ার। মাঠে নামা নিয়ে দোলাচল থাকলেও তার ভাগ্য খুলে গেছে শেন ডাওরিচের অনুপস্থিতিতে।

ব্যক্তিগত কারণে টেস্ট সিরিজের মাঝপথে নিউজিল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে যাচ্ছেন টেস্টে উইন্ডিজের নিয়মিত উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ডাওরিচ। ফলে অভিষেকের স্বাদ পেয়েছেন জশুয়া। প্রথম দিনে দুটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দি করেছেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy

The number of Bangladeshis crossing the perilous Mediterranean Sea to reach Italy has doubled in the first two months this year in comparison with the same period last year.

5h ago