১২২২ শহীদ বুদ্ধিজীবীর নামের তালিকা নীতিগত অনুমোদন
শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ২২২ জনের নামের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কমিটি।
আজ রোববার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কমিটির প্রথম বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত এসেছে। এছাড়া, পরবর্তী বৈঠকে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী এবং তাদের সহযোগীদের দ্বারা বর্বরভাবে হত্যার শিকার হওয়া শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হবে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে, গত ১৯ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই তালিকা তৈরি ও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘কমিটি পরবর্তী বৈঠকে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংজ্ঞা চূড়ান্ত করবে। ওই বৈঠকটি জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘কমিটি প্রাথমিক তালিকার জন্য ১ হাজার ২২২ জনের নাম অনুমোদন দিয়েছে।’
তিনি জানান, আমাদের কাছে ১ হাজার ২২২ জনের নাম আছে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয়ে আছে ১ হাজার ৭০ জনের নাম এবং বিভিন্ন সময়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামে প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিটে আছে ১৫২ জনের নাম। প্রাথমিকভাবে এগুলোর নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও জানান, আগামী বছরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি নিয়ে আমরা আশাবাদী।
কমিটির সদস্য শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জীবনীভিত্তিক এনসাইক্লোপিডিয়া ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ’, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত ডকুমেন্টরি ‘বাংলাদেশ’, ‘বাংলাপিডিয়া’ এবং ডাকটিকিট থেকে এসব শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম পাওয়া গেছে।’
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে যারা নিহত হয়েছিলেন তাদের শহীদ বুদ্ধিজীবী তালিকার যোগ্য বিবেচনা করবে কমিটি।
কমিটির আরেক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বলেন, ‘আমরা নিজ নিজ এলাকার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নাম চেয়ে ডিসি ও ইউএনওকে চিঠি দেবে। আমরা নাম চাইছি, তবে আমরা শুধুমাত্র আমলাদের ওপর নির্ভর করব না। আমরা ছাত্র এবং যুবকদেরও সহায়তা নেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীর নতুন কোনো সংজ্ঞা তৈরি করব না। বরং আমরা বাংলা একাডেমির ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ’সহ বিভিন্ন গবেষণা গ্রন্থে বিদ্যমান সংজ্ঞার সমন্বয় করব।’
এদিকে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিটি মুক্তিযুদ্ধকালীন শহীদদের মধ্যে কারা শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন তার সংজ্ঞা নির্ধারণ করবে। এজন্য বিভিন্ন গবেষণা গ্রন্থ, পত্রিকা কাটিং, টিভি রিপোর্ট, অন্যান্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রস্তুত করবে। এছাড়া, কমিটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা, জেলা-উপজেলা ও অন্যান্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত ব্যক্তিদের আবেদন যাচাই বাছাই করবে এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করবে।
Comments