টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ, লুয়াইউনি-হলিছড়া চা বাগানকে জরিমানা

Moulvibazar.jpg
লুয়াইউনি-হলিছড়া চা বাগানে এক্সেভেটর দিয়ে টিলা কেটে প্রায় ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থের রাস্তা তৈরি করতে দেখা গেছে। ছবি: স্টার

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার লুয়াইউনি-হলিছড়া চা বাগানের বিরুদ্ধে টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজ রোববার চা বাগান কর্তৃপক্ষকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর।

মৌলভীবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. ফখর উদ্দিন চৌধুরী জানান, গত ২৬ নভেম্বর সরেজমিন পরিদর্শনকালে লুয়াইউনি-হলিছড়া চা বাগানে এক্সেভেটর দিয়ে টিলা শ্রেণীর মাটি কেটে প্রায় ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থের নিজস্ব রাস্তা নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেছে। পরিদর্শনকালে বর্ণিত চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক বলেছেন, মালীদের চলাচল ও উত্তোলিত চা পাতা পরিবহনের জন্য রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি কোনো দপ্তরের অনুমতি রয়েছে কি না জানতে চাইলে, তিনি নেই বলে জানান। তবে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ চা বোর্ডের নিবন্ধনের শর্ত মোতাবেক বাগানের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নতুন করে এলাকা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে চা রোপণ করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে চা রোপণের জন্য এ ধরনের রাস্তা নির্মাণের আদৌ প্রয়োজন নেই মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।’

মো. ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘চা বাগানের ব্যবস্থাপক আমাদের আরও জানান যে, টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণে পরিবেশ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি চা বোর্ডের অধীন। বর্ণিত চা বাগানের অনুকূলে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় থেকে ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান করা হয়, যার মেয়াদ ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই শেষ হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপস্থিত সহকারী ব্যবস্থাপককে পরিবেশগত ছাড়পত্র নবায়নের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। বর্ণিত রাস্তা নির্মাণে দৈর্ঘ্যে আনুমানিক ১৫০ ফুট, প্রস্তে আনুমানিক ১০ ফুট টিলা কাটা হয়েছে, যা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ধারা ৬ (খ) লঙ্ঘন এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।’ 

মৌলভীবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা বলেন, ‘লুয়াইউনি-হলিছড়া চা বাগান কর্তৃক টিলা কর্তন ও মোচন করে নিজস্ব রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে উক্ত স্থানের টপ সয়েল নষ্ট, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, প্রকৃতিক ভারসাম্য ও ভূমির বাইন্ডিং ক্যাপাসিটি নষ্ট করা হয়েছে। এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার ফলে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত অপরিকল্পিতভাবে টিলা কাটার মাধ্যমে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার ক্ষতি করায় সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের শুনানি শেষে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে দায়ী ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তাদের আগামী সাত দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লুয়াইউনি-হলিছড়া চা বাগানের পক্ষে সেসময় উপস্থিত ছিলেন উপ-ব্যবস্থাপক মো. রবিউল ইসলাম।’

Comments

The Daily Star  | English

10 ministries brace for budget cuts

The railway ministry, the power division, and the primary and mass education ministry will see the biggest chop.

9h ago