বিজয়ের ফল আমাদের হাতে, সবাই উপভোগ করব, কাজে লাগাব: পরিকল্পনামন্ত্রী

M A Hannan-1.jpg
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ছবি: সংগৃহীত

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, মাঝে মাঝে চিন্তা করি- আমি অন্য আরও দুই-চারটি দেশে গিয়েছি ও থেকেছি। কিন্তু আমরা যেভাবে বাঙালি, বাংলাদেশ করে আপ্লুত, যেভাবে প্রতিনিয়ত নাড়াচাড়া করি, ওইসব দেশে তাদেরও অনেক ঘটনা আছে। তাদেরও অনেক নায়ক আছে। তাদের মধ্যে অতোটা আলোচনা দেখি না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যেই আলোচনাটি বেশি দেখি, কারণ কী? আমি কিন্তু সমাজ বিজ্ঞানী নই। কিন্তু আমি দেখি- পথে পথে, রন্ধ্রে রন্ধ্রে, ঘরে ঘরে শুধু বাংলাদেশ বাংলাদেশ, বাঙালি বাঙালি করে।’

আজ বুধবার পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) মহান বিজয় দিবস ২০২০ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমি সচিবকে বলছিলাম- ইংল্যান্ডে তো সাধারণ জনগণের প্রায় ৮০ ভাগ লোক শেক্সপিয়ারকে চিনেই না। এটি তাদের স্টাডিতে বেড়িয়েছে। তবে এটি আমাদের এখানে এতো বেশি কেন? আমি নিজে নিজেই ভাবি- বোধহয় আমাদের আঘাতটি প্রচণ্ড রকমের ছিল এবং এখনো সাম্প্রতিক। তাদের ঘটনা ঘটেছে হাজার হাজার বছর আগে। তারা অত্যন্ত প্রতিষ্ঠিত ও জাতিসত্তার ইতিহাস দীর্ঘদিনের।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত জাতি, ইতিহাস আমাদের হাজার বছরের, কিন্তু চিন্তিত জাতি হিসেবে আমাদের দীর্ঘদিনের ইতিহাস নেই। এই মাত্র ৫০ বছর হলো। তাও নানাভাবে বিক্ষিপ্ত বা আঘাতপ্রাপ্ত, খণ্ডিত এক অদ্ভুত ধরনের ইতিহাস। চরম মূল্যের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। বর্তমানে আমরা থিতু হয়েছি এবং প্রতিষ্ঠান গঠনের কাজ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের কাজের ফল আমিও পাই। সম্প্রতি দু-চারজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি আমাকে বলেছেন যে, আপনারা আইএমইডিতে বেশ ভালো নড়াচড়া দিচ্ছেন। স্বতঃস্ফূর্ততার সঙ্গে বলেছে, আমার ভালো লেগেছে। এটি কিন্তু আপনাদের পরিশ্রমের স্বীকৃতি। যাই হোক, বিজয় আমাদের অর্জিত হয়েছে। বিজয়ের ফল আমাদের হাতে আছে। এটিকে আমরা সবাই উপভোগ করব, কাজে লাগাব।’

এম এ মান্নান বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলি- আমরা জাতি হিসেবে এখন কূলের কাছে আছি। সেই কূলে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সর্বশেষ প্রচেষ্টা চলছে। এখানে আমাদের সবারই অংশ নেওয়ার সুযোগ আছে। আপনারা সেই কাজটি নিজে থেকেই করছেন, এজন্য আপনাদের আমি বাহবা জানাই। এ ছাড়া, বর্তমানে নেতিবাচক কিছু বিষয় আমাদের নাড়া দিচ্ছে। এটি দুঃখজনক। এসময়ে আমাদের সবারই সচেতনভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ বিষয়টি এখন সবাইকে নাড়া দিয়েছে।’

আইএমইডি সচিব বলেন, ‘দেশের সবার ফসল স্বাধীনতা। দেশ স্বাধীন না হলে আমরা কী হতে পারতাম, আর কী হয়েছি। নিজেকে প্রশ্ন করলেই প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়। এখনো ধর্মকে অপব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার মতো স্পর্ধা দেখায়। এটি খুবই দুঃখজনক।’

তিনি বলেন, ‘আমার পরিষ্কার মনে আছে, ১৯৭১ সালে আমরা শরণার্থীদের মতো আশ্রয়ে ছিলাম এবং রেশন পেতাম। আমার বাবা একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। বাবা আমাদেরকে বলেছিলেন, আমি শিক্ষক মানুষ আমাকে কী করবে। ২৭ আগস্ট অনেকের সঙ্গে আমার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা পরে বাবার ডেড বডিও পাইনি। পরবর্তীতে আমাদের ধর্ম অনুযায়ী আমার বাবার দেহের ডামি তৈরি করে শ্মশানে পুড়িয়েছি। এজন্য বলি, ১৯৭১ সালে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা স্বাধীনতাকে একভাবে দেখেন। এখনো ওই সময়ের কষ্টের দৃশ্য চোখে ভাসে।’

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

6h ago