মেঘনায় ট্রলার ডুবি: এখনও নিখোঁজ সাত শিশুসহ ৮ জন
![](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/noakhali_boat_sinking_pic_4.jpg?itok=c5ls_rsO×tamp=1608117354)
নোয়াখালীর হাতিয়ায় মেঘনা নদীতে বরযাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনায় এখনও সাত শিশু ও এক নারীসহ আট জন নিখোঁজ আছে। গতকাল মঙ্গলবার হাতিয়া ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ডুবে যায় ট্রলারটি। এ পর্যন্ত নববধূসহ সাত জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এখনও যাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি, তারা হলেন-জাকিয়া বেগম (৫৫), মো. হাসান (৭) নারগিস (৪), হালিমা (৪), লামিয়া (৩), নিহা (১), আমির হোসেন (২) ও আলিফ (১)।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন ও হাতিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়ের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল দুপুরে ভোলার মনপুরা উপজেলার কালাতলি গ্রামের শরীফ হোসেন বিয়ে করতে হাতিয়ার চানন্দি ইউনিয়নের পূর্ব আজিম নগর গ্রামে যান। বিয়ের পর চানন্দি ঘাট থেকে বেলা ৩ টার দিকে মনপুরার কালাতলি গ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
হাতিয়ার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক একরাম উল্লাহ জানান, বরযাত্রীবাহী মাছ ধরার
ট্রলারটিতে ধারণা করা হচ্ছে অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিলেন।
জীবিত উদ্ধারকৃতদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বরযাত্রীবাহি ট্রলারটি টাংকির খাল-ঘাসিয়ার চর এলাকার মেঘনা নদীতে পৌঁছায়। এসময় নদীতে তীব্র স্রোত ও ঢেউ ছিল। নৌকাটি এসময় একদিকে কাত হয়ে উল্টে যায়।
আশেপাশের জেলে নৌকার জেলেরা কয়েকজনকে উদ্ধার করেন, অনেকে সাঁতার কেটে পাশের চরে আশ্রয় নেন। এসময় নারী ও শিশুসহ ১৫ জন নিখোঁজের খবর জানা যায়। হাতিয়া ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি থানা ও নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড উদ্ধার অভিযান চালায়।
নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম
গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নববধূসহ সাত জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন- বিয়ের কনে হাতিয়ার চানন্দি ইউনিয়নের আজিম নগর গ্রামের মো. ইব্রাহীমের মেয়ে তাসলিমা বেগম (২২), নোয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের আকবর হোসেনের মেয়ে আফরিন আক্তার লামিয়া (২) একই গ্রামের আলমগীরের মেয়ে লিলি আক্তার (৮) ও আক্তার হোসেনের মেয়ে আছমা বেগম (১৯), হাতিয়া উপজেলার নাছির পুর কালাদুর বাজার এলাকার ফয়েজ উল্লাহর মেয়ে হোসনে আরা বেগম রুপা (৫), হাতিয়ার পূর্ব আজিম নগর গ্রামের আলাউদ্দিনের স্ত্রী রাহেনা বেগম (৩০) এবং একই গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী নুর জাহান (৬৫)।
তাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন
আজ সকালে নিহতদের বাড়িতে যান। এসময় তিনি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবার প্রতি ২০ হাজার টাকা করে দেন।
হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের ও হাতিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ একরাম উল্যাহ জানান, প্রিয় সন্তান ও স্বজনদের খোঁজে অনেকেই রাত থেকে মেঘনা নদীর তীরে আহাজারি করছেন। নিখোঁজদের উদ্ধারে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে মেঘনা নদীতে অভিযান চলছে।
সকালে উদ্ধার হওয়া নিহত ৭ জনের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুপুরে নিহতদের পরিবারিক কবরস্থান দাফন করা হয়।
ট্রলার ডুবির ঘটনায় সকালে হাতিয়া থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত করছে হাতিয়ার নৌ পুলিশ ফাঁড়ি।
আরও পড়ুন-
মেঘনায় বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবি, বর জীবিত ও কনেসহ ৭ মরদেহ উদ্ধার
Comments