কৃষক বিদ্রোহ: সংহতি জানিয়ে শিখ ধর্মগুরুর আত্মাহুতি

ভারতে নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিখ ধর্মগুরু বাবা রাম সিং আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক শিখ ধর্মগুরু আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আত্মাহুতি দিয়েছেন।

গতকাল বুধবার হরিয়ানা রাজ্যের গুরুদুয়ারার ধর্মগুরু বাবা রাম সিং (৬৫) নিজের গায়ে গুলি চালিয়ে আত্মহুতি দেন।

আজ বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, নতুন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকদের চলমান আন্দোলনের ২১তম দিনে আত্মাহুতি দিয়েছেন ধর্মগুরু বাবা রাম সিং।

সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এর আগে গত মঙ্গলবার দিল্লি-সোনিপাত সীমান্তে কৃষক আন্দোলনে যোগ দেন বাবা রাম সিং। আত্মাহুতির আগে তিনি একটি নোট রেখে গিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, সরকারের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতেই আত্মহনন করছেন তিনি।

নোটে তিনি আরও লিখেছেন, ‘অধিকারের নিশ্চয়তার জন্য লড়াই করা কৃষকদের কষ্ট আমি অনুভব করছি… আমি তাদের কষ্ট বুঝতে পারছি কারণ সরকার তাদের প্রতি ন্যায় আচরণ করছে না। অন্যায় আচরণ করা পাপ, আর অন্যায় সহ্য করাও পাপ।’

‘কৃষকদের সমর্থনে কেউ কেউ সরকারি পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমি নিজেকে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সোনিপাতের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শ্যাম লাল পুনিয়া গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘বাবা রাম সিং গাড়ির ভিতরে নিজের গায়ে গুলি চালিয়েছিলেন।’

‘গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে দ্রুত পানিপথের পার্ক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন,’ যোগ করেন পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানিয়েছেন, ওই ধর্মগুরুর মরদেহ এখন তার বাসস্থান কার্নালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আগামী শুক্রবার কর্নালে তার অন্তোস্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বাবা রাম সিংয়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, আকালি দলের নেতা সুখবির বাদলসহ অনেকেই।

কৃষক প্রতিনিধিরা বলছেন, নভেম্বরের শেষ দিকে দিল্লি ঘেরাও কর্মসূচি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারী কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

মহারাষ্ট্রের কৃষক নেতা রিষিপাল জানিয়েছেন, বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে প্রতিদিন গড়ে একজন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে চরম আপত্তির পরও কৃষিসংস্কার নিয়ে তিনটি বিল ভারতের পার্লামেন্টে পাস হয়। প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ বিল তিনটি সই করলে সেগুলো আইনে পরিণত হয়।

ওই তিনটি আইনের অধীনে সরকার ন্যায্যমূল্যে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কেনা বন্ধ করে দিতে পারবে। যার ফলে পাইকারি বাজারে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকদের। তাদের ভয়, ওই আইনের ফলে ফসলের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বড় বড় ব্যবসায়ী ও কোম্পানির হাতে চলে যাবে।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago