‘অসহনীয় মানসিক অত্যাচারে’ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আমিরের অবসর

বৃহস্পতিবার নিজ দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আমির ক্রিকেট থেকেই সরে দাঁড়ানোর কথা জানান।
mohammad amir
মোহাম্মদ আমির। ছবি: এএফপি

টেস্ট ক্রিকেট ছেড়েছিলেন গত বছর। সাদা বলের ক্রিকেটের দুই সংস্করণে চালিয়ে যাচ্ছিলেন খেলা। কিন্তু চলতি বছর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কেন্দ্রীয় চুক্তিতে জায়গা পাননি। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরের বিশাল বহরেও ঠাঁই মেলেনি। বাদ পড়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন মোহাম্মদ আমির। কিন্তু হঠাৎ করেই সবাইকে চমকে দিলেন এই বাঁহাতি পেসার। মাত্র ২৮ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার নিজ দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আমির ক্রিকেট থেকেই সরে দাঁড়ানোর কথা জানান। কারণ হিসেবে বোর্ডের কাছে মানসিক অত্যাচারের শিকার হওয়ার কথা অভিযোগ করেন তিনি। পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে আমিরের অবসরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পিসিবি। তবে সেখানে বলা হয়েছে, ক্রিকেট পুরোপুরি না ছাড়লেও পাকিস্তান জার্সিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আর দেখা যাবে না তাকে।

বিবৃতিতে পাকিস্তান ক্রিকেটে অবদান রাখার জন্য আমিরকে ধন্যবাদ জানানোর সৌজন্যও দেখায়নি পিসিবি। এতেই বোঝা যায়, দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্কটা সাপে-নেউলে অবস্থায় পৌঁছেছে। পাকিস্তান বোর্ড জানিয়েছে, ‘মোহাম্মদ আমির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন বলে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান আজ (বৃহস্পতিবার) বিকালে এই পেসারের সঙ্গে কথা বলেছেন। ২৮ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় পিসিবির প্রধান নির্বাহীকে বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার কোনো আগ্রহ বা ইচ্ছা তার নেই এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য যেন তাকে বিবেচনা করা না হয়। এটা মোহাম্মদ আমিরের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, পিসিবি যেটাকে সম্মান করছে এবং এই ব্যাপারে এখন আর কোনো মন্তব্য করবে না।’

নিউজিল্যান্ড সফরে সুযোগ না পাওয়া আমির খেলছিলেন লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল)। আগের দিন ওই আসরের পর্দা নেমেছে। পিসিবির বিবৃতির আগে শ্রীলঙ্কা থেকেই নিজ দেশের গণমাধ্যমকে আমির বলেন, ‘আমি এখনকার মতো ক্রিকেট ছেড়ে দিচ্ছি। কারণ, আমি মানসিক অত্যাচারের শিকার হচ্ছি। আমি এই অত্যাচার আর সহ্য করতে পারছি না। ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্তও আমি অত্যাচারের শিকার হয়েছি। তখন আমি (ফিক্সিংয়ের দায়ে) শাস্তি ভোগ করছিলাম। বারবার বলা হয়েছে, পিসিবি আমার ওপর অনেক বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু আমি কেবল দুজন লোকের কথা বলব, যারা আমার ওপর বিনিয়োগ করেছিলেন- (পিসিবির সাবেক চেয়ারম্যান) নাজাম শেঠি ও (সাবেক অধিনায়ক) শহিদ আফ্রিদি।’

নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় তিনি যোগ করেন, ‘কেবল তারা দুজনই (আমার সমর্থনে) ছিল। দলের বাকিরা বলছিল, আমরা আমিরের সঙ্গে খেলতে চাই না। সম্প্রতি, দলের মধ্যে যে পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, তার অর্থটা এমন যে, আমাকে নিয়ে সারাক্ষণ উপহাস করা এবং বলা হয়, আমি আমার দেশের হয়ে খেলতে চাই না। দুই মাস পর পর কেউ না কেউ আমার বিরুদ্ধে কিছু না কিছু বলে। কখনও কখনও বোলিং কোচ (ওয়াকার ইউনিস) বলেন, আমির আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, কখনও কখনও আমাকে বলা হয় যে, আমার কাজের পরিমাণ সন্তোষজনক নয়। এসব আর নয়। যথেষ্ট হয়েছে।’

পাকিস্তানের হয়ে ৩৬ টেস্ট, ৬১ ওয়ানডে ও ৫০ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন আমির। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার উইকেটের সংখ্যা ২৫৯টি। টেস্টে তিনি পেয়েছেন ১১৯ উইকেট। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে তার শিকার যথাক্রমে ৮১ ও ৫৯টি। তবে শেষ পাঁচ ওয়ানডেতে ৬ ও শেষ পাঁচ টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ১ উইকেট নেন আমির।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago